আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ সব ভাইকে...
শাওয়াল মাসে কোন নফল নামাজ থেকে শুরু করে কি আর কোন ইবাদত আছে? জানাবেন প্লীজ।
আল্লামা ইবনে রজব রহঃ বলেন, শাওয়াল মাসে রোযা রাখার তাৎপর্য অনেক। রমজানের পররাখা রমজানের রোযা কবুল হওয়ার আলামত স্বরূপ। কেননা আল্লাহ তাআলা কোন বান্দার আমল কবুল করলে, তাকে পরেও অনুরূপ আমল করার তৌফিক দিয়ে থাকেন। নেক আমলের প্রতিদান বিভিন্নরূপ। তার মধ্যে একটি হলো পুনঃরায় নেক আমল করার সৌভাগ্য অর্জন করা। তাই নামাজ রোযা ও অন্যান্য ইবাদত বাকি এগার মাসেও চালু রাখা চাই। কেননা যিনি রমজানের রব, বাকি এগার মাসের রব তিনিই।
তিনি আরো বলেন, তবে ইবাদতের মোকাবেলায় গুনাহের কাজ করলে নেয়ামতের অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ পায়। অতএব, কোন ব্যক্তি রমজানের পরপরই হারাম ও গর্হিত কাজে লিপ্ত হয়ে গেলে, তার সিয়াম স্বীয় মুখের উপর নিক্ষেপ করা হয়। এবং রহমতের দরজা তার জন্য বন্ধ হয়ে যায়।
গুনাহের পর ভাল কাজ করা কতইনা উৎকৃষ্ট আমল। কিন্তু তার চেয়ে আরো উৎকৃষ্ট আমল হলো নেক কাজের পর আরেকটি নেক কাজে মশগুল হওয়া। অতএব, আল্লাহর নিকট প্রার্থনা কর, যাতে তিনি মৃত্যু পর্যন্ত হকের উপর অটল থাকার তৌফিক দান করেন। সাথে সাথে অন্তর বিপথে যাওয়া থেকে পরিত্রাণ চাও। কেননা আনুগত্যের সম্মানের পর নাফরমানির বেইজ্জতি কতইনা নিকৃষ্ট।
প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সা.) বলেছন,
"যে ব্যক্তি রমজানের রোযা রাখার পরে-পরেই শাওয়াল মাসে ৬টি রোযা রাখে, সে যেনো পূর্ণ এক বছর (৩৬৫ দিন) রোযা রাখার সমান সওয়াব লাভ করে।"
মুসলিম ১১৬৪, আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসায়ী ও ইবনে মাজাহ।
সুবাহানাল্লাহ !! আলহামদুলিল্লাহ !!
এই সওয়াব এই জন্য যে, কেউ একটি ভালো কাজ করলে আল্লাহর অনুগ্রহে সে তার ১০ গুণ সওয়াব পাবে। দয়াময় আল্লাহ বলেন,
"...কেউ কোনো ভালো কাজ করলে সে তার ১০ গুণ প্রতিদান পাবে। "
সুরা আল-আন'আম, আয়াত ১৬০।
অতএব, এই ভিত্তিতে ৩০+৬ = ৩৬টি রোযা রাখলে ৩৬×১০ = ৩৬০ অর্থাত চন্দ্র মাস অনুআয়ী সারা বছর রোযা রাখার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে।
তবে শাওয়াল মাসের প্রথম দিন অর্থাৎ ঈদ-উল-ফিতরের দিন রোযা রাখা ইসলামে নিষিদ্ধ, তাই ঐ দিন বাদে এই রোজাগুলো রাখার নিয়ম।
ঈদ-উল-ফিতরের পর দিন থেকে মাসের শেষ দিন পর্যন্ত কোনো বিরতি না দিয়ে অথবা ভেঙ্গে ভেঙ্গে রাখা যায়।