খাদিজা (রাঃ) তৎকালীন সময়ে প্রখ্যাত ব্যাবসায়ী ছিলেন। এছাড়াও তিনি ব্যাবসার ক্ষেত্রে উপযোগী ছিলেন। খাদিজা (রাঃ) এর ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পূর্বে অনেক ঘটনাই প্রবাহমান ছিল। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ - তৎকালীন সময়ে তিনি হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর গুণের কথা জানতে পেরে তাকে নিজের নিয়োগপ্রদান করেন। মুহম্মাদকে তার বিশ্বস্ত দাসী মায়সারার সাথে ব্যবসার জন্য সিরিয়ায় প্রেরণ করেন। সিরিয়ায় ব্যবসা করে মুহাম্মাদ অনেক মুনাফা অর্জন করেন এবং ব্যবসার প্রতিটি হিসাব খাদিজাকে বুঝিয়ে দেন। এতে খাদিজা অনেক খুশি হন। হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর সততা দেখে তিনি তাকে বিবাহ করেন। হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর ত্রিশ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পর প্রায়ই তিনি মক্কার অদূরে হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় কাটাতেন। তাঁর স্ত্রী খাদিজা (রাঃ) নিয়মিত তাঁকে খাবার দিয়ে আসতেন। হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী এমনি একদিন ধ্যানের সময় ফেরেশতা জিবরাইল (আঃ) তার কাছে আল্লাহপ্রেরিত বাণী নিয়ে আসেন এবং তাকে কিছু পংক্তি দিয়ে পড়তে বলেন। উত্তরে মুহাম্মাদ জানান যে তিনি পড়তে জানেন না, এতে জিবরাইল (আঃ) তাঁকে জড়িয়ে ধরে প্রবল চাপ প্রয়োগ করেন এবং আবার একই পংক্তি পড়তে বলেন। কিন্তু এবারও হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) নিজের অপারগতার কথা প্রকাশ করেন। এভাবে তিনবার চাপ দেওয়ার পর মুহাম্মাদ (সাঃ) পংক্তিটি পড়তে সমর্থ হন। মুসলিমদের ধারণা অনুযায়ী এটিই কুরআনের প্রথম আয়াত গুচ্ছ; সুরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত। বর্ণনায় আরও উল্লেখ আছে প্রথম বাণী লাভের পর মুহাম্মাদ (সাঃ) এতই ভীত হয়ে পড়েন যে কাঁপতে কাঁপতে নিজ গৃহে প্রবেশ করেই খাদিজা (রাঃ) কে কম্বল দিয়ে নিজের গা জড়িয়ে দেওয়ার জন্য বলেন। বারবার বলতে থাকেন, "আমাকে আবৃত কর"। খাদিজা (রাঃ) হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর সকল কথা সম্পূর্ণ বিশ্বাস করেন এবং তাঁকে নবী হিসেবে মেনে নেন। ভীতি দূর করার জন্য মুহাম্মাদ (সঃ) কে নিয়ে খাদিজা (রাঃ) নিজ চাচাতো ভাই ওয়ারাকা ইবন নওফেলের কাছে যান। নওফেল তাঁকে শেষ নবী হিসেবে আখ্যায়িত করে। এভাবেই খাদিজা (রাঃ) ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।