আমাদের অনেকেরই অভ্যাস আছে, কাজের ফাঁকে, প্রয়োজনে বা অপ্রয়োজনে, আঙ্গুল ফোটানোর। আঙ্গুল ফোটালে একধরনের জোড়ালো "ক্র্যাকিং" শব্দও হয় ।
সাধারণত ধারণা করা হয়, আঙ্গুল মোচড়ানোর সময় হাড়ে হাড়ে ঘষা লেগে বুঝি শব্দ হয়। ব্যাপারটা আসলে সে রকম নয়। সেখানে হাড়ের মধ্যে ঘষা লাগেনা। আমরা যখন আঙ্গুল ফোটাই, আঙ্গুল গুলোকে আমরা সাধারনত এমন পরিমান বেন্ডিং করি, যেটা সাধারন ভাবে আঙ্গুলের পক্ষে হওয়া সম্ভব নয়। আমাদের জয়েন্ট গুলোর চারপাশে একধরনের ফ্লুইড থাকে, যেটাকে বলা হয় - সাইনোভিয়াল ফ্লুইড। যখন আমরা এভাবে আঙ্গুল গুলোকে তাদের স্বাভাবিক অবস্থা থেকে সরিয়ে আনি, এই ফ্লুইডে একধরনের ভ্যাকুয়াম সৃষ্টি হয় এবং একটা বাবল তৈরী হয়, যেটা একদম সাথে সাথেই ভেঙ্গে যায়। এই বাবল ফাটার শব্দটাই হচ্ছে, আঙ্গুল ফোটানোর শব্দের উৎস।
অনেকেই মনে করেন, এই শব্দ হয় হাড়ের সঙ্গে হাড়ে ঘষা লাগার ফলে। আসলে কিন্তু তা নয়। মানবদেহে হাড়গুলোর সংযোগস্থলে একধরনের তরল পদার্থ থাকে। যা হাড়ের নড়নচড়নে সাহায্য করে। একে বলে সিনোভিয়াল ফ্লুইড।
হাড়ের সংযোগস্থলে শূন্যস্থান তৈরি হলে এই তরল পদার্থে বুদ্বুদ তৈরি হয়, আর তা ফেটেই শব্দ সৃষ্টি করে। একইভাবে হাড় বা আঙুল যখন টানা হয় অথবা বাঁকানো হয়, তখন হাড়ের সংযোগস্থলে ফাঁক বেড়ে যায়। আর ঠিক তখনই তরল পদার্থের বুদ্বুদ ফেটে যায় এবং মটমট শব্দ কানে আসে। এ কারণে একই আঙুল একবার ফোটালে সঙ্গে সঙ্গে আরেকবার ফোটানো যায় না। হাড়ের সংযোগস্থলে তরলের বুদ্বুদ তৈরি হতে কিছুটা সময় নেয়।