জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ায় জারক, বিজারকের কে কাকে জারিত করে নাকিবিজারিত করে, কে কারজারণ বা বিজারণ ঘটায়- এসব জিনিস পড়া শুরু করলে অনেকের ঘুম আসা শুরু করে!আজকে তোমাদের খুব সংক্ষেপে বিষয়গুলো ক্লিয়ার করার চেষ্টা করবো।প্রথমেই আমরা জারণএবং বিজারণের সংজ্ঞাটা ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করি।জারণ (Oxidation) →ইলেকট্রন বর্জন/অপসারণ প্রক্রিয়াবিজারণ (Reduction) →ইলেকট্রন গ্রহণপ্রক্রিয়াএবার আমরা জারক ওবিজারকের সংজ্ঞাটা দেখি।জারক (Oxidizing agent)→ ইলেকট্রন গ্রহণ করেবিজারক (Reducing agent) → ইলেকট্রন দানকরে ।‘জাগ্রত বিদ্বান’ শব্দটা মনে রাখো। তাহলে জারক-বিজারকের কে গ্রহণকরে আর কে বর্জন করে,সেটি নিয়ে কোন প্যাঁচলাগবে না।জাগ্রত = জারক গ্রহণকরেবিদ্বান = বিজারক দানকরে ।→ জারক অন্যের জারণ ঘটায় বা অন্যকে জারিত করে, কিন্তু নিজেবিজারিত হয়। অর্থাৎ,জারক অন্যকে ইলেকট্রনত্যাগ করাতে বাধ্য করেকিন্তু নিজে কোন ইলেকট্রন ত্যাগ না করেইলেকট্রন গ্রহণ করে।→ বিজারক অন্যেরবিজারণ ঘটায় বাঅন্যকে বিজারিত করে,কিন্তু নিজে জারিত হয়।তারমানে বিজারকঅন্যকে ইলেকট্রন গ্রহণকরতে বাধ্য করে কিন্তুনিজে কোন ইলেকট্রনগ্রহণ করে না, বরংইলেকট্রন ত্যাগ করে।নিচের ছড়াটা সবসময়মাথায় রাখবা। তাহলেবিক্রিয়ায় জারক-বিজারক চিহ্নিত করতেকোন সমস্যা হবে না।জারণ মানে ছাড়ন করলে জারণ, হয় জারণ মানের বাড়ন।বিজারণ মানে গ্রহণকরলে বিজারণ, হয়জারণ মানের কমন।(বিজারণ মান না কিন্তু!)অর্থাৎ-→ বিজারকের জারণ মানবাড়ে।→ জারকের জারণ মানকমে।মনে রাখবে, কোনবিক্রিয়ায় জারণ এবংবিজারণ বিক্রিয়াএকইসাথে ঘটে। অর্থাৎ,বিজারক কোন ইলেকট্রনত্যাগ করলে অবশ্যইজারক সেটা গ্রহণকরবে। একটা বিক্রিয়ায় জারণ ঘটলে অবশ্যই সাথে বিজারণও ঘটবে।→ যে অর্ধ বিক্রিয়ায়জারণ মান বাড়ে, তাকেজারণ অর্ধ বিক্রিয়া(Oxidation half reaction)বলে।→ যে অর্ধ বিক্রিয়ায়জারণ মান কমে, তাকেবিজারণ অর্ধ বিক্রিয়া(Reduction half reaction)বলে।চলো তাহলে, আমরাএকটা বিক্রিয়ার জারণএবং বিজারণ অর্ধবিক্রিয়া লিখি।একইসাথে বিক্রিয়াটিতে জারক এবং বিজারক চিহ্নিত করি।বিক্রিয়া: 2FeCl2 + SnCl4 → 2FeCl3 + SnCl2বিক্রিয়াটির আয়নিকরূপ: 2Fe2+ + Sn4+ →2Fe3+ + Sn2+জারণ অর্ধ বিক্রিয়া:2Fe2+ → 2Fe3+ + 2e-বিজারণ অর্ধ বিক্রিয়া:Sn4+ + 2e- → Sn2+এখন আমরা যদি জারণঅর্ধ বিক্রিয়া এবং বিজারণ অর্ধ বিক্রিয়া যোগ করি, তাহলেই নিশ্চয় সম্পূর্ণ জারণ- বিজারণ বিক্রিয়াটাপাবো?জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া: 2Fe2+ + Sn4+ → 2Fe3+ + Sn2+অর্থাৎ, দর্শক আয়ন যোগকরে আমরা পাচ্ছি,2FeCl2 + SnCl4 → 2FeCl3+ SnCl2বিক্রিয়াটিতে, FeCl2বিজারক এবং SnCl4জারক।
যদি কোন ছেলে(ধাতু) কোন
মেয়েকে(অধাতু) কিছু (ইলেকট্রন)
প্রদান
করে তাহলে ছেলেটি যেহেতু কিছু
দিল তাহলে ছেলেটি নিজে জারিত
হল আর
মেয়েটি গ্রহণ করল তাই সে হল
বিজারিত! আর যেহেতু
ছেলেটি মেয়েটিকে বিজারিত করল
তাহলে ছেলেটি বিজারক আর
মেয়েটি ছেলেটিকে জারিত করল
তাই মেয়েটি জারক!
মোটকথা, ইলেকট্রন হারানোকেই
জারন বলে আর ইলেকট্রন যার
ভিতরে বৃদ্ধি পায় সে জারক!
ইলেকট্রন বৃদ্ধি পাওয়াকে বিজারণ
বলে আর যার কারণে বৃদ্ধি পায়
সে বিজারক!
কারো জারণ-বিজারণ
বিক্রিয়া মনে রাখতে অসুবিধা হলে এই
উদাহরণ অনুযায়ী মনে রাখবা!
আশা করি জীবনেও ভুলবে না !
আরেকটা কথা জারণ-বিজারণ
একটি যুগপৎ বিক্রিয়া মানে আদান-
প্রদান একই সাথে সংঘটিত হয়!
[collected]
যে মৌল ইলেকট্রন ত্যাগ করে তাকে জারন বলা হয়। অপরপক্ষে যে মৌল ইলেকট্রন গ্রহন করে তাকে বিজারন বলে। যেমন NaCl2 যৌগে সোডিয়াম একটি ইলেকট্রন ত্যাগ করে নিজে বিজারিত হয়ে ক্লোরিনকে জারিত করে ফলে সোডিয়াম জারন। অন্যদিকে ক্লোরিন দুইটি পরমানু সোডিয়ামের ত্যাগকৃত ইলেকট্রনটি গ্রহন করে। অর্থাৎ ক্লোরিন নিজে জারিত হয়ে সোডিয়ামকে বিজারিত করে। সুতারাং ক্লোরিন বিজারন।