ঘুর্ণিঝড় গুলোর নামকরন হয় কিভাবে??


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

বর্তমানে সব ঝড়েরই নাম দেয়া হয়। সব দেশই নাম দেয়। তারপর পর্যায়ক্রমে ঝড়গুলোর নাম হয়ে থাকে। সেই সূত্র ধরে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়া দপ্তর ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেলের তালিকা অনুযায়ী এ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়া হয়েছে ‘রোয়ানু’। ঘূর্ণিঝড়ের নাম হয় সহজ, যাতে বিজ্ঞানী থেকে সাধারণ মানুষ- সবাই তা সহজে মনে রাখতে পারে। 

NayaDiganta

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Yakub Ali

Call

imageসাধারণত অবস্থান এবং ঋতুর বৈচিত্র্য ও বৈশিষ্ট্যের কারণে কতগুলো এলাকায় মাঝে মধ্যে ঘূর্ণিঝড় হয়ে থাকে। আর তার মধ্যে শ্রীলংকা অন্যতম। সেহেতু প্রথম যে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়েছিল, সেটা ছিল প্রায় তিনশ’ বছর আগে শ্রীলংকার মহাপরাক্রমশালী রাজা মহাসেনের নামে। আর এ ব্যাপারে নাম প্রবর্তনকারী জাতিসংঘের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের আবহাওয়াবিদ সংস্থা ‘এস্কেপ’। বেশির ভাগ ঘূর্ণিঝড়ের নাম নারীদেরকে ঘিরে, যেমন- নার্গিস, বিজলী, রেশমী, ক্যাটরিনা, এরপরে ঝড়ের নাম হিসেবে পুরুষের নাম সংযোজিত হতে থাকে। বর্তমানে অবশ্য বস্তু বা অন্য বিষয়ের নাম অবস্থাভেদে টেনে আনা হয়েছে, যেমন-সিডর, মেঘ, বায়ু, সাগর ইত্যাদি। আর যেহেতু ঘূর্ণিঝড়ে ধ্বংস ও মৃত্যুর হাতছানি থাকে। সেহেতু একবার একটি নামে নামকরণ করা হলে, দ্বিতীয়বার তা ব্যবহূত হয় না। অবশ্য অতীতেও ঘূর্ণিঝড়কে ঘিরে নামকরণ করা হতো। সেটা ছিল ঝড়ের উত্পন্ন অবস্থানকে নিয়ে। তা আবার অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ ভিত্তিক। এ প্রেক্ষাপটে যদি বলি ৪ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮০ ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশের ঝড়টি এখন চট্টগ্রাম থেকে এক হাজার মাইল দূরে অবস্থান করছে, তাহলে সব সময়ে মনে রাখা সম্ভব নয়। কিন্তু যদি বলি ‘সিডর’ চট্টগ্রাম থেকে এক হাজার মাইল দূরে অবস্থান করছে, তাহলে শিক্ষিত ও অশিক্ষিত সবাই অনায়াসে বুঝতে পারবেন। এই নামকরণের কাজ করেন বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার আঞ্চলিক কমিটি। তাই উত্তর ভারতীয় ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে নামকরণের দায়িত্ব পড়েছে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের। সাধারণত ঘূর্ণিঝড়ের আগেই নামকরণের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। ইতোমধ্যে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের নাম নির্ধারণ করা হয়েছে—এর মধ্যে মহাসেন আঘাত হেনেছে, তত্পর আসবে ফাইলিন। এরপর নির্বাচিত নাম- হেলেন, লহর, মাদী, নানাউক, হুদহুদ, নিলুফার, প্রিয়া, কোমেন, চপলা, মেঘ, ভালি, কায়নতদ, নাদা, ভরদাহ, সামা, মোরা, অক্ষি, সাগর, বাজু, দায়ে, লুবান, তিতলি, দাস, ফেথাই, ফণী, বায়ু, হিকা, কায়ের, মহা, বুলবুল, সোবা ও আমপান।


স্মরণকাল থেকেই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনে চলেছে, যা কমবেশি জানা যায় পুঁথি ও পুরাতন গ্রন্থে। অনেক ধর্মগ্রন্থে এর আলামত উল্লেখ আছে। যাহোক, ইদানিং অর্থাত্ ২০০৭ সালে বাংলাদেশে যে ঝড়টি আঘাত হানে, তার নাম ছিল সিডর অর্থাত্ চোখ। আর এই নামটি দিয়েছিল শ্রীলংকা। এদিকে ২০০৮ সালে নার্গিস নামে যে ঘূর্ণিঝড়টি মিয়ানমার উপকূলে আঘাত হানে, সে নামটি দিয়েছে ভারত। এই নামের ব্যাপারে যতদূর জানা যায়, এটি নাকি নামকরণ করা হয়েছে বিখ্যাত প্রয়াত ভারতীয় নায়িকা নার্গিসকে উপলক্ষ করে। এদিকে তিন বছর আগে অর্থাত্ ২০০৯ সালে ভয়ঙ্কর যে ঘূর্ণিঝড়টি প্রলয়তাণ্ডব ঘটায়, সেটা হলো আইলা (এর অর্থ হলো ডলফিন বা শুশুক)। আর আইলা নামকরণের কাজটি করেছেন, মালদ্বীপের আবহাওয়াবিদরা।


এস্কেপ কর্তৃক নামকরণের উদ্যোগটি প্রশংসনীয়। কেননা সময় ও অবস্থান ধরে ঘূর্ণিঝড়ের কথা মনে রাখা সুকঠিন। কারণ যদি নামকরণ না করা হয়, তাহলে এক প্রজন্মের পরেই বিস্মৃতির কোঠায় চলে যাবে। যদিও বলেন, বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির যুগে সময় ও অবস্থান ধরে সংরক্ষণ করলে, তা পরবর্তীতে প্রয়োজনে খুঁজে পাওয়া যাবে। তথাপিও নানা জটিলতা হেতু সঙ্গতকারণেই তা মনে রাখা সম্ভব নয়। কিন্তু বর্ণিত আকর্ষণীয় নামে নামকরণ থাকলে মনে রাখার সুবিধা হয়। 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ