আমার মধ্যে জড়তা রয়েছে।আমি সবার সাথে ভালোভাবে কথা বলতে পারি না,মনের মধ্যে ভয় কাজ করে।মেয়েদের সাথে কথা বলার ইচ্ছা থাকলেও কথা বলতে পারি না।তাই কিভাবে আমি আমার এ সমস্যা দূর করব।
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

প্রথমে আয়নায় প্রাকটিস করুন,কারণ আয়নার সামনে যখন কথা বলবেন তখন ক্লিয়ার বুঝতে পারবেন আপনার লজ্জাবোধের চেহারাটি,তাই আমি মনে করি একমাত্র আয়নায় পারবে এর সমাধান দিতে. আরেকটা কাজ করতে পারেন সেটা হচ্ছে মানুষের সাথে বেশি বেশি মিশতে থাকুন আর লুকোচুরির ভঙ্গিতে নয় সরাসরি কথা বলার চেষ্টা করতে থাকুন ..ভালো সমাধান পেয়ে যাবেন আশা করি,

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
MHizbullah

Call

১) প্র্যাকটিস, প্র্যাকটিস, প্র্যাকটিস নিজে নিজে করুন অভ্যাস করুন এই কথাটা শুনতে শুনতে আপনি হয়তো ক্লান্ত। কিন্তু এই কথাটা অমূল্য। আপনি যদি আপনার বাবা- মা অথবা দাদু-নানু কিংবা বন্ধুদের সামনে আপনার বক্তৃতার বিষয়বস্তু নিয়ে কথা বলা প্র্যাকটিস করেন তাহলে আপনার নার্ভাসনেস অনেক কমে যাবে, আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে। এই অভিজ্ঞতা পাবলিক স্টেজে আপনাকে স্বাচ্ছন্দ্যে কথা বলতে সাহায্য করবে। তবে বন্ধুদের সামনে বলার আগে আপনি নিজে কয়েকবার আয়নার সামনে প্র্যাকটিস করে নিতে পারেন। এছাড়াও আপনি প্রথমবার স্পীচ দেওয়ার পর পরের বার স্পীচ দেওয়ার সময় প্রথমবারের ভুলগুলো শুধরে নিতে পারবেন। প্র্যাকটিস করার সময়ই আপনার এই উন্নতি হচ্ছে। এই ধারা স্টেজে উঠা পর্যন্ত অব্যাহত থাকলে আপনি নিশ্চিতভাবে ভালো বক্তা হয়ে উঠতে পারবেন। আরো ব্যাপার হলো আপনি আপনজনের সাথে ভালো আই-কন্টাক্ট (চোখাচোখি) করতে পারবেন। তারা আপনার ভুলগুলো সহজে ধরিয়ে দিতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি আপনি পাবলিক স্টেজে আপনার অডিয়েন্সকে আপনজন মনে করেন। ২) খেয়াল রাখুন কোথায় বক্তৃতা দিচ্ছেন কোথায় কথা বলবেন সেটি মাথায় রাখুন আপনি জেনে নিন আপনি কোথায় বক্তৃতা দিচ্ছেন। কারণ একেক পরিবেশে আপনি একেক রকমভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করবেন। কোন কনফারেন্সে আপনি যেভাবে কথা বলবেন, পাবলিক স্থানে নিশ্চয় তেমনিভাবে কথা বলবেন না। তাছাড়া জেনে নিন আপনি মাইক্রোফোন ব্যবহার করে বক্তব্য দিচ্ছেন কি না? স্টেজে কোথায় দাঁড়িয়ে কথা বলছেন? সবার সাথে চোখাচোখি হচ্ছে কি না? মানে সবাই আপনাকে দেখছে কি না? বা আপনি সবাইকে দেখছেন কি না? ৩) আপনার দর্শক-শ্রোতাদের সম্পর্কে জানুন দর্শক সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নিন আপনি বিভিন্ন উপায়ে যোগাযোগের চেষ্টা করে আপনার অডিয়েন্সকে বোঝার চেষ্টা করুন। আপনার শ্রোতাদের মধ্যে একেক মানসিকতার মানুষ থাকবে। তাঁদের সকলের সম্পর্কে ধারণা নিতে চেষ্টা করুন। খুবই অল্প সময়ের মধ্যে আপনাকে এই কাজটি করতে হবে, তাই বিচক্ষণতার পরিচয় দিন। সফল হতে না পারলেও অন্তত চেষ্টা করুন। অডিয়েন্সকে আপন লোকজন ভাবুন। তাঁদের কীভাবে সম্বোধন করবেন সেটিও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ধরুন, কোন হলরুমে মধ্যবয়স্ক অডিয়েন্স অথবা কলেজ স্টুডেন্টে পূর্ণ। এই দুই ধরণের নাগরিকের সামনে আপনার কথাবলার ধরণ, সম্বোধন অবশ্যই ভিন্ন হবে। আরো খেয়াল রাখুন আপনার বক্তব্য টিভিতে বা ইন্টারনেটে লাইভ দেখাচ্ছে কিনা? সেখানে আপনাকে কথা বলার ক্ষেত্রে আরো সতর্ক থাকতে হবে। এমন অবস্থায় প্রথম দুটি টিপস মেনে চলুন। ৪) আপনার ব্যালান্স বজায় রাখতে (প্রিপারেশন নিন) ব্যালেন্স প্রস্তুতি আপনি যখন কোন একটি বিষয়ে বক্তব্য রাখবেন তখন সেই বিষয়ে ভালো করে জেনে নিন। কোন বিষয়ে ভালো না জেনে কথা বলা উচিত নয়। জেনে রাখুন, আপনার অডিয়েন্সের মধ্যে এমন কেউ থাকতে পারে যিনি ওই বিষয়ে ভালো জ্ঞান রাখেন। তাই আপনার সাবধান হওয়া উচিত। আপনি যখন বক্তব্য দিচ্ছেন তখন আপনি আপনার বক্তব্যের মাঝে ডুবে থাকুন। একাগ্রচিত্তে আপনার বিষয়ের প্রতি মনোনিবেশ করুন। বক্তৃতার বিষয় মনে রাখার সুবিধার জন্য কোন কাগজে/ ব্যানারে লিখে রাখুন। যেমন, কোন আলোচনাসভা হলে ব্যানারে সভার বিষয়বস্তু, আয়োজকের নাম ইত্যাদি; কোম্পানির পণ্য/ব্র্যান্ড পরিচিতি অনুষ্ঠানে স্লাইডে কোম্পানির নাম, ওয়েবসাইট, পণ্যের মটো ইত্যাদি লিখে রাখতে পারেন। অন্য একটি বিষয় হলো- আপনার কণ্ঠস্বর যেনো স্বাভাবিক থাকে- গলাফাটা চিৎকারও নয়, আবার নিচুস্বরও নয়, এমন টোনে কথা বলুন। মনে রাখুন, সাহিত্যসভায় আপনার ভয়েস ন্যাচারাল থাকলেই চলবে, কিন্তু প্রতিবাদসভায় আপনার ভয়েস হতে হবে জোরালো। কন্ঠধ্বনি বা স্বরের উত্থান-পতন সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো হবে। মাঝে মাঝে খানিকক্ষণের থামুন। দম নিন। আবার বলতে শুরু করুন। আত্মবিশ্বাসী কন্ঠে কথা বলুন। সবশেষের বিষয় হচ্ছে- বক্তব্য শেষে শ্রোতাদের সাথে প্রশ্নের খাতিরে বা শুভেচ্ছা বিনিময়ের খাতিরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে আপনি কেমন বক্তা তা জানতে পারবেন। ৫) স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিন লম্বা একটা শ্বাস নিন আপনি বক্তৃতা দেওয়ার সময় শ্বাস- প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখুন। ধীরে ধীরে শ্বাস নিন। ভালো হয় বক্তৃতা শুরু করার আগে কয়েকবার গভীরভাবে ৫/৭ সেকেন্ডব্যাপী শ্বাস (মুখ ব্যবহার করুন) নিয়ে নিন। তাতে পরবর্তী সময়টা শ্বাস- প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করবে। অনুপ্রেরনীয় ঘটনা বিখ্যাত জানু বক্তা-ব্যক্তিগণের অনেকেই প্রথম প্রথম নানান অসুবিধায় পড়েছিলেন বক্তৃতা প্রদানের ক্ষেত্রে। পরে তাঁরা সেইসব সমস্যা অতিক্রম করে সফল বক্তায় পরিণত হয়েছিলেন। শুনুন কয়েকজনের কথা- আমেরিকার খ্যাতনামা বক্তা উইলিয়াম জেনিং ব্লায়ান (১৮৬০-১৯২৫) প্রথম দিন বক্তৃতা করার চেষ্টা করলে কম্পনের ফলে তাঁর হাঁটুদ্বয় জোড়া লেগে গিয়েছিলো। হাস্যরসমূলক লেখালেখির জন্য বিশ্বখ্যাত মার্ক টোয়েন (প্রকৃত নাম স্যামুয়েল ক্লিমেন্স) প্রথম দিন বক্তৃতা করতে উঠলে এমন অনুভব করেন- তাঁর মুখগহ্বর তুলা দিয়ে পরিপূর্ণ এবং তাঁর নাড়ীর স্পন্দন অস্বাভাবিকরূপে বেড়ে চলেছে। জার্মানির পুনর্গঠনের অন্যতম নেতা ও এর স্থপতি অটোফন বিসমার্ক স্বীকার করতেন তিনি যখন জনসমক্ষে বক্তৃতা করার সময় অত্যন্ত বেকায়দায় পড়ে যেতেন। বার বার চেষ্টার ফলে তিনি এই অবস্থার থেকে পরিত্রাণ পান। ফ্রান্সের রাজনৈতিক বক্তা জীন জুরিস ডেপুটিদের চেম্বারে একটি বছর বোবার মতো বসে কাটিয়েছেন শুধুমাত্র নিজেকে তৈরি করতে। ভার্সাই চুক্তির অন্যতম নায়ক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড লয়েড জর্জ প্রথম প্রথম বক্তৃতা দেওয়ার সময় মুখ শুকিয়ে যেতো, জিহ্বা মুখগহ্বরের সাথে লেপ্টে যেতো। তারপরেও তিনি দমে যেতেন না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ