শিরায় ব্যথা কি?
শিরায় ব্যথা এমন একটি অবস্থাকে বোঝায় যেখানে স্নায়ুকলায় আঘাত বা ক্ষতির ফলে ব্যথা সৃষ্টি হয়। এটি শরীরে ব্যথার অনুভূতিগ্রাহক অঙ্গে ভুল বা অস্বাভাবিক সংকেত পাঠিয়ে আঘাত না পাওয়া বা ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়া অংশেও সংবেদনশীল ব্যথার অনুভূতি সৃষ্টি করে। এইভাবে শিরায় ব্যথার কারণে রোগীর জীবনের গুনগত মান কমে যায়। দেখা যায় যে ৭-৮% ব্যক্তি সারাবিশ্বে শিরায় ব্যথায় আক্রান্ত হয়।

শিরায় ব্যথার প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
ব্যথাটি শরীরের যে কোন অংশে হতে পারে, যেমন পেলভিক অঞ্চলে বা শ্রোণী অঞ্চলে ব্যথা, পেশীকঙ্কালে ব্যথা ও চোয়ালের আশেপাশের অংশে ব্যথা। প্রধান উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • তীব্র ব্যথা।
  • আক্রান্ত অঞ্চলের চারপাশে কাঁটা ফোটার মতো অনুভূতি।
  • যেখানে ব্যথার কারণ ঘটে নি সেখানেও ব্যথার অনুভূতি।
  • উচ্চ সংবেদনশীলতা।


শিরায় ব্যথার প্রধাণ কারণগুলি কি কি?
এর প্রধাণ কারণগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হল অস্ত্রোপচার বা আঘাতের কারণে স্নায়ুর মধ্যে চাপ সৃষ্টি। এর সাথে, নির্দিষ্ট কিছু সংক্রমণ, বিকৃত রক্তবাহী শিরা, এবং বিপাকীয় অবস্থা এই ব্যথার জন্য দায়ী। মেরুদণ্ড বা মস্তিষ্কের ক্ষত বা রোগগ্রস্ত অবস্থাও শিরায় ব্যথার কারণ হতে পারে।

কিভাবে শিরায় ব্যথা নির্ণয় করা হয় ও এর চিকিৎসা কি?
এর প্রাথমিক নির্ণয়গুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হল চিকিৎসাগত ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষার ফলাফল লিপিবদ্ধ করা। ব্যথার চরিত্রগত বৈশিষ্ট্যগুলি নির্ণয় করা হতে পারে। চিকিৎসা নির্ভর করে ব্যথার ধরণের ওপর ভিত্তি করে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্ষত স্থানগুলির স্নায়বিক পরীক্ষা করা হতে পারে। ব্যথা নির্ধারক গণনা পদ্ধতিও ব্যবহার করা হতে পারে, অন্যান্য যন্ত্রপাতি, যেমন টুথপিক বা অন্য যন্ত্রপাতি, ব্যবহার করা হতে পারে স্নায়ুর সংবেদনশীলতা পরীক্ষা করার জন্য, ইমেজিং বা প্রতিবিম্বকরণ পদ্ধতি যেমন, এমআরআই অথবা ত্বকের বায়োপসি করা হতে পারে স্নায়ুর কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য।

শিরায় ব্যথা কার্যকরীভাবে দূরীভূত করা যায় না তবে প্রাথমিক যত্ন নেওয়া যেতে পারে। প্রাথমিক চিকিৎসার অন্তর্ভূক্ত হল ব্যথা উপশম এবং পরবর্তীকালীন জটিলতা এড়ানো। প্রাথমিক চিকিৎসার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত হল অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস ব্যবহারের পর অ্যানাস্থেটিকস এবং আফিমজাতীয় ওষুধ সেবন, যদিও এগুলি সীমিত পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। অনেক সময় রিল্যাক্স পজিশনে থাকলে কিছু সময়ের মধ্যে ব্যথা চলে যায়। মাসল পুল হওয়ার পর পেশির ওই অংশ যদি টান টান করতে গিয়ে ব্যথা পান, তাহলে সেই চেষ্টা আর করা যাবে না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। পেশির টানমুক্ত থাকতে বেশি বেশি পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

ওষুধ ছাড়া অন্যান্য যেসব চিকিৎসা পদ্ধতি আছে সেগুলি হল:

  • শারীরিক থেরাপি।
  • জ্ঞান সম্বন্ধনীয় আচরণগত থেরাপি।
  • চিত্তবিনোদন ও ধ্যান।
  • শিরায় ব্যথা অন্যান্য অন্তর্নিহিত সমস্যাগুলির জন্য ঘটিত অবস্থার কারনেও হয়।


পরামর্শ:

  • দীর্ঘক্ষণ না বসে, এক ঘণ্টা পর পর কয়েক মিনিট পায়চারি করুন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  • যদি সম্ভব হয় সপ্তাহে অন্তত তিন দিন সাঁতার কাটুন।।
  • ব্যায়াম, খেলা বা অন্যান্য কাজ ধীরগতিতে শুরু করুন।
  • নেশাজাতীয় বদঅভ্যাস দূর করুন।
  • আঘাতের স্থানে কোন ধরণের বাম বা মলম মালিশ করা থেকে বিরত থাকুন।

এসব উপায় কাজে লাগিয়েও যদি সমস্যার সমাধান না হয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে