বৃষ্টি যেভাবে গঠিত হয় এবং যেভাবে পতিত হয় সে হিসাব করলে বৃষ্টির ফোঁটা অনেক বড় হবার কথা। কিন্তু বাস্তবে একটা সীমার চেয়ে বড় ফোঁটা হয় না। ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টির চেয়ে ছোট হতে পারে যেটা গুড়িগুড়ি বৃষ্টি নামে পরিচিত। কিংবা এমনও হতে পারে একই বৃষ্টির মাঝে ফোঁটাও আছে গুড়িও আছে। বৃষ্টির ফোঁটা বেশি বড় না হতে পারার পেছনে কাজ করে যে নিয়ম সেটি পৃষ্ঠটান বা সারফেস টেনশন। তরলের একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সবসময় সে চেষ্টা করবে স্বল্প ক্ষেত্রফলে অধিক পরিমাণ আয়তন দখল করতে। এই দিক থেকে অন্য যেকোনো আকৃতির চেয়ে গোলাকার আকৃতি সবচে কম ক্ষেত্রফল রচনা করে। সেজন্য বৃষ্টির ফোঁটাগুলো গোলাকার হয়ে থাকে। এখানে আরেকটা জিনিস খেয়াল করার মত- ধরা যাক বড় একটি ফুটবল আকৃতির বৃষ্টির ফোঁটা আছে। এখন সে বড় ফোঁটা ভেঙ্গে গিয়ে অনেকগুলো ছোট ছোট ফোঁটার সৃষ্টি করল। তাহলে ছোট ছোট সবগুলো ফোঁটা মিলে যে আয়তন হবে সেটা বড় ফোঁটার আয়তনের সমান। কিন্তু এখানে আয়তন সমান হলেও ক্ষেত্রফল সমান হয় না। বড় ফোঁটার যে ক্ষেত্রফল তার চেয়ে কম ক্ষেত্রফল হয় ছোট ফোঁটার। আর তরলের ধর্মও হচ্ছে স্বল্প ক্ষেত্রফলে অধিক আয়তন দখল করা। তাই অল্পতেই বড় ফোঁটাগুলো ছোট ছোট ফোঁটায় পরিণত হয়ে যায়। জলের ফোঁটাগুলোর ব্যাস তিন মিলিমিটারের বেশি হলেই সেটি ভেঙ্গে পড়ার প্রবণতা দেখায়। আরও একটি কারণ আছে- যখন একটি বৃষ্টির ফোঁটা নিচে নামতে শুরু করে তখন তার মাঝে বাতাসের বাধা এসে উপস্থিত হয়। বড় ফোঁটার মাঝেও পৃষ্ঠটান আছে। কিন্তু বড় ফোঁটার জন্য বাতাসের যে বাধা সে পরিমাণ টান পানি-পৃষ্ঠে নেই। তাই ফলস্বরূপ না পেরে খণ্ডে খণ্ডে বিভক্ত হয়ে যায়।