শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
image

মূলত যৌন সংসর্গের মাধ্যমে যে সমস্ত রোগ ছড়ায় তাদেরকেই একত্রে যৌনরোগ বা sexually transmitted diseases বা সংক্ষেপে STD বলা হয়। এখানে যৌন সংসর্গ বলতে সমস্ত রকম যৌন সম্পর্ক যেমন- যোনি, পায়ু, বা মৌখিক সহবাসের (vaginal, anal or oral sex) কথা বলা হয়েছে। যৌন রোগকে ইংরিজিতে অনেক সময় ভেনারেবল রোগও (venerable disease) বলা হয়। তবে যেহেতু অনেক ক্ষেত্রেই কোন ব্যক্তি যৌন রোগের দ্বারা সংক্রমিত হলেও রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়না, তাই আধুনিক ডাক্তারি পরিভাষায় যৌনরোগসমূহকে sexually transmitted infections বলা হয়। 

এই রোগসমূহ ব্যাকটেরিয়া, প্যারাসাইট এবং ভাইরাসঘটিত হতে পারে। প্রায় ২০ টির থেকেও বেশি প্রকারের যৌনরোগ এপর্যন্ত দেখা গেছে। এর মধ্যে ব্যাকটেরিয়া ও প্যারাসাইট ঘটিত রোগগুলির ঔষধের মাধ্যমে নিরাময় সম্ভব, কিন্তু ভাইরাসঘটিত যৌন রোগের পূর্ণ নিরাময় সম্ভব নয়। যৌনরোগ পুরুষ ও নারী উভয়েরই হতে পারে, তবে দেখা যায় যে মেয়েদের ক্ষেত্রে এই সমস্ত রোগের প্রকোপ, প্রাদুর্ভাব এবং স্বাস্থের সমস্যা বেশি হয়। গর্ভবতী মহিলার STD থাকলে তা গর্ভস্থ সন্তানের মধ্যেও ছড়াতে পারে। যৌনসংসর্গের সময় সঠিক কন্ডোম ব্যবহার করে যৌনরোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা কমানো যেতে পারে, কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। যৌনরোগ থেকে বাঁচার একমাত্র নিশ্চিত উপায় হল সংযম ও অবাঞ্ছিত যৌনসংসর্গ থেকে বিরত থাকা। এছাড়াও কারও সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপনের পূর্বে, তা সে যতই আপনার পরিচিত ব্যক্তি হোক না কেন, তার এবং আপনার নিজের ডাক্তারি পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া উচিৎ যে আপনাদের কারও যৌনরোগ নেই। আর ডাক্তারের কাছে গিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করতে লজ্জা বোধ করবেন না। 

এবারে আমরা কয়েকটি মূখ্য যৌনরোগের নাম ও তাদের সম্মন্ধে সংক্ষেপে আলোচনা করব।

১) ব্যাকটেরিয়াঘটিত

যৌনরোগসমূহঃ

ক. শ্যাংক্রোয়েড (Chanchroid)

খ. ক্ল্যামিডিয়া (Chlamydia)

গ. গনোরিয়া (Gonorrhoea)

ঘ. সিফিলিস (Syphilis)

ঙ. Granuloma Inguinale

২) ছত্রাকজনিতঃ ঈষ্ট সংক্রমণ

৩) ভাইরাস ঘটিতঃ

ক. হেপাটাইটিস বি (Hepatitis B)

খ. হার্পস সিমপ্লেক্স (Herpes Simplex)

গ. এইচ. আই. ভি. (HIV)

ঘ. এইচ. পি. ভি. (HPV)

ঙ. এম. সি. ভি. (MCV)

৪) প্যারাসাইট বা পরজিবীঃ

ক. স্ক্যাবিস বা মামড়ি (Scabies)

খ. চর্ম উকূন (Lice)

৫) প্রোটোজোয়া বা

আদ্যপ্রাণীঘটিঃ

ট্রিকোমেনিয়াসিস (Trichomoniasis)

ক্ল্যামিডিয়াঃ এটা একটি ব্যাকটেরিয়াঘটিত যৌনরোগ। মেয়েদের ক্ষেত্রে এই রোগের বা সংক্রমনের লক্ষণ হল যোনি থেকে অস্বাভাবিক স্রাব, প্রস্রাব করার সময় যন্ত্রণা, পিরিওডের মাঝে রক্তক্ষরণ। তবে বেশিরভাগ মেয়েদের ক্ষেত্রেই এই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ফলে কোন লক্ষণ বা সিম্পটম প্রকাশ পায়না। পুরুষদের ক্ষেত্রে এই ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমণের লক্ষণ হল লিঙ্গ থেকে অস্বাভাবিক স্রাব এবং প্রস্রাবের সময় যন্ত্রণা। সময়ে চিকিৎসা না হলে এর থেকে পরবর্তীতে মূত্রনালীর সংক্রমণ এবং শ্রোণী প্রদাহজনক রোগ হতে পারে, যার ফলে গর্ভধারণে প্রভূত সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তবে আশার কথা এই যে ঔষধের মাধ্যমে এই সংক্রমণের নিরাময় সম্ভব।

হার্পসঃ হার্পস সিমপ্লেক্স নামের ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে এই রোগ হয়। প্রধাণত দুধরনের হার্পস ভাইরাস সব থেকে বেশি দেখা যায়। এদের মধ্যে এইচ.এস.ভি.-১ ভাইরাস সংক্রমণের ফলে মুখে ও ঠোটের আশেপাশে এক ধরনের গুটি হয় যা জ্বরগোটা নামে পরিচিত। এই ভাইরাস সাধারণত মুখের মাধ্যমে ছড়ায়। অপরপক্ষে এইচ.এস.ভি.-২ ভাইরাস সাধারণত যৌন সংসর্গের ফলে ছড়ায় এবং যৌনাঙ্গ ও তার আশেপাশের অঞ্চলকেই প্রভাবিত করে। অনেকের ক্ষেত্রেই এইচ.এস.ভি.-২ সংক্রমণের কোন লক্ষণ প্রকাশ পায়না। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাধারণত সংক্রমণের ২ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই রোগের লক্ষণ দেখা যায়। রোগের লক্ষণ হল যৌনাঙ্গ বা তার আশেপাশে তরল ভরা ফোঁসকা, চুলকানি বা শুরশুরির মত অনুভূতি, মাথাব্যাথা, পিঠব্যাথা, প্রস্রাবের সময় যন্ত্রণা, ইনফ্লুয়েঞ্জার মত লক্ষণ, জ্বর ইত্যাদি। সংক্রমিত ব্যাক্তির সাথে অপর কোন ব্যক্তির ত্বকের সংস্পর্শের ফলেই এই ভাইরাস ছড়ায় যা চুম্বন, যোনি, পায়ু বা মুখের মাধ্যমে যৌনক্রীড়ার ফলে হতে পারে। কোন ব্যক্তির মধ্যে যখন এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় তখন তার থেকে ভাইরাস অপর ব্যক্তির মধ্যে ছড়ানোর সম্ভাবনা সব থেকে বেশি থাকে। তবে এটাও উল্লেখ করা প্রয়োজন যে রোগের লক্ষণ প্রকাশ না পেলেও এক ব্যক্তি থেকে অপরের মধ্যে এই ভাইরাস যৌন সংসর্গ বা চুম্বনের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। প্রথমবার এই ভাইরাসের আক্রমণের ফলে রোগের প্রকোপ সব থেকে বেশি হয়। পরবর্তী আক্রমণের সময় সাধারণত প্রকোপ ততটা বেশি হয়না; এমনকি রোগের লক্ষণ প্রকাশ নাও পেতে পারে। তবে বলে রাখা ভাল যে এই ভাইরস একবার শরীরে প্রবেশ করলে কোনদিনও তা পুরোপুরি শরীর থেকে বাইরে বের করা সম্ভব নয়। হার্পস ভাইরাস শরীরের মধ্যে থেকেই যায় এবং সময়-সময়ে তা রোগের লক্ষণ প্রকাশ করতে পারে। তবে কিছু ভাইরাসরোধী ঔষধ প্রয়োগ করে এই ভাইরাসের প্রকোপ কম রাখা সম্ভব।

এইচ. পি. ভি (HPV) বা হিউম্যান

প্যাপিলোমাভাইরাস – যৌনরোগসমূহের মাঝে এর প্রাদুর্ভাব সব থেকে বেশি। এই রোগ সৃষ্টকারী ভাইরাসের প্রায় চল্লিশটিরও বেশি প্রকারভেদ দেখা যায় এবং এদের অনেকেরই সংক্রমণের ফলে কোনরকম স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা হয়না। শতকরা নব্বই শতাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে সংক্রমণের বছর দুইয়ের মধ্যে মানুষের শরীরের নিজস্ব রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার প্রভাবে সংক্রমণ পুরোপুরি সেরেও যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে শরীরের নিজস্ব প্রতিরোধক্ষমতা এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয় না এবং যৌনাঙ্গের আশেপাশে ভাইরাসের প্রভাবে আঁচিল বা জড়ুল সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়াও অনেক ক্ষেত্রেই সারভিকাল ক্যান্সার সহ অন্যান্য কয়েক ধরনের ক্যান্সার (যেমন- গলা, যোনি, ভালভা, পেনিসের ক্যান্সার) এইচ.পি.ভি. ভাইরাসের কারণে হতে পারে। এই ভাইরাস সংক্রমণের সবথেকে বড় সমস্যা হল এই যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগ গুরুতর পর্যায়ে পৌছানোর আগে পর্যন্ত কোন রকম লক্ষণ প্রকাশ পায়না। এজন্যই মেয়েদের নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ মেনে প্যাপ স্মিয়ার টেস্ট করিয়ে সারভিক্যাল ক্যান্সার হয়েছে কিনা সেটা নিশ্চিত হওয়া উচিৎ। বলাই বাহুল্য, সময়ে চিকিৎসা হলে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সাধারণত যৌনমিলন এবং ওরাল বা মুখের মাধ্যমে সঙ্গমের ফলে এই ভাইরাস এক ব্যক্তি থেকে অপর ব্যক্তিতে ছড়ায়। মনে রাখবেন যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেতে অনেক দেরী হয়ে যায়। তাই কোন প্রকাশ্য উপসর্গ নেই বলে আপনি বা আপনার যৌনসঙ্গী এইচ.পি.ভি দ্বারা সংক্রমিত নয় এটা ধরে নেওয়া একটা মস্ত বড় ভুল হতে পারে।

গনোরিয়া – এটা ব্যাকটেরিয়াঘটিত একটি যৌনরোগ। এই রোগ সৃষ্টকারী ব্যাকটেরিয়া সাধারণত মূত্রনালী, যোনি, পায়ু, মুখ ও চোখের আর্দ্র মিউকাস পর্দায় বসবাস করে। সংক্রমিত ব্যক্তির সাথে লিঙ্গ, যোনি, পায়ু বা মুখের মাধ্যমে সংস্পর্শের ফলে এই ব্যাকটেরিয়া অপর ব্যক্তিতে ছড়ায়। সাধারণতসংক্রমণের ২ থেকে ৫ দিনের মধ্যেই এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে একমাস পর্যন্ত তারও বেশি সময় পর্যন্ত কোন লক্ষণ প্রকাশ নাও পেতে পারে। বিশেষত মেয়েদের অনেকেরই এই সংক্রমণের কোন লক্ষণই প্রকাশ পায়না। পুরুষদের ক্ষেত্রে যে সমস্ত লক্ষণ প্রকাশ পায় সেগুলি হল মূত্রত্যাগের সময় যন্ত্রণা, লিঙ্গ থেকে হলুদ, সাদা কিংবা সবুজ স্রাব ক্ষরণ, লাল ও ফুলে যাওয়া মূত্রনালী, ফোলা অন্ডথলী বা শুক্রাশয়, বারংবার মূত্রত্যাগের ইচ্ছা এবং গলা ব্যাথা। মহিলাদের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য লক্ষণসমূহ হল যোনি থেকে অস্বাভাবিক স্রাব, যৌনমিলনের সময় অতিরিক্ত ব্যাথা, তলপেটে মাত্রারিতিক্ত ব্যাথা, মূত্রত্যাগের সময় যন্ত্রণা এবং জ্বর। তবে আশার কথা ঔষধের মাধ্যমে গনোরিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। যদি সন্দেহ হয় যে আপনার গনোরিয়া সংক্রমণ হয়েছে বা হতে পারে তবে অহেতুক লজ্জা ত্যাগ করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

সিফিলিস – এটাও ব্যাকটেরিয়াঘটিত একটি যৌনরোগ। এই রোগের প্রধান লক্ষণসমূহ হল মূত্র-জনন নালী, মলদ্বার, বা মুখে ঘা। সময়ে চিকিৎসা না হলে এই রোগ ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করে শরীরের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি করতে পারে, যার থেকে অসময়ে মৃত্যূ হতে পারে।

ট্রিকোমেনিয়াসিস – এটা একধরণের এককোষি পরজীবিঘটিত এক ধরণের যৌনরোগ। লিঙ্গ, যোনি বা মূত্রনালীতে যন্ত্রনা, চুলকানি বা ব্যাথাই হচ্ছে এই রোগের প্রধাণ লক্ষণ। এই ব্যাথা যৌনসংগম বা মূত্রত্যাগের সময় বেড়ে যেতে পারে। অনেক মহিলার ক্ষেত্রে এই রোগের ফলে যোনি থেকে হলদে- সবুজ রঙের দূর্গন্ধযুক্ত বা ফেঁনাযুক্ত স্রাব ক্ষরণ হতে পারে। সাধারণত সংক্রমণর ৫ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পায়। তবে অনেক ক্ষেত্রেই কোন লক্ষণ প্রকাশ নাও পেতে পারে। অসুরক্ষিত যৌনসংসর্গের মাধ্যমেই এই রোগ সংক্রমণ ছড়ায়। তবে চিকিৎসায় এই রোগের সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব।

এইচ. আই. ভি. – এটা সম্ভবত সবথেকে পরিচিত যৌনরোগ। হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়। যার ফলে নানা ধরনের রোগ একসাথে হতে পারে। শরীর থেকে ক্ষরিত বিভিন্ন ধরনের তরল যেমন রক্ত, বীর্য, দুগ্ধ, লসিকা, পুং ও স্ত্রী জননাঙ্গ থেকে ক্ষরিত বিভিন্ন রস ইত্যাদির মাধ্যমেই এইচ. আই. ভি. ভাইরাস ছড়ায়। সাধারণত অসুরক্ষিত যৌন সংসর্গের ফলেই এই রোগ হয়। তবে স্তনপানের ফলে কিংবা গর্ভবতী মায়ের থেকে তার সন্তানে এবং এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত রক্ত দানের ফলেও এইচ. আই. ভি.-র সংক্রমণ হয়ে থাকে। এইচ. আই. ভি. সংক্রমণ সমথেকে জটিল পর্যায়ে পৌঁছালে বলা হয় যে রোগির এইডস (AIDS – acute immunodeficiency syndrome) হয়েছে। এইচ. আই. ভি. সংক্রমণ কয়েকটি ধাপে হয়ে থাকে। এগুলি হল পর্যায়ক্রমে প্রাথমিক সংক্রমণ, লক্ষণহীন সংক্রমণ, লক্ষণযুক্ত সংক্রমণ ও এইডস। প্রাথমিক সংক্রমণ পর্যায়ে সাধারণত সর্দি-জ্বর বা ইনফ্লুয়েঞ্জার মত লক্ষণ যেমন গা ও মাথা ব্যাথা, জ্বর, ক্লান্তি ইত্যাদি লক্ষণ প্রকাশ পায় যা দু-সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে। এর পরের লক্ষণহীন পর্যায়ে এই সমস্ত লক্ষণ অন্তর্হিত হয়ে যায় এবং বছরের পর বছর কোনরকম লক্ষণ প্রকাশ নাও পেতে পারে। এইচ. আই. ভি. সংক্রমণের তৃতীয় পর্যায়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমতে শুরু করে এবং শেষ পর্যায়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা এতটাই কমে যায় যে নানা ধরনের অন্যান্য ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার ইত্যাদির সংক্রমণ (শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা সচরাচর যাদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে) হতে শুরু করে; ফলে রোগী এরপর দ্রুত মারা যায়। তবে এখন বিভিন্ন ধরণের ঔষধ আবিষ্কার হয়েছে যার দ্বারা এই ভাইরাসের প্রভাব অপেক্ষাকৃতভাবে কমিয়ে রাখতে পারে, ফলে রোগি অনেক বেশি দিন বেঁচে থাকতে পারে। মনে রাখা প্রয়োজন যে ঔষধের দ্বারা রোগের প্রভাব কমিয়ে রাখলেও সংক্রমিত ব্যক্তি থেকে অপরের শরীরে এইচ. আই. ভি. ছড়াতে পারে। একবার আক্রান্ত হলে এর থেকে কোনভাবেই পুরোপুরি সেরে ওঠা যায়না; সেরকম কোন ঔষধ বা ডাক্তারি পদ্ধতি এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। তাই সুরক্ষিত যৌন সংসর্গ সম্মন্ধে সবার সচেতন থাকা উচিৎ। এছাড়াও হাসপাতালে রক্তদান ও গ্রহনের পূর্বে রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া উচিৎ যে দাতা এইচ. আই. ভি. দ্বারা আক্রান্ত নয়। মনে রাখবেন কোন ব্যক্তি এইচ.আই.ভি. পজিটিভ – এই কথার অর্থ হল যে তার শরীরে এইচ.আই.ভি. ভাইরাস প্রবেশ করেছে। আরও কয়েকটি যৌনরোগের সম্মন্ধে আমরা এর পরে একটি পোস্টে আলোচনা করব। তবে এই পোস্ট শেষ করার আগে এটা আবারও বলে রাখছি যে অনেক সময়ই যৌন রোগের কোন রকম লক্ষণ প্রকাশ পায়না। তাই লক্ষণ নেই, অতএব যৌনরোগ হয়নি – এটা ধরে নিলে মারত্মক ভুল করে বসতে পারেন। চেষ্টা করবেন সবসময় সুরক্ষিত যৌনসম্পর্ক করতে। অচেনা, অজানা সঙ্গীর সাথে যৌনমিলন থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকুন। একাধিক যৌনসঙ্গী, বা নিজের সঙ্গী বা সঙ্গীনির প্রতি আনুগত্যহীনতা আপনার নিজের ও সঙ্গীদের জীবন বিপন্ন করতে পারে। বিবাহের পূর্বে আপনার বা আপনার পাত্র/পাত্রীর যৌনরোগ রয়েছে কিনা সেটা জানার জন্য অবশ্যই পরীক্ষা করান। আর যদি যৌনরোগ ধরা পরে তাহলে উপযুক্ত চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয়ে তবেই নতুন সম্পর্ক গড়ুন। মনে রাখবেন উপযুক্ত নিরোধ বা কন্ডোম ব্যবহার করে যৌনরোগ সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেকটাই কমিয়ে আনা যায়, কিন্তু সেই সম্ভাবনা কখওনই পুরোপুরি শূন্য হতে পারেনা। ভাল থাকুন, ও যৌনরোগ সম্মন্ধে নিজের এবং আপনার চারপাশের লোকজনের সচেতনতা বাড়াতে চেষ্টা করুন। ধন্যবাদ

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

সাধারণত গোপনাঙ্গের বা যৌনাঙ্গে যে রোগ গুলো হয়ে থাকে তাকে যৌনরোগ বলে আখ্যায়িত করে হয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ