শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

সৌরজগত মূলত গ্যাস ও ধূলোর ঘূর্ণায়মান অবস্থা থেকে আজকের রূপ লাভ করে। সহজভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য আমরা ধরে নিতে পারি পৃথিবী ঘূর্ণায়মান সূর্য থেকে ছিটকে বের হয়ে যাওয়া একটি বস্তু খণ্ড। নেয়া যাক লাল বৃত্ত হল সূর্য এবং সবুজ বৃত্ত হল পৃথিবী। খয়েরী রেখাটি পৃথিবীর কক্ষপথ। এখন, সূর্যের আকর্ষণের ফলে সূর্যের দিকের পৃথিবীর বেগ লাল ভেক্টর দ্বারা নির্দেশ করা হল। আর পৃথিবীর নিজের 'ছিটকে যাওয়ার' বেগ কে নীল ভেক্টর দ্বারা নির্দেশ করা হল। পৃথিবীর কক্ষপথ কে খয়েরি বৃত্তাকার রেখা দ্বারা চিহ্নিত করা হল। প্রকৃত ক্ষেত্রে লাল ও নীল ভেক্টর এর মান এমন যে তাদের ভেক্টর যোগফল (বেগুনী ভেক্টর) সবসময় খয়েরি বৃত্তাকার রেখার স্পর্শক হবে। এই বেগুনি ভেক্টরই পৃথিবীর গতির দিক নির্দেশ করে। অর্থাৎ পৃথিবীর গতিপথ বৃত্তাকার। এজন্যই পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে। আধুনিক জ্যোতির্বিদ্যার সময়কালকে দুই-আড়াইশো বছরের বেশি সময় পর্যন্ত ধরা যাবে না। এই আধুনিকতার মূলে হচ্ছে যখন থেকে বিজ্ঞান যন্ত্র আবিষ্কার করে তার মাধ্যমে গ্রহ-নক্ষত্রগুলো পর্যবেক্ষণ করতে শুরু করে। গ্যালিলিও দূরবীন আবিষ্কার করে গ্রহ-নক্ষত্রগুলোকে প্রথম তাদের আকৃতি ও বিন্যাস অনুযায়ী চাক্ষুস করতে সক্ষম হন। এর আগ পর্যন্ত পৃথিবীতে চার হাজার বছর পর্যন্ত পৃথিবী ও আমাদের সৌর জগত মায় মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমাদের ধারণা ছিল অনুমান ও দার্শনিক ভাবালুতার সংমিশ্রন। এরিস্টল একদিকে যেমন চাঁদের গায়ে পৃথিবীর ছায়া দেখে নিশ্চিত হন পৃথিবীর আকার গোলাকৃতি, তেমনি বিশ্বজগত নিয়ে তিনি তার ভাববাদ সংমিশ্রন করে একে ব্যাখ্যা করেন। ওরিস্টল ও টলেমিদের সময় উনারা মত দিয়েছিলেন, পৃথিবী স্থীর। এই পৃথিবীই হচ্ছে মহাবিশ্বের কেন্দ্র। একে কেন্দ্র করেই সূর্য চক্রাকারে ঘুরছে অবিরাম। কুপার্নিকাস ও গ্যালিলিও চার হাজার বছরের পুরোনো প্রতিষ্ঠিত “বৈজ্ঞানিক থিউরীকে” বাতিল করে দিয়ে বললেন, পৃথিবী ভন ভন করে ঘুরে চলেছে সূর্যের চারপাশে। এই সৌরজগতের অধিপতি আসলে সূর্য, পৃথিবী তাকে অনুসরণ করে মাত্র। বিজ্ঞানের বেলায় এরকম আকাশ ভেঙ্গে পড়া আবিষ্কার আনন্দের ঘটনাই বৈকি। বিজ্ঞান কোন ধারণা বা সন্দেহের উপর প্রতিষ্ঠত না, বিজ্ঞানকে প্রমাণ করতে হয়। কাজেই যা প্রমাণিত তার জন্য অপ্রমাণিতকে জায়গা ছেড়ে দিতে হয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ