মন থেকে অভিশাপ দিলেই তা কার্যকর হয়ে যায়। যাকে অভিশাপ দেয়া হয়েছে সে এর যোগ্য হোক বা না হোক,এটা সত্য নয়। কোন মুসলমানের এ আকীদা হতে পারে না। কেননা হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন কোন বান্দা কোন ব্যক্তিকে অভিশাপ তখন অভিশাপ আকাশে চলে যায়, আকাশের দরজাগুলো তার জন্য বন্ধ হয়ে যায়, অতপর তা জমিনের দিকে নেমে আসে, তখন জমিনের দরজাগুলোও তার থেকে বন্ধ করে দয়ো হয়, অতপর তা ডানে বাঁয়ে ঘুরতে থাকে, যখন কোন উপায় না পায়, তখন যাকে অভিসম্পাত করা হয়েছে, সে যদি এর যোগ্য হয় তাহলে তার প্রতি পতিত হয়, অন্যথায় অভিশাপকারীর দিকেই ধাবিত হয়। সুনানে আবু দাউদ-৪৯০৭ নং হাদীস।
অন্য হাদীসে এসেছে,…….ইবনে আব্বাস রা. হতে বর্ণিতঃ এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাতাসকে লানত দিল, তখন নবীজি বললেন, বাতাসকে লা’নত দিও না, কেননা এ তো আল্লাহরপক্ষ থেকে নির্দেশিত। কউে যদি কোন বস্তুকে লা’নত দেয়, আর সে যদি ঐ লা’নতের পাত্র না হয়, তাহলে সেই লানত লানতকারীর দিকেই ফিরে আসে। সুনানে তিরমিযি-১৯৭৮ নং হাদীস। সুনানে আবু দাউদ-২/২৭৬
এ সকল হাদীস থেকে বুঝা গেল মন থেকে লা’নত বা অভিশাপ দিবে সে যদি এই অভিশাপের উপযুক্ত না হয়, তাহলে এই অভিশাপ তার দিকে আসে না বরং অভিশাপকারীর দিকেই প্রত্যাবর্তিত হয়।
এ জন্য অভিশাপকারীর অভিশাপ দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া চাই। যেন অভিশাপ দেয়ার পর নিজেই পাত্র না হয়ে যায়। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকল অনিষ্ট হতে হিফাযত করুন।আমীন!
কোন মুসলমানের জন্য এমন কোন কাজ করা শোভনীয় নয়, যাতে অপর কোন মুসলমান কষ্ট পায়।অন্যের বদদোয়া থেকে বাঁচার উপায় হলো কখনো যদি নিজরে অজান্তে কাউকে কষ্ট দিয়ে ফেলে তাহলে তা বুঝার সাথে সাথে তার কাছ থেকে মাফ চেয়ে নেয়া।এটা উত্তম চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ।
তেমনিভাবে কারো কাছ থেকে কোন জুলুমের শিকার হলে তাকে ক্ষমা করে দেয়াই মহৎ চরিত্রের পরিচায়ক,রাগে হঠাৎ অভিশাপ না দেওয়া উচিৎ।
হাদীসে পাকে এসেছে-রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে, তুমি তার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করো, যে তোমাকে বঞ্চিত করে, তুমি তাকে তুষ্ট করো, যে তোমার প্রতি জুলুম করে, তুমি তার সাথে উত্তম ব্যবহার (ক্ষমা) করো। মুসনাদে আহমদ- ১৭৩৩৪ নং হাদীস।
এছাড়া নবীজি ও সাহাবা কেরাম রা.-এর চরিত্রের মাঝে ক্ষমার গুণ অনেক বেশি পরিলক্ষিত হয়। তাই এই মহৎ গুনে নিজেদের সুসজ্জিত করা উচিত।
কাউকে অভিশাপ দেয়া মুমিনের জন্য শোভা পায় না।
অন্য হদীসে এসেছে,রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুমিন কখনো অভিসম্পাদকারী হয় না। সুনানে তিরমিযি-২০৮৮ নং হাদীস।