শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

শিশির, কুয়াশা, তুষার:
বায়ুমণ্ডলের উপরে সৃষ্টি হওয়া মেঘ আমাদের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে হলেও আমাদের হাতের কাছেই আছে মেঘের ছোট ভাই! কুয়াশা। বৃষ্টি, তুষার, কুয়াশা, শিশির এদেরকে আমরা আলাদা হিসেবে চিনলেও এরা আসলে একই জিনিস। এদের যেকোনো একটার ব্যাপারে জেনে গেলে সবগুলো সম্পর্কে জানা হয়ে যায়। আবহবিদগণ এই জিনিসটাকে বলেন Precipitation বাংলায় এর পরিভাষা হতে পারে বারিপাত। এই প্রেসিপিটেশনের কয়েকটা প্রকারভেদের মাঝে একটা হচ্ছে বৃষ্টি। আরেকটা কুয়াশা। শীতের সময়ে ভূমি তাপ বিকিরণ করে খুব দ্রুত ঠাণ্ডা হয়ে যায়। ভূমির কাছাকাছি যে বাতাস থাকে সেগুলোও ভূমির সাথে সাথে ঠাণ্ডা হয়। ঠাণ্ডা হলেই ঘনীভূত হবার প্রবণতা দেখা যায়। আর নিচের বায়ুস্তরে বীজ হিসেবে আঁকড়ে ধরার জন্য ধূলির তো আর কোনো অভাব নেই। ফলে সহজেই কুয়াশার সৃষ্টি হতে পারে। পরে যখন সূর্য ওঠে তখন বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয় এবং আস্তে আস্তে কুয়াশা বিলীন হয়ে যায়।
বৃষ্টির পর বায়ুতে ভাসমান ধূলিবালি ধুয়ে নিচে চলে যায়। আর ধুলাবালি না থাকলে বাষ্পকণা একত্রে মিলে ঘনীভূত হতে পারে না। সেজন্য যে রাতে বৃষ্টি হয় সে সকালে কুয়াশা হতে দেখা যায় না।

এই কুয়াশাগুলোই যখন একটু একটু করে নিচে পড়ে তখন সেটি শিশির নাম ধারণ করে থাকে। বায়ুমণ্ডল অধিক পরিমাণ ঠাণ্ডা হয়ে গেলে তার জলীয় বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতা কমে যায়।[৪] তাই সে ধারণ করা কুয়াশা অধিক পরিমাণ ঘনীভূত হয়ে শিশির রূপে নিচে পড়ে যায়। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন দূর্বা ঘাসের ডগায় কয়েকটি শিশির লেগে আছে আর সূর্যের আলো সেখানে প্রতিসরিত হয়ে মুক্তোর মত আভা ছড়াচ্ছে এমন একটা দৃশ্যের মত সুন্দর দৃশ্য মনে হয় পৃথিবীতে কমই হয়।
শীতের দেশে বছরের বেশিরভাগ সময়ের জন্যই আবহাওয়া শীতল থাকে। অধিক শীতলতার জন্য বৃষ্টি তরল হতে পারে না। সেটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বরফের কণা আঁকারে পড়ে। এটা তুষার বা স্নো। বৈশাখের মাসে যেমন শিমুল গাছ হতে তুলো ফেটে ফিয়ে উড়ে উড়ে বেড়ায় তেমনি পেঁজা তুলোর মত তুষার বয়ে বেড়ায় শীতের দেশগুলোতে। তুষারপাতের সময় যে একটা শুভ্র সাদা দৃশ্যের সৃষ্টি হয় তা আসলেই দেখার মত।
মেঘের কোল হতে তুষার তার যাত্রা শুরু করে মাঝ পথে যদি বাতাসের সংস্পর্শে গলে যাবার পর আবার নিচের ঠাণ্ডা বাতাসের সংস্পর্শে এসে বরফে পরিণত হয় তাহলে ভিন্ন ধরণের এক তুষারপাত হয়। এরা দানাদার ও ছোট ছোট আঁকারের হয়। এই ভিন্ন ধরণের বর্ষণকে বলে স্লিট।
তুষার কণাকে যদি মাইক্রোস্কোপের নিচে ধরা হয় তাহলে তাদের অত্যন্ত সুন্দর গঠন লক্ষ্য করা যায়। প্রত্যেকটা মৌলিক তুষারই ছয়টা দিকে প্রসারিত। প্রত্যেকটার মৌলিক গঠন ষড়ভুজের মত হলেও একটা তুষারের সাথে আরেকটা তুষারের কোনো মিল নেই।
#Xenon

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ