shalahin

Call

উত্তর ও ব্যাখ্যা : পিলারকে অতিক্রম করার সময় আপনার কাছে সেটাকে ১০০ কিলোমিটার বেগে গতিশীল মনে হবে। কারণ আপনার গাড়ির সাথে সমান বেগে আপনি সামনের দিকে চললেও নিজে তা টের পাবেন না। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন টের পাবে। ঠিক উল্টো অনুভূতি হবে আপনার। আপনি ভাববেন রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটা বুঝি ১০০ কিলোমিটার বেগে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে আর আপনি গাড়ির ভেতরে স্থির হয়ে বসে আছন। একই রকম অনুভূতি হবে একটা বৈদ্যুতিক পিলার দেখলেও। কী, খুব গোলমেলে মনে হচ্ছে প্রশ্নোত্তরগুলো? একটু ভালো করে লক্ষ করলেই কিন্তু গোলমালটা কেটে যাবে। আসলে আমরা বিজ্ঞানের যে বিষয়কে সবচেয়ে গোলমেলে ভাবি, সেটাই বাস্তবের পদার্থ বিজ্ঞান। আর এই পদার্থ বিজ্ঞান বলে মহাবিশ্বের দুটি ব্যাপার ছাড়া সবকিছুই আপেক্ষিক। তাহলে পরম সেই ব্যাপার দুটি কী? পদার্থ বিজ্ঞানের সূত্র আর আলোর বেগ। আর এই নিয়েই গড়ে উঠেছে বিজ্ঞানের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর তত্ত্বটি। আমরা এতোক্ষণ যে বিষয়গুলো আলোচনা করলাম আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব প্রকাশের আগে এসব নিয়ে তেমন কেউ মাথা যদিও মাথা ঘামায়নি তবু এগুলো অপেক্ষিক তত্ত্বে মূল বিষয় নয়। ১৯০৫ সালে আইনস্টাইন তত্ত্ব প্রদান করেছিলেন। আপেক্ষিক তত্ত্বে তিনি দুটি সুত্র দাঁড় করিয়েছিলেন— ১. পদার্থ বিজ্ঞানের সব সূত্র মহাবিশ্বের সকল স্থানে একই রকম থাকে ২. আলোর গতি মহাবিশ্বের সব স্থানে একই থাকবে আসেল এই দুটি ব্যাপার পরম না হলে আপেক্ষিক বিষয়গুলো যেমন বুঝা সম্ভব হতো না, তেমনি পদার্থ বিজ্ঞানের কোনো সূত্রই ঠিক থাকত না। আপেক্ষিক তত্ত্বে এ সূত্র দুটি ব্যাখ্যা করতে গেলে আরো তিনটি মজার সূত্র সাসনে চলে আসে। সেই তিনটি সূত্র হলো—দৈর্ঘ প্রসারণ, কাল দীর্ঘায়ন ও সময় সংকোচন। ক. কোনো স্থির বস্ত গতিশীল হলে তার দৈঘ বেড়ে যায়। এই সুত্র দৈর্ঘ প্রসারণ সূত্র নামে পরিচিত। খ. গতিশীল কোনো স্থানের ঘড়ি, স্থির অবস্থার ঘড়ির চেয়ে ধীরে চলে। অর্থাৎ গতিশীল স্থানে সময়ের সম্প্রসারণ ঘটে। গ. স্থির কোনো বস্তু গতিশীল হলে তার ভর বেড় যায়। অর্থৎ, স্থির অবস্থায় কোনো বস্তুর ভর ১ কেজি হলে বস্তুটির গতিশীল অবস্তার ভর ১ কেজি থেকে বেশি হবে। সাদা চোখে দৈর্ঘ প্রসারণ, কাল দীর্ঘায়ন, সময় সংকোচন-এর ব্যাপারগুলো আমরা বুঝতে পরি না। যেমন চলন্ত গাড়িতে বসে নিজের গতি কতটুকু সেটা যেমন আমরা বুঝতে পারিনা, মনে হয় যেন নিজে স্থির, আর ঘরবাড়ি, গাছপালা, দালানকোঠা সব বিরাট গতিতে পেছনের দিকে ছুটছে—এ ব্যাপারগুলো ঠিক তেমন। বিরাট গতির কোনো রকেটে চড়ে আপনি কখোনোই বুঝতে পারবেন না আপনার রকেটের দের্ঘ্য বেড়ে গেছে, আপনার ঘড়ি ধীরে চলছে কিংবা আপনার ভর বেড়ে গেছে। বরং আপনার কাছে ব্যাপারটা উল্টো মনে হবে। মনে হবে আপনি স্থির আর স্থির পৃথিবী দেখে ভাববেন, আপনি ঠিকই আছেন বরং পৃথিবী সংকুচিত হয়ে গেছে, পৃথিবীর ভর বেড়ে গেছে এবং পৃথিবীর ঘড়িগুলো ধীরে চলছে। আবার এই যে স্থির পৃথিবীর কথা বললাম তা কি আসলেই স্থির? কক্ষণো নয়, পৃথিবী সূর্যের চারপাশে আবিরাম গতিতে ঘুরছে কিন্তু আমরা পৃতিবীতে বসে সেটা বুঝতে পারছি না। আর এই ‘পারছি না’ উত্তর রয়েছে আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্বে। একটা এতক্ষণ জানিয়ে রাখি এতক্ষণ আপেক্ষিক তত্ত্ব নিয়ে বক বক করলাম তার প্রায় সবটুকুই ‘স্পেশাল থিয়োরি অব রিলেটিভিটি’। জেনারেল থিয়েরি অব রিলেটিভিটি নয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ