পবিত্র কোরআনে ৫৩ তম সুরার নাম আন-নাজম। নক্ষত্ৰ-মাত্রকেই نجم বলা হয় এবং বহুবচন نجوم আর তারকা ও বৃক্ষাদি সিজদা করছে। (রহমানঃ ৬) তুমি কি দেখো না যে, আল্লাহকে সিজদা করে যারা আছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে সিজদা করে সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্রমন্ডলী, পর্বতরাজি, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু, এবং সিজদা করে মানুষের মধ্যে অনেকে। (সূরা হাজ্জঃ ১৮) নাজম শব্দটির পরিচিত অর্থ তারকা হলেও আরবী ভাষায় কাণ্ডবিহীন লতানো গাছকেও نجم বলা হয়।
নক্ষত্রের আরবী শব্দটি কোরআনের যে যে স্থানে এসেছে,তা হলো; (১)সূরা আল আন-আম:97 - তিনিই তোমাদের জন্য নক্ষত্রপুঞ্জ সৃজন করেছেন যাতে তোমরা স্থল ও জলের অন্ধকারে পথ প্রাপ্ত হও। নিশ্চয় যারা জ্ঞানী তাদের জন্যে আমি নির্দেশনাবলী বিস্তারিত বর্ণনা করে দিয়েছি। (২)সূরা আল আ’রাফ:54 - নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ। তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশের উপর অধিষ্টিত হয়েছেন। তিনি পরিয়ে দেন রাতের উপর দিনকে এমতাবস্থায় যে, দিন দৌড়ে রাতের পিছনে আসে। তিনি সৃষ্টি করেছেন সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্র দৌড় স্বীয় আদেশের অনুগামী। শুনে রেখ, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা। আল্লাহ, বরকতময় যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক। (৩)সূরা ইউসূফ:4 - যখন ইউসুফ পিতাকে বললঃ পিতা, আমি স্বপ্নে দেখেছি এগারটি নক্ষত্রকে। সুর্যকে এবং চন্দ্রকে। আমি তাদেরকে আমার উদ্দেশে সেজদা করতে দেখেছি। (৪)সূরা আন-নূর:35 - আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের জ্যোতি, তাঁর জ্যোতির উদাহরণ যেন একটি কুলঙ্গি, যাতে আছে একটি প্রদীপ, প্রদীপটি একটি কাঁচপাত্রে স্থাপিত, কাঁচপাত্রটি উজ্জ্বল নক্ষত্র সদৃশ্য। তাতে পুতঃপবিত্র যয়তুন বৃক্ষের তৈল প্রজ্বলিত হয়, যা পূর্বমুখী নয় এবং পশ্চিমমুখীও নয়। অগ্নি স্পর্শ না করলেও তার তৈল যেন আলোকিত হওয়ার নিকটবর্তী। জ্যোতির উপর জ্যোতি। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ দেখান তাঁর জ্যোতির দিকে। আল্লাহ মানুষের জন্যে দৃষ্টান্তসমূহ বর্ণনা করেন এবং আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত। (৫)সূরা আন-নাজম:1 - নক্ষত্রের কসম, যখন অস্তমিত হয়। (৬)সূরা আল মুরসালাত:8 - অতঃপর যখন নক্ষত্রসমুহ নির্বাপিত হবে, (৭)সূরা আত-তাকভীর:2 - যখন নক্ষত্র মলিন হয়ে যাবে, (৮)সূরা আল ইনফিতার:2 - যখন নক্ষত্রসমূহ ঝরে পড়বে, (৯)সূরা আত্ব-তারিক্ব:3 - সেটা এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। উল্লেখ্যঃ আরবীতে নাজম শব্দটি যেমনি ভাবে নক্ষত্রের অর্থে ব্যবহৃত হয়, তেমনি ভাবে কাওকাব শব্দও নক্ষত্রের অর্থে ব্যবহৃত হয়।তাই উল্লেখিত আয়াত গুলো দেখলে কোথাও নজম বা নুজুম শব্দ দেখা যাবে, আবার কোথাও কাওকাব শব্দ দেখা যাবে।সূ্রা বুরুজে বুরুজ শব্দের অর্থ গ্রহ-নক্ষত্র দ্বারা করা হয়।অস্পষ্টতার কারণে এখানে উল্লেখ করা হয়নি।