কাউকে কুত্তার বাচ্চা বললে সে রাগ করে কারন কুকুর হচ্ছে নিচু জাতের প্রানী এবং নিকৃষ্ট আর এই প্রানীর অনেক খারাপ গুন রয়েছে যা মানুষের অপছন্দ যেমন খাবার চুড়ি করে খায় নোংরা জিনিস খায় তাই কাউকে এই নামে গালি দিলে রাগ করে।আর বাগ হচ্ছে সাহসী সে কখনো খাবার চুড়ি করে খায় না। এবং সে সহজে কিছু ভয় পায় না।আর মানুষ সাহসী কে ভালোবাসে। এর জন্যই কাউকে বাঘের বাচ্চা বললে রাগ করে না।
কুত্তার বাচ্চা গালিটা প্রচলিত একটা গালি, এটা যাকে প্রয়োগ করে বলা হয়, সে রাগার একটাই কারন সে এই গালিটা বেশি শুনেছে, এবং,প্রচলিত বলে, অপর পক্ষে বাঘের বাচ্চা এই গালিটা খুব কম ব্যবহারের কারনে, সেটা শুনলে সে রাগে না, যদিও দুটি প্রানী হিংস্র তাই বাঘের বাচ্চা শুনলে তার কাছে আনকমন লাগে, সে নিজেকে কিছুটা গর্বিতও ভাবে, তাই রাগে না।
সৃষ্টির সেরা জীব মানুষকে অন্য যেকোন প্রাণীর সাথে তুলনা করা মানেই তাকে আরো ছোট করা। কিন্তু কাউকে বাঘের সাথে তুলনা করলে খুশি হয়, কিন্তু কুকুরের সাথে তুলনা করলে রাগ করে, কারন এখানে একটি সাইক্লোজিক্যাল ব্যাপার দাঁড়িয়ে গেছে। বংশপরম্পরায় ব্যাপারটিকে আমরা এইভাবেই ধরে নিয়েছি। কিন্তু প্রকৃত অর্থে একটি বাঘ অপেক্ষা কুকুরের কাছ থেকেই আমরা বেশি উপকার পেয়ে থাকি। সেই আদিকাল থেকেই মানুষের অন্যতম পরম বন্ধুও এই কুকুর। তাহলে প্রশ্ন দাঁড়ায়, কাউকে বাঘের সাথে তুলনা করলে খুশি হয়, কিন্তু কুকুরের সাথে তুলনা করলে রাগ করে কেন? আসলে ব্যাপারটা অনেকটা এরকম, আমরা তাকেই সমাদর করি যে আমাদের থেকে কোন না কোন দিকে এগিয়ে। যেমন: গরীব অপেক্ষা ধনীকে, দূর্বল অপেক্ষা সবলকে, অশিক্ষিত অপেক্ষা শিক্ষিতকে, কুৎসিত অপেক্ষা সুন্দরকে ইত্যাদি। বাঘ এবং কুকুরের বেলায়ও ব্যাপারটা একই। বাঘ আমাদের থেকে শারীরিক দিক দিয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী, অন্যদিকে কুকুর দূর্বল। একজন মানুষের ছোট্ট একটি ধমকেই কুকুর পালিয়ে যায়, সামান্য খাবারের আশায় মানুষের পিছে পিছে ঘোরে, প্রভুর বাড়ি পাহাড়া দেয় এ রকম আরো অনেক কিছু। সেই কারনে আমাদের মনে কুকুরের একটি প্রতিচ্ছবি হিসাবে দূর্বল, লোভী, পরনির্ভরশীল এবং দাস টাইপের একটি প্রাণীর ছবি তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে বাঘ আমাদের থেকে শক্তিশালী, বাঘের হুংকার শুনলে আমাদের আত্মা কেঁপে যায়, আমাদের মনে ভীতির সঞ্চার হয়। সেই কারনে বাঘের প্রতিচ্ছবি হিসাবে একটি শক্তিশালী, ব্যাক্তিত্বসম্পন্ন ও রাজকীয় প্রাণীর ছবি আমাদের মনে ভেসে ওঠে। আর এই সকল কারনে আগের দিনের রাজা-বাদশাহ'রা নিজেদের সৌর্য্য, শক্তি, প্রতিপত্তি বেশি বেশি প্রকাশ করার জন্য বাঘের ছবি ব্যাবহার করতেন। মহিশূরের রাজা টিপু সুলতান বাঘকে তার রাজকীয় প্রতীক বানিয়েছিলেন। সৈন্যদের পোষাক বাঘের মতো ডোঢ়াকাটা করার হুকুম দিয়েছিলেন। নিজের ঘরের সামনে দুটি বাঘ বেঁধে রাখতেন। এই সবকিছুর একটিই কারন, নিজের প্রতিপত্তি প্রকাশ করা। তার আজও মানুষ বাঘ বলতে শক্তির প্রতীককে বোঝায়, নিজেকে "বাঘের বাচ্চা" বলতে গর্ববোধ করে। আর "কুকুরের বাচ্চা" বলতে নিচু শ্রেনী, দূর্বল, কাপুরুষতা ইত্যাদি বোঝায়। আর তাই "কুকুরের বাচ্চা" এখন একটি গালিতে পরিণত হয়েছে আর "বাঘের বাচ্চা" পরিণত হয়েছে প্রশংসাসূচক শব্দে।
কাল্ফ আউলাদ মানে কুত্তার বাচ্ছা। কুত্তার বাচ্চা বলে গালি দেওয়া হয়। বাঘের বাচ্চা বলে কাউকে গালি দেওয়া হয়না। বরং কোন উৎসাহ দেওয়ার ক্ষেত্রে বাঘের বাচ্চা বলা হয়।
কুকুরের প্রানী হিসাবে বৈশিষ্ট্য বা চরিত্র:
ক. কুকুর এর চামড়া হাড় কোনটিইর অর্থনৈতিক গুরুত্ব নাই।
খ. কুকুর নিধন অভিযান হয়। এবং কুকুরকে নৃশংস ভাবে ইনজেকশন দিয়ে হত্যা করা হয়।
গ. কুকুরের কামড়ে জলাতঙ্ক রোগ হয়।
ঘ. কুকুর মরা, পচা, এটো, বিষ্ঠা খেয়ে থাকে। সুতরাং কুকুর কোন খাবার খেলে সে পাত্র নষ্ট হয়ে যায়।
ঙ. কুকুর দিনের বেলা প্রকাশ্যে যৌনাচার করায় ব্যাভিচারীকে কুকুরের সাথে তুলনা করা হয়।
চ. কুকুর কাপড়ে স্পর্শ করলে নাপাক হয়ে যায়।
ছ. নেড়ি কুকুর বলে দুর্বল কুকুর শুধু ঘেউ ঘেউ করে। কোন মানুষ অযথা উচ্চস্বরে কথা বলে কুকুরের সাথে তুলনা করা হয়। যা অত্যন্ত দুর্বল ও অসম্মান জনক।
বাঘের বৈশিষ্ট্য বা চরিত্রঃ
ক. বাঘ মাংসাশি প্রানী হলেও জীবন্ত প্রাণী শিকার করে আহার করে। কারো রান্না করা খাবার খেতে যায় না।
খ. বাঘ হিংস্র তবে সংখ্যায় কম হওয়ায় তা যত্রযত্র ঘুরে বেড়ায় না বলে মানুষের সংস্পর্শে কম আসে।
গ. বাঘের চামড়া ও হাড় এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব আছে।
ঘ. বাঘ অনেক শক্তিশালী হওয়ায় তার তুলনা মানুষ পছন্দ করে।
ঙ. বাঘ দেখতে সুন্দর।
চ. বাঘ ক্ষুধা না পেলে শিকার করে না। অযথা, কোন খাবার নষ্ট করে না।
ছ. বাঘ প্রকাশে যৌনাচার করে না।
জ. বাঘ জাতীয় পশু হওয়ায় তার জাতীয় মর্যাদা আছে।
চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারনেই কারণেই যুগ যুগ ধরে মানুষ বাঘের মতো শক্তি আর সাহস নিয়ে বাচতে চায়। কুকুরের মত নিকৃষ্ট জীবন নিয়ে নয়। তাই বাঘের উদাহরণ মানুষ পছন্দ করে কুকুরের সাথে তুলনা পছন্দ করেনা।