আমি ক্লাস এইস.এস.সি দ্বিতীয় বর্ষ থাকাকালিন এক মেয়ে ট্রান্সফার হয়ে আমাদের কলেজে ভর্তি হয় আমাদের ক্লাসে।
সে তেমন কারো সাথে নিজে থেকে মেশে না বা বেশি কথা বলে না কিন্তু কিছু একটা কারনে আমাদের কথা হয়। এবং তার সাথে আমার ফেসবুকে কথা শুরু হয়। সে আগে যে কলেজে পড়ত সেখানে অনেক কড়া নিয়ম ছিল আর দূরও ছিল বলে সে আমাদের কলেজে ভর্তি হয়। প্রথম দিকে তার সাথে তেমন কথা বলতাম না। তারপর আসতে আসতে তার সাথে কথা বলা বেশি হয়। কলেজে তেমন আসত না । যে কোন দরকারে বা যে কোন গুরুত্বপুর্ণ তথ্য আমি তাকে দিতাম। এভাবে যাচ্ছিল, কলেজের সবাই আমাকে ওকে নিয়ে ক্ষেপাত । এক সাথে কলেজে ঢুকতে চাইতাম না কিন্তু তার এতে কোন সমস্যাই ছিল না বলত যে, কে কি বলে বলুক আমার সমস্যা নাই। আর এভাবেই আমিও তেমন গুরুত্ব দিতাম না। তার সাথে দুই একবার বাইরের গেছিলাম। তার বাসায় একদিন ডেকেছিল সে জানতো যে আমি গোল্ডিফ সুইটস্ খাই তাই আসার সময় নিয়ে আসতে অত কিছু না ভেবে নিয়ে গেছিলাম। তার পার তাদের ভেলকনিতে বসে তার প্রথম সিগারেট খাওয়া দেখলাম। সে বেশি খায়নি। আমি কিছুটা নরম প্রকৃতির। বেশি হট্টোগল পছন্দ করি না। কিন্তু সে তেমন না যেখানে আমি চুপ যাই সেখানে ও তার অধিকার যেন না নিয়ে ছাড়বে না, আর বেশ মেচেউর্ড টাইপের কথা বলত। অবশ্য আমি অমন না। যাই হোক, এভাবেই তাক ভালো লেগে যায়। কিছু না বলতে চাইলে বলত, তুমি আমাকে বলবা না (আমার নাম)। একদিন হাতে হাত দিয়েও বলেছিল বলবা না আমাকে ? না বললে আর কোন দিন কথা বলব না। তখন আমি তা বলে দেই। তারপর আসলো টেস্ট পরিক্ষা সিট তার পাশে না বসলেও আমি তার পশে সিট করে বসি । সে আমার দেখে দেখে লিখত যদিও স্টুডেন্ট অনেক ভালো কিন্তু পড়ে না, ওকে দেখাতে যেয়ে আমি লিখার সময় পেতাম না । সে মুহুর্তে সে আমার সাথে কথা বলা বেশি করে দিল। কখনও কখনও তো সে ভিডিও কলও করত। যাইহোক পরিক্ষার রেজাল্ট আসলো আমি ফেল কিন্তু সে ক্লাসের সব থেকে ভালো রেজাল্ট করেছে। তাও খুশি ছিলাম যে সে পাশ করেছে। তারপর আসলো প্রাক্টিক্যাল খাতা রেডি করার ভেজাল। আমি কোন রকম আমার এক ফ্রেন্ড কে দিয়ে আমার সব খাতা সারিয়ে নেই। কিন্তু সে কিছুই করে নি। একদিন কথায় কথায় আমি তাকে বলি যে, খাতা গুলো আমায় দাও আমি করে দিব এবং সে দিয়েও দিল ভেবেছিলাম দিবে না। পরে বলি যে আমার লেখা ভালো না তারপরেও তা আমাকেই করে দিতে হলো। আমারই খাতা আমি করলাম না কিন্তু তার খাতা আমাকে করে দিতে হলো।
ফাইনাল পরিক্ষা শুরু হওয়ার আগে বার বার বলত তার সিট যেন আমার পাশে হয় এবং আমি যেন তাকে দেখাই। আমিও বলতাম সমস্যা নাই আমি তোমাকে হেল্প করবো। পরিক্ষার রেজাল্ট দিল আমি তার থেকে ভালো রেজাল্ট করি । সে বলে যে , তুমি কেমনে এ রেজাল্ট করলা ? পরিক্ষার সময় একটুও আমার দিকে তাকাও নি আরও কতকিছু। শতকিছুই হোক আমি তার ভালো চেয়েছি, চেষ্টাও করেছি। অনার্সে ভর্তি নিয়ে কখন কোথায় কি করতে হবে সবকিছুতে হেল্প করেছি। এক ভার্সিটিতে ভর্তিও হয়েছি। তারপর এক দিন কথায় কথায় তাকে আমি আমার ভালো লাগার কথা বলি । কিন্তু সে না করে দেয়। আর বলে এমন কথা বললে আনফ্রেন্ড করে দিবে ইত্যাদি। কল দিলে সহজে ফোন ধরে না। তার পর একদিন বলি আচ্ছা ঠিক আছে আর বলব না। তার পর সে একদিন বলে সে আর সে ভার্সিটিতে পড়বে না সে কোন এক প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়বে। আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে আমিও সেখানে পড়ব। সে বলল ঠিক আছে। আমার ফ্যামিলিতে কিছু সমস্যা আছে যেমন, আমরা মধ্যবিত্ত আর আমার বাবা ৩টা বিয়ে করেছে। আর আমার নিজ মায়ের আমরা ৩ ভাই বোন। আর অন্যদিকে সে ভালো পরিবারের মেয়ে টাকা পয়সাও আছে । ভাবি যে তার সাথে আমার যায় না। আর তাকে নিয়ে টেনশন করতেও আর ভালো লাগে না যেমন, কলেজে আজ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজ জমা দিতে হবে। তাকে বলতে হবে কি ভাবে কি করবে হেল্প করতে হবে ইত্যাদি । যদিও সে নিজ মুখে বলে না, কিন্তু আমি তো স্থির থাকতে পারি না।
তাই একদিন তাকে বলি যে একটা বয়ফ্রেন্ড বানায়তে । যাতে সে তার কেয়ার নিতে পারে। আমিও পেরা মুক্ত হতাম। তার গত ২ মাস থেকে তার সাথে তেমন কথা হয় না। এখনও তেমন। কয়দিন আগে মেসেজ দিয়ে বলে যে, সে বয়ফ্রেন্ড পেয়েছে। প্রথম প্রথম ভালোই লাগলো কিন্তু খুব খারাপ্ও লাগছিল ব্যাপারটা ।
এখন সে ফেসবুকে যেই পোস্টই দিক খুব খারাপ লাগে। মাঝে মাঝে তার সাথে কাটানো সময় গুলো মনে পরে।
এখন আমি কি করবো বুঝতেছিনা । তার সাথে এখনও কথা বলব ? নাকি তাকে ভুলে যাবো ?
দুঃখিত আমি খুব ভালো ভাবে গুছিয়ে হয়ত বলতে পারি নি।