shohanrand1

Call

কোরআনের তফসীর বোঝার জন্য প্রথমত যে বিষয়টির প্রয়োজন তার নাম হাদীস । যুক্তি হিসেবে আমরা সাহাবাদের (রা:) দিকে তাকাতে পারি । সেখানে দেখা যায় তারা কোরআনের কোনো আয়াত না বুঝলে রসুল (সা:) এর স্নরনাপন্ন হতেন এবং রসুল (সা:) সেটাকে বর্ননা করে দিতেন । দ্বিতীয় প্রমান হিসেবে আমরা বলতে পারি যে, মোফাসিরগন এ কথার উপর একমত হয়েছেন , কোরআনের তাফসীর ৩ টি পদ্ধতিতে করা যায় বা করতে হবে : প্রথমত : কোরআনের তফসীর কোরআনের আয়াত দ্বারা । দ্বিতীয়ত: কোরআনের তফসীর হাদিস দ্বারা করা । এখানেও আমরা বুঝতে পারলাম কোরআনের তফসীরের জন্য হাদিসের প্রয়োজন । কোরআনের এই আয়াতকে আমরা প্রমান স্বরূপ বলতে পারি । بِالْبَيِّنَاتِ وَالزُّبُرِ وَأَنزَلْنَا إِلَيْكَ الذِّكْرَ لِتُبَيِّنَ لِلنَّاسِ مَا نُزِّلَ إِلَيْهِمْ وَلَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَ প্রেরণ করেছিলাম তাদেরকে নির্দেশাবলী ও অবতীর্ণ গ্রন্থসহ এবং আপনার কাছে আমি স্মরণিকা অবতীর্ণ করেছি, যাতে আপনি লোকদের সামনে ঐসব বিষয় বিবৃত করেন, যে গুলো তোদের প্রতি নাযিল করা হয়েছে, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে। (সুরাহ নাহল : ৪৪ ) এই আয়াতে জিকির এর অর্থ সর্বসম্মতিক্রমে কোরআন পাক । আয়াতে রসুল (সা:) কে আদেশ করা হয়েছে যে , আপনি লোকদের কাছে কোরআনের আয়াত বর্ননা ও ব্যাখ্যা করে দিন । এতে সুস্পস্টরূপে প্রমান হয় যে, কোরআনের তত্ব ও তথ্য ও বিধানাবলী নির্ভুলভাবে বোঝা রসুল (সা:) এর বর্ননার ওপর নির্ভরশীল । যদি প্রত্যেক ব্যক্তি শুধু আরবী ভাষা ও সাহিত্যের জ্ঞান লাভ করেই কোরআনের বিধানাবলী বুঝতে সক্ষম হত , তবে রসুলুল্লাহ (সা:) কে বর্ননা ও ব্যাখ্যার দায়িত্ব অর্পন করার কোনো অর্থ থাকতো না । আল্লামা শাতেবী (রহ:) "মুয়াফাকাত" গ্রন্হে বিস্তারিত ভাবে প্রমান করেছেন যে , হাদিস সম্পূর্নভাবে কোরআনের ব্যাখ্যা । কেননা কোরআনে রসুলুল্লাহ (সা:) সম্পর্কে বলা হয়েছে "ও ইন্নাকা লাআলা খুলুকীন আজিম" এর সারমর্ম এই যে, রসুল (সা:) থেকে যেকোনো উক্তি ও কার্য বর্নিত হয়েছে তা সব কোরআনেরই তাফসীর । কোনোটি বাহ্যত: কোন আয়াতের তাফসীর বা ব্যাখ্যা , আর কোনটি বাহ্যত কোরআনে নেই কিন্তু রসুলুল্লাহ (সা:) এর অন্তরে ওহী হিসেবের প্রক্ষিপ্ত করা হয় । (মাআরেফুল কোরআন , ৫ম খন্ড , পৃ : ৭২ ) তৃতীয় প্রমান: - কোরআন যেহেতু সংক্ষিপ্ত সেহেতু তাহার ব্যাখ্যার অবশ্যই প্রয়োজন আর ব্যাখ্যার জন্য সর্বোত্তম পদ্ধতি হোলো হাদিস শরীফ। (ফতহুল বয়ান , খন্ড ৪ , পৃ : ৩৩ ) আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ুতী (রহ:) তার কিতাব "আল এতকানে" লিখেছেন যে , কোরআনের তাফসীর করার জন্য অবশ্যই হাদিসের প্রয়োজন, দলীল হিসেবে তিনি হাদিস বর্ননা করেছেন । (আল এতকান , খন্ড ২ , পৃ: ৩৮৭ ) উদাহরন স্বরূপ একটি আয়াত এখানে দেওয়া হোলো , সুরাহ ফাতেহার ৭ম আয়াত صِرَاطَ الَّذِينَ أَنعَمتَ عَلَيهِمْ غَيرِ المَغضُوبِ عَلَيهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে। ( সুরাহ ফাতিহা : ৭ ) এখানে রসুলুল্লাহ (সা:) বলেন المَغضُوبِ হোলো ইহুদীরা আর الضَّالِّينَ হোলো নাসারারা । রসুলুল্লাহ (সা:) থেকে এই ব্যাখ্যা না হলে আমরা বুঝতাম না , এখানে المَغضُوبِ ও الضَّالِّينَ বলতে কাদের বুঝানো হয়েছে । পূর্বে উল্লেখিত গ্রন্হাদির আলোচনা দ্বারা এ কথাই সুস্পস্ট বুঝা যায় যে , হাদিস কোরআনেরই ব্যাখ্যা ও কোরআনের তাফসীরের জন্য হাদিসের অনুসরন করা অবশ্যই প্রয়োজন । তথ্যসূত্র : ১। মুয়াফাকাত - আল্লামা শাতেবী (রহ:) ২। মাআরেফুল কোরআন - মুফতী শফী (রহ:) ৫ম খন্ড , পৃ : ৭২ ৩। ফতহুল বয়ান - খন্ড ৪ , পৃ : ৩৩ ৪। আল এতকান - আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ুতী (রহ:) উত্তর দিয়েছেন : মুফতী রফিকুল ইসলাম হাদিস এবং তফসীর বিভাগের প্রধান ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বসুন্ধরা , ঢাকা - ১২১২ বাংলাদেশ ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ