গ্রাম পজিটিভ ও গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ার পার্থক্যঃ
১। গ্ৰাম পজিটিভে অ্যালকোহল দ্বারা ক্রিস্টাল ভায়োলেট আয়োডিন এর বর্ণ বিধৌত হয় না বলে ব্যাকটেরিয়া প্রতিরঞ্জকের বর্ণ ধারণ করে না অর্থাৎ, বেগুনী বর্ণ ধারণ করে। গ্ৰাম নেগেটিভে অ্যালকোহলে ক্রিস্টাল ভায়োলেটের রং ধুয়ে যাওয়ায় প্রতিরঞ্জকের লাল বর্ণ ধারণ করে।
২। গ্ৰাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়ার কোশ প্রাচীর অধিক পুরু হয় (25-80 nm পুরু)। গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ার কোশ প্রাচীর পাতলা হয় (10-15 nm পুরু)।
৩। গ্ৰাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়ায় পেপটাইডোগ্লাইকানের পরিমাণ বেশি থাকে, কোশের শুষ্ক ওজনের 20-30% । গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ায় পেপটাইডোগ্লাইকানের পরিমাণ কম থাকে, কোশের শুষ্ক ওজনের 10-20%।
৪। গ্রাম পজিটিভে টিকোয়িক অ্যাসিড উপস্থিত। গ্রাম নেগেটিভে টিকোয়িক অ্যাসিড অনুপস্থিত।
৫। গ্রাম পজিটিভে টিকোরনিক অ্যাসিড উপস্থিত। গ্রাম নেগেটিভে টিকোরনিক অ্যাসিড অনুপস্থিত।
৬। গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়ায় লিপিডের পরিমাণ অত্যন্ত কম (0-2%)। গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ায় লিপিডের পরিমাণ বেশি (10-20%)।
৭। গ্রাম পজিটিভে কোশপর্দা এক স্তর বিশিষ্ট, কোষপ্রাচীরের ভিতরের দিকে থাকে। গ্রাম নেগেটিভে কোশপর্দা ছাড়াও কোষপ্রাচীরের বাইরের দিকে একটি অতিরিক্ত বহিঃপর্দা থাকে।
৮। গ্রাম পজিটিভে পেরিপ্লাজমিক স্থান অনুপস্থিত। গ্রাম নেগেটিভে বহিঃ ও অন্তঃপর্দার মধ্যবর্তী স্থানকে পেরিপ্লাজমিক স্থান বলে। পেরিপ্লাজমিক স্থান উপস্থিত।
৯। গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়ার অধিবিষ (Toxin) বহিঃকোশীয় (Exotoxin) প্রকৃতির হয়। গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ার অধিবিষ (Toxin) অন্তঃকোশীয় (Endotoxin) প্রকৃতির হয়।
১০। গ্রাম পজিটিভে শুষ্কতার প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। গ্রাম নেগেটিভে শুষ্কতার প্রতিরোধ ক্ষমতা কম।
১১। গ্রাম পজিটিভ অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি সংবেদনশীল। যেমন, পেনিসিলিন এর প্রতি সংবেদনশীল, কারণ পেনিসিলিন পেপটাইডোগ্লাইকান স্তরকে বিনষ্ট করে। গ্রাম নেগেটিভ অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি কম সংবেদনশীল। যেমন, পেনিসিলিন এর প্রতি কম সংবেদনশীল।
১২। গ্রাম পজিটিভে ফ্ল্যাজেলার বেসাল দানায় ভিতরের চাকতি জোড়া (M ও S) উপস্থিত। গ্রাম নেগেটিভে ফ্ল্যাজেলার বেসাল দানায় বাইরে ও ভিতরে (P, L এবং M, S) দুজোড়া চাকতি থাকে।
১৩। গ্রাম পজিটিভে পিলি অনুপস্থিত। গ্রাম নেগেটিভে পিলি উপস্থিত।
১৪। গ্রাম পজিটিভে মেসোজোম উপস্থিত। গ্রাম নেগেটিভে মেসোজোম অনুপস্থিত।
১৫। গ্রাম পজিটিভে অধিকাংশ প্রজাতিই অন্তঃরেণু (endospore) গঠন করে। গ্রাম নেগেটিভ অন্তঃরেণু গঠন করে না।
১৬। গ্রাম পজিটিভে অনেক প্রজাতি কোরকোদগম (Budding) পদ্ধতির মাধ্যমে প্রজনন করে। গ্রাম নেগেটিভে কোরকোদগম দেখা যায় না।