পবিত্র আল কুরআনে পৃথিবীর সৃষ্টি থেকে ধবংস হওয়া অবধি সকল সমস্যার সমাধান বর্ণিত রয়েছে। আর আমাদের প্রিয় এবং সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর কথা, কাজ, আচার আচরণ, মৌনসম্মতি কে হাদিস বলে। আল কুরআন অনুযায়ী কোন সমস্যার সমাধান করা না গেলে হাদিসকে অনুসরণ করতে হয়। আর কুরআন ও হাদিস অনুযায়ী না গেলে ইজমা ও উল্লেখিত কোনটাই না গেলে কিয়াসের প্রয়োজন পড়ে। আমার জানার বিষয় হচ্ছে যদি কুরআনে সকল সমাধান দেয়া থাকে, তবে কেন ইজমা ও কিয়াস?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Habib96

Call

কোরআন ও হাদিসে সকল উসুলি (মৌলিক) বিষয়ের সমাধান দেয়া হয়েছে৷ আর ফুরুয়ি (শাখাগত) বিষয়ে সমাধানের জন্য ইজমা-কিয়াসের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে৷ কাজেই কোন সমাধানই কোরআন-হাদিস বহির্ভুত নয়৷ নিম্নে ইজমা কিয়াসের পরিচয় উল্লেখ করা হল: ইসলামী শরীয়তের (আইনের) তৃতীয় উৎস হলো ইজমাঃ —————————————————— ইজমা হলো এ উম্মতের দীনি জ্ঞানসম্পন্ন মুজতাহিদদের ঐকমত্য পোষণ। আর এর ভিত্তি হলো রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহিহ হাদিস- ‘‘আমার উম্মত কখনও ভ্রষ্ট পথে একমত হবে না’’ । মুস্তাদরাকে হাকিম (১/২০০-২০১) হাদীস নং- ৩৯৪, ৩৯৬, ৩৯৭, ৩৯৯, ৪০০। আরো দেখুন: আবুদাউদ (৪/৯৮) হাদীস নং- ৪২৫৩; তিরমিজি (৪/৪৬৬) হাদীস নং- ২১৬৭; ইবনে মাজা (২/১৩০৩) হাদীস নং- ৩৯৫০। ইসলামী শরীয়তের (আইনের) চতুর্থ উৎস হলো কিয়াস: —————————————————- যা নির্ভর করে পূর্ববর্তী তিনটি উৎসের উপর। সুতরাং এটাও মনগড়া কিছু নয়। কিয়াস হচ্ছে কুরআন ও হাদিসকে কেয়ামত পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করা। এটা নতুন কোনো বানানো বিষয় নয়। এর ছোট্ট একটা উদাহরণ হলো এই কাগজে কুরআন লেখা কি নিষেধ? এখানে কিয়াস হচ্ছে অবশ্যই না। কারণ তত্কালীন সময়ে চামড়ায় গাছের পাতায় বাকলে লেখা হত , যদি কাগজ থাকত তবে কাগজেও লেখা হত। আর চৌদ্দ শত বছর আগে নাজিল হওয়া কুরআনের বিধান বর্তমান সময়ে সমন্বয় করা এটাই কিয়াস।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

কোরআনের বানীঃ হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর, আনুগত্য কর রাসূলের। (নিসাঃ ৫৯) কুরআনে সকল সমাধান দেয়া আছে, তবে কেন ইজমা ও কিয়াস? ইজমা হলো এ উম্মতের দীনি জ্ঞানসম্পন্ন মুজতাহিদদের ঐকমত্য পোষণ। আর এর ভিত্তি হলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহিহ হাদিস। ইজমার উদাহরণ হচ্ছে যেমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য পাচ ওয়াক্ত ১৭ রাকাত সালাত ফরজ। এই ফরজ কম করা যাবে না বা বেশিও করা যাবে না। এটাই হচ্ছে ইজমা। কেউ যদি বলে ১৭ রাকাত না ১৮ রাকাত বা ১৯ রাকাত তবে তা গ্রহণ যোগ্য হবে না! এটাই ইজমা যে ১৭ রাকাত ফরজ সালাত। এটা ১৪০০ বছর আগে থেকেই প্রকাশিত একটা বিষয় নতুন বিষয় নয়। কেউ যদি বলে বিতর সালাত ফরজ এটা ইজমা তাহলে এটা ভুল! ফরজ তো অবশ্যই নয়। বিতর সালাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা অর্থাত খুব গুরুত্ত পূর্ণ ঠিক যেমন ফজরের সুন্নত সালাত খুব গুরুত্ব পূর্ণ, যদিও কেউ কেউ ওয়াজিব বলেছেন! তবে অধিকাংশ স্কলারদের মতে এটা সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। লক্ষনীয় বিষয় কেউ যদি বলে বিতর ফরজ বা ওয়াজিব এটা ইজমা তাহলে ভুল! অধিকাংশ স্কলার সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ বলেছেন যদিও কেউ কেউ ওয়াজিব বলেছেন। কিন্তু সবাই একমত দৈনিক পাচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ। চার ওয়াক্ত নয় আবার ছয় ওয়াক্তও নয় এটাই ইজমা। কিয়াসের উদাহরণঃ বিল্লাল (রাঃ) কে উচ্চ স্বরে আজান দিতে বলা হত যাতে বেশি দূর পর্যন্ত লোকে আজান শুনতে পায়!। এবং এক অন্ধ লোককে আজান শুনতে পেলে মসজিদে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল । আজান যত বেশি দূর পর্যন্ত পৌছবে তত সয়াব অর্জনের কথা হাদিসে এসেছে। ইসলাম জীবনের প্রয়োজনে নতুন টেকনোলজি ব্যবহার নিষেধ করে না। অতএব বুঝা যাচ্ছে যদি তখন মাইক থাকত তাহলে মাইক ব্যবহার করা হত। মাইক ব্যবহার দ্বীন ইসলামের বিধান পরিবর্তন করে না। যে ইসলামে কোন ভাল পদ্ধতি প্রচলন করল সে উহার সওয়াব পাবে এবং সেই পদ্ধতি অনুযায়ী যারা কাজ করবে তাদের সওয়াবও সে পাবে, তাতে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবে না। আর যে ব্যক্তি ইসলামে কোন খারাপ পদ্ধতি প্রবর্তন করবে সে উহার পাপ বহন করবে, এবং যারা সেই পদ্ধতি অনুসরণ করবে তাদের পাপও সে বহন করবে, তাতে তাদের পাপের কোন কমতি হবে না। (মুসলিম) এই যে সংযোজন অর্থাত কানেক্টিভিটি ১৪০০ বছর আগের কুরআন ও হাদিসের বাণীর সাথে এটাই হচ্ছে কিয়াস। টেলিভিশন স্ক্রিনে ইসলামিক লেকচার শুনা জায়েজ কিনা? রাসুল (সাঃ) কে দেয়ালে দৃশ্য পটে জান্নাত ও জাহান্নাম দেখিয়েছেন আল্লাহ! আবার আল্লাহ বায়তুল মুকাদ্দাস রাসুল (সাঃ) কে চোখের সামনে তুলে ধরেছেন স্ক্রিনের মত করে ! এখন কিয়াস হচ্ছে কানেক্টিভিটি। এর প্রেক্ষিতে স্ক্রিনে ইসলামিক প্রোগ্রাম জায়েজ। সংবাদ পরিবেশন জায়েজ। এটাই কিয়াস। একইভাবে স্ক্রিন নাজায়েজ কাজে ব্যবহার নিষেধ যেমন নাটক, নাচ, গান। ওপেন হার্ট সার্জারীর জন্য ঝুকি নেয়া কি জায়েজ? কুরআন সুন্নায় এর উদাহরণ আছে কিনা? রাসুল (সাঃ) কে প্রায় তিনবার বুক চিরে হার্ট পরিস্কার করা হয়েছে। এখন কিয়াস হচ্ছে কানেক্টিভিটি। ১৪০০ বছর আগের কুরআন ও সুন্নাহ অনুসারে বর্তমান সময়ের সমস্যার সমন্বয় ভিত্তিক সমাধান। কিয়াস হচ্ছে ওপেন হার্ট সার্জারী করা যাবে! রাসুল (সাঃ) এর জীবনে আমাদের জন্য রয়েছে আদর্শ। এটাই হচ্ছে কিয়াস। অর্থাত কুরআন ও হাদিসের বাইরে নয়। রাসুল (সাঃ) নির্দেশ দিয়েছেন কুরআন ও সুন্নাহ কে আকড়ে ধরতে। ইজমা ও কিয়াস কুরআন ও সুন্নাহেরই অংশ। বাইরের কিছু নয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ