রহিমা (ছদ্মনাম) ২০১৬ সালে ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে বিয়ে  হয়।কিন্তু বিয়ের সময় বয়স কম হওয়ার কারনে ২০১৭ সালে কাবিন রেজিস্ট্রেশন হয় এবং কাবিন রেজিস্ট্রেশন এর সময় থেকে নিয়ে এখন পর্যন্ত তার স্বামী প্রবাসে আছেন।বিবাহ হবার পর থেকে নিয়ে এখন পর্যন্ত তাদের দাম্পত্য জীবনে খুব বেশি জামেলা হচ্ছে এই জন্যে রহমা তার স্বামী কে তালাক দিতে চাচ্ছে। উপরোক্ত বিষয়ের প্রেক্ষাপটে সে যদি তালাক দেয় তাহলে কি সে তার মোহরানা পাবে??? 
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Ronnieahmed

Call

স্ত্রী যদি বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন, তবে এ নিয়ে আর জটিলতা না বাড়ানো ভালো। তবে বিচ্ছেদ কী উপায়ে চাইছেন, এটি স্ত্রীর কাছেই জেনে নিতে হবে। আইনসংগত উপায়ে বিবাহবিচ্ছেদ হতে হবে। আবার স্ত্রীর কিছু অধিকার রয়েছে। বিশেষ করে দেনমোহর অবশ্যই স্ত্রীকে পরিশোধ করতে হবে। তবে এ নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে দেনমোহর-সংক্রান্ত যেকোনো সিদ্ধান্ত উভয়ে নিতে পারেন। স্ত্রী যদি বিচ্ছেদ চান, তবে তাঁর কাবিননামার ১৮ নম্বর কলামটিতে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে কি না, তা দেখে স্ত্রী সরাসরি তালাক দিতে পারেন। যদি ১৮ নম্বর কলামে কোনো ক্ষমতা না দেওয়া থাকে, তাহলে স্বামীর উচিত হবে না এ নিয়ে স্ত্রীকে কোনো ধরনের জটিলতায় ফেলা। তখন দুজনের সম্মতিতে স্বামীই তালাক দিয়ে দিতে পারেন।

সাধারণ নিয়ম হচ্ছে স্ত্রীর তালাকের ক্ষমতা না থাকলে পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে তালাকের ডিক্রি নিতে হয়। এটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার এবং কিছুটা জটিলও বটে। তবে মুসলিম আইনে খোরা তালাক নামে একটি পদ্ধতি আছে, যা দুজনের সম্মতিতে হয়ে থাকে। এ তালাক পারস্পরিক চুক্তি দ্বারা, কাজি বা আদালতের নির্দেশে হতে পারে। এ তালাকের উল্লেখযোগ্য দিক হলো, স্ত্রী স্বামীকে তালাক দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে থাকেন। স্বামী ওই প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়ে থাকেন। এ ধরনের তালাকের ক্ষেত্রে অনেক সময় স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার সময় স্বামী বিনিময়ে স্ত্রীর কাছ থেকে প্রতিদান নিয়ে থাকেন এবং স্ত্রী তা দিয়ে থাকেন বা দিতে সম্মত হন।
অনেক সময় স্ত্রী যদি রাজি থাকেন, তাহলে মোহরানা দিতে হয় না। তবে ইদ্দত পালনকালে (বিচ্ছেদের দিন থেকে তিন মাস পর্যন্ত) স্ত্রী তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের জন্য স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হবেন। স্ত্রী বিচ্ছেদ চাইলে শান্তিপূর্ণভাবে বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা উচিত। অনেক সময় দেখা যায় স্বামী তালাক চাইলেও স্ত্রীকে আগে তালাকের নোটিশ পাঠাতে বলেন। আমাদের সমাজে একটি ভুল ধারণা রয়েছে যে স্ত্রী যদি স্বেচ্ছায় কিংবা আগে তালাকের নোটিশ পাঠান, তাহলে দেনমোহর পরিশোধ করতে হবে না। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। স্ত্রী আগে তালাক দিলেও তাঁর মোহরানা পরিশোধ করতে হবে। এ ছাড়া যদি স্ত্রীকে আগে কোনো ভরণপোষণ না দেওয়া হয়, এ বকেয়া ভরণপোষণসহ ইদ্দতকালীন ভরণপোষণও প্রদান করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ-সংক্রান্ত কোনো দাবিদাওয়া থাকলে স্ত্রী পারিবারিক আদালতেও যেতে পারেন। তবে স্ত্রী গর্ভবতী হলে সন্তান প্রসব না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ