ত্রীকে তার ঋতুমুক্তির পর পবিত্র অবস্থার শুরুতে মিলন ছাড়াই স্বামী প্রথমে এক তালাক দিবে। অতঃপর সহবাসহীন অবস্থায় তিন ঋতুর ইদ্দত অতিক্রান্ত হওয়ার পূর্বে স্বামী স্ত্রীকে রাজ‘আত করতে পারে। অর্থাৎ ফিরিয়ে নিতে পারে। কিন্তু ইদ্দতকাল শেষ হওয়ার পরে ফেরত নিতে চাইলে তাকে উভয় পক্ষের সম্মতিক্রমে নতুন বিবাহের মাধ্যমে ফেরত নিতে হবে। ইদ্দতকালে স্ত্রী স্বামীগৃহে অবস্থান করবে। অবস্থানকালে স্বামী স্ত্রীকে খোরপোষ দিবে। এটিই হ’ল তালাকের সর্বোত্তম ইসলামিক পন্থা আর এই নিয়ম অনুযায়ী ধর্মীয়ভাবে তালাক শুদ্ধ হবে না তাই তালাক দেয়ার পূর্বেই স্ত্রীর শারীরিক অবস্থা জেনে নেয়া বাধ্যতামুলক। 

আর প্রচলিত আইনে তালাকের জন্য কিছু শর্ত মানতে হয় যেগুলো হচ্ছেঃ

তালাক কার্যকর করার ক্ষেত্রে সরাস‌রি মুখে উচ্চারণের পাশাপাশি চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত নোটিশ পাঠাতে হয়। চেয়ারম্যান বলতে এখানে বোঝানো হচ্ছে— ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার চেয়ারম্যান, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বা প্রশাসক, সেনানিবাস এলাকায় এই অধ্যাদেশের অধীনে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের জন্য সরকারের নিয়োগ করা ব্যক্তি, ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা অথবা সিটি কর্পোরেশনের স্থগিত (suspended) থাকলে অধ্যাদেশের অধীনে চেয়ারম্যানের কাজ সম্পাদনকারী সরকারের নিয়োগ করা ব্যক্তি।

চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো তালাক নোটিশের একটি অনুলিপি তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে পাঠাতে হবে। তারপর এই নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে দুই পক্ষের পুনঃমিলনের উদ্দেশ্যে চেয়ারম্যান সালিশি কাউন্সিল তৈরি করে দুই পক্ষের পুনঃমিলনের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

যদি দুই পক্ষের মধ্যে কোনোভাবেই পুনঃমিলন সম্ভব না হয় তবে তালাক নোটিশ প্রদানের তারিখ হতে ৯০ দিনের মধ্যে তালাক কার্যকর হয়ে যাবে। এই ৯০ দিন পর্যন্ত স্ত্রীর ভরণপোষণ ও অন্যান্য খরচাপাতি বহন করবেন স্বামী।

তালাকের ক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে, যদি তালাক দেওয়ার সময় স্ত্রী গর্ভবতী হয়ে থাকে তবে তার গর্ভাবস্থার পরিসমাপ্তি না হওয়া পর্যন্ত অর্থাৎ সন্তান ভূমিষ্ঠ না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না। আর যদি সন্তান থাকে তাহলে তালাকের পর সন্তান মায়ের কাছে থাকবে। এক্ষেত্রে ছেলে সন্তান ৭ বছর পর্যন্ত এবং মেয়ে সন্তান বয়ঃসদ্ধিকাল পর্যন্ত মায়ের কাছে থাকবে৷ তবে তাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব বাবা বহন করবে৷ যদি বাবা দায়িত্ব পালন না করে সেক্ষেত্রে চেয়ারম্যান সালিসীর মাধ্যমে আলাপ আলোচনা করে বিষয়টি মীমাংসা করতে পারেন অথবা স্ত্রী পারিবারিক আদালতে অভিযোগ করতে পারবে। আইনত তালাকের পর সন্তানরা মায়ের কাছে থাকবে এবং উল্লেখিত নির্দিষ্ট বয়সের সময় সীমা পার হওয়ার পর পিতা তার সন্তানদের নিজের কাছে রাখার দাবি করতে পারবে আর তখন সন্তানের ইচ্ছা অনুযায়ী যে কারো সাথে থাকতে পারবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ