৫ম এবং ষষ্ঠ শতাব্দিতে দ্রিবিড়িয়ানদের একটি জাতির নাম ছিল ‘বং’ যারা এসেছিল দক্ষিন-এশিয়ার দক্ষিন এবং পশ্চিম থেকে। (১২০৩ খ্রীস্টাব্দ) তারপর আসে আরিয়ান জাতি এই যুগে নাম হয় ‘বংগ’ এটা ছিল বর্তমান বাংলাদেশের পূর্ব এবং দক্ষিন অংশ। (১২০৩-১৭৫৭ খ্রীস্টাব্দ) মুসলিম যুগে এর নাম হয় ইকলিম-ই-বাংগালাহ, সুলতান-ই-বাংগালাহ,শাহ-ই-বাঙ্গালিয়ান। মোগল শাসনামলে এর নাম হয় সুবাহ-ই-বাংগালাহ । মুসলিম যুগের পর (১৯৭১ সাল পর্যন্ত) পর্তুগিজদের সময় নাম হয় বেংগালা । ইংরেজরা ১৯০৫ সালে ‘বেংগল’ নামকরন করে। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্ব এর ভিত্তিতে বর্তমান বাংলাদেশের নাম হয় পূর্ব পাকিস্তান। ৫ ডিসেম্বর ১৯৬৯ সালে বাংলাদেশ নামকরন করা হয়। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ সালে বিজয় দিবসে সাংবিধানিক ভাবে আমাদের দেশের নাম হয় বাংলাদেশ। এছাড়া... ১। বাংলা শব্দটি এসেছে দ্রাবিড়দের বং/বঙ্গা উপজাতি হতে ।(1000 BCE) ২। অস্ট্রিকদের ভঙ্গা/বঙ্গা শব্দ থেকে । যার অর্থ "Sun-God" । ৩। বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলিতে ১৬ টি জনপদের নাম পাওয়া যায় ।যার মধ্য একটির নাম ছিল বঙ্গ । ৪। আরণ্যক ব্রাহ্মনে বঙ্গ নামের জনপদের উল্লেখ পাওয়া যায় । ৩। মহাভারত থেকে জানা যায় যে,বালি রাজের স্ত্রী সুদেষ্ণা দীর্ঘতমা ঋষি হতে অঙ্গ,বঙ্গ, কলিঙ্গ, সুক্ষ ও পুণ্ড্র নামে পাঁচ পুত্রের জন্ম দেন । এরা সকলেই নিজের নামানুসারে নামীয় প্রদেশের রাজা হন । বঙ্গের নামানুসারে এর শাসিত রাজ্য বঙ্গ নামে অভিহিত হয় । ৪। মুসলমানদের বিশ্বাস অনুসারে, নবী নূহ আ:-এর ছয় পুত্র ছিলো । তারা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে উপনিবেশ গড়ে তোলেন। এর মধ্যে একজন ছিলেন হিন্দ্। এই হিন্দের নামানুসারে হিন্দুস্তানের নাম। হিন্দ্-এর চার পুত্র ছিলো । তাদের একজনের নাম ছিলো “বাং” । বাং-এর সাথে আল (বাঁধ)শব্দ যুক্ত হয় । যা জল প্লাবনের হাত থেকে জনপদ ও শস্যক্ষেত রক্ষা করতো ।এই বাং+আল থেকেই পরবর্তীতে বাংলা শব্দটির উৎপত্তি ঘটে । ৫। মধ্যযুগে সুলতান সামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ বঙ্গ শব্দের সাথে সংস্কৃত লাহ্ প্রত্যয় যুক্ত করে, বাংলা শব্দটির সুচনা করেন ।তিনি বেশ কিছু অঞ্চল কে একত্রিত করে ‘শাহ-ই-বাঙ্গালা’ উপাধি ধারণ করে। ৬। সম্রাট আকবরের ইতিহাস লেখক আবুল ফজলের লেখায় এ প্রদেশ ‘বাঙ্গালা’ নামে অভিহিত করা হয়েছে । ৭। ইংরেজ আমলে বাংলা ভাষাভাষি প্রদেশটি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের একটি প্রদেশ ছিলো । যা ইংরেজিতে‘Bengal’ নামে অভিহিত হত ।তখন থেকেই এই প্রদেশটি বাংলা নামে অভিহিত হয় । ৮। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্্যের কবিতায় পুর্নাঙ্গ ‘বাংলাদেশ’ শব্দটি দেখা যায় । ৯। ১৯০৫ সালের পর থেকেই এ অঞ্চলটি পুর্ব বাংলা সমাধিক পরিচিতি লাভ করে। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর দুঃখজনকভাবে বাংলাদেশ কিছু সময়ের জন্য পুর্ব পাকিস্থান নামে পরিচিত হয়। ১০। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর আনুষ্ঠানিকভাবে এ অঞ্চলটি যে নামটি ধারন করে তা আমাদের আজকের প্রিয় ‘বাংলাদেশ’ ।