আত্নহত্যাকারী চিরস্থায়ী জাহান্নামী নয়। আত্মহত্যা করা হারাম। আল্লাহ তাআলা একে স্পষ্ট ভাষায় হারাম ঘোষণা করেছেন। কোরআনের বানীঃ আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা তোমাদের প্রতি দয়ালু। (সূরা নিসাঃ ২৯) আত্মহত্যা করা মহাপাপ, যে ব্যাক্তি যে বস্তুদ্বারা আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামে সে বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হবে এবং মুসলিম ব্যাতিত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ সাঈদ আল আশাজ্জ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি কোন ধারাল অস্ত্র দ্বারা আত্নহত্যা করবে, সে অস্ত্র তার হাতে থাকবে, জাহান্নামের মধ্যে সে অস্ত্র দ্বারা সে তার পেটে আঘাত করতে থাকবে, এভাবে সেখানে সে চিরকাল অবস্থান করবে। আর যে ব্যাক্তি বিষপানে আত্নহত্যা করবে, সে জাহান্নামের আগুনের মধ্যে অবস্থান করে উক্ত বিষ পান করতে থাকবে, এভাবে সেখানে সে চিরকাল অবস্থান করবে। আর যে ব্যাক্তি নিজকে পাহাড় থেকে নিক্ষেপ করে আত্নহত্যা করবে, সে ব্যাক্তি সর্বদা পাহাড় থেকে নিচে গড়িয়ে জাহান্নামের আগুনে পতিত হতে থাকবে, এভাবে সে ব্যাক্তি সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে। (সহীহ মুসলিম হাদিস নম্বরঃ ২০১ হাদিসের মানঃ সহিহ) উক্ত হাদীস দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, আত্মহত্যাকারী লোকটি যে পদ্ধতিতে আত্মহত্যা করেছে, উক্ত পদ্ধতিতে সে জাহান্নামে চিরকাল শাস্তি পেতে থাকবে। এ হাদীস দ্বারা যদিও আত্মহত্যাকারী চিরস্থায়ী জাহান্নামী বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু বিষয়টি আসলে এমন নয়। বরং আত্মহত্যাকারী ব্যক্তি যদি ঈমানদার হয়, আর ঈমানের সাথেই যদি মৃত্যুবরণ করে থাকে, তাহলে সে চিরস্থায়ী জাহান্নামী হতে পারে না। চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে কেবল কাফের- মুশরিকরা। কোন মুসলমান চিরস্থায়ী জাহান্নামী হতে পারে না। তবে দীর্ঘস্থায়ী জাহান্নামী হতে পারে। এ হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্যও এটাই। আরবের পরিভাষায় ''ﺧﺎﻟﺪﺍ ﻣﺨﻠﺪﺍ'' শব্দ, যার অনুবাদ করা হয়, “চিরকাল” মূলত এর দ্বারা আরবের লোকেরা কখনো কখনো দীর্ঘস্থায়ী অবস্থাকে বুঝিয়ে থাকেন। উক্ত হাদীসেও উদ্দেশ্যও দীর্ঘস্থায়ী হওয়া। চিরস্থায়ী হওয়া নয়।