চোখের দৃষ্টিশক্তি স্থায়ী ভাবে বৃদ্ধির জন্য আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে, এবং চোখের যত্ন নিতে হবে যেমন : ১. সব সময় চোখ কে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ধুয়ে, চোখ কে ধূলিকণা থেকে বাঁচাতে হবে, ২.ভিটামিন এ জাতীয় খাবার খেতে হবে বেশি করে যথা: মিষ্টি পেঁপে, কাঁঠাল, কুমড়া, কালো কচু শাক, হেলেঞ্চা শাক, পুঁই শাক,লাউ শাক ,ধনিয়া পাতা,পাট শাক গাজর, মিষ্টি আলু, ডিম, কলিজা, মলাঢেলা ছোট্ট মাছ, ৩. বেশী করে কোরআন শরীফ পাঠ করুন আল্লাহর রহমতে দৃষ্টিশক্তি কোনো দিন ও কমবে না, ৪. মোবাইল, কম্পিউটার, টিভির ক্ষতিকর তেজক্রিয় রশ্মি থেকে চোখ কে দূরে রাখুন, ৫. চোখে সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তার এর পরামর্শ নিন।
১. চোখ ঢাকা : আরাম করে শিথিলভাবে মেরুদণ্ড সোজা করে বসুন। সামনের টেবিলে কনুই রেখে হাতের তালু দিয়ে চোখ ঢাকুন। এমনভাবে ঢাকুন, চোখের পাতা যেন হাতের তালু স্পর্শ না করে। এরপর খুব মনোহর প্রাকৃতিক দৃশ্য কল্পনা করুন। বেড়াতে গিয়ে বা টিভিতে কোন প্রাকৃতিক দৃশ্য মোহিত করে থাকলে তা ভিজুয়ালাইজ করুন। কাজ করতে করতে বা পড়তে পড়তে যখনই আপনার মনে হয় চোখ ক্লান্ত হয়ে গেছে বা চোখে ব্যথা করছে, তখনই আপনি ৫ থেকে ১০ মিনিট এভাবে হাতের তালু দিয়ে চোখ ঢেকে কল্পনায় সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যে হারিয়ে যান। যে দৃশ্য কল্পনা করছেন, তার রং, গন্ধ, শব্দ সব পুরোপুরি অনুভব করার চেষ্টা করুন। ডা. বেটস বলেছেন মনের চোখে কোন জিনিস দেখলে বাস্তবে তা আরও বেশি স্পষ্টভাবে দেখা যায়। ২. পলক ফেলুন : দশ-পনেরো সেকেন্ড পরপর চোখের পাতা মুহূর্তের জন্যে বন্ধ করার অভ্যাস করুন। এক দৃষ্টিতে না তাকিয়ে মাঝে মাঝে চোখের পাতা পড়তে দিন। এতে চোখ পরিষ্কার ও পিচ্ছিল থাকবে। ৩. কাছে ও দূরে তাকানো : কাছে ও দূরে তাকানোর অভ্যাস বাড়ান। এই তাকানোর অনুশীলন আপনি দুই হাতের দুআঙ্গুল দিয়েও করতে পারেন। ডান হাতের তর্জনী চোখ থেকে আধ হাত দূরে রাখুন। আর বাঁ হাত যতটা সম্ভব দূরে নিয়ে তর্জনী সোজা করে রাখুন। এবার প্রথমে ডান- অর্থাৎ কাছের হাতের তর্জনীর দিকে দুই চোখ দিয়ে ৫ সেকেন্ড এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকুন। ক্ষণিকের জন্যে চোখের পাতা ফেলুন। এরপর আবার দূরে অবস্থিত বাম হাতের তর্জনীর ডগায় এক দৃষ্টিতে ৫ সেকেন্ড তাকান। ক্ষণিকের জন্যে পলক ফেলুন। আবার কাছের আঙুলের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করুন। এভাবে ১০ বার এই অনুশীলন করুন। ৪. পানির ঝাপটা : সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে প্রথম কাজ হবে চোখে পানির ঝাপটা দেয়া। বেসিনের সামনে গিয়ে চোখ পুরোপুরি বন্ধ করে প্রথমে ২০ বার ঈষদুষ্ণ পানির ঝাপটা দিন। এরপর ২০ বার ঠাণ্ডা পানি ঝাপটা দিন। আবার রাতে শোয়ার আগে শেষ কাজ হবে চোখে পানির ঝাপটা দেয়া। এবারে উল্টো ভাবে। অর্থাৎ প্রথম ২০ বার ঝাপটা দেবেন ঠাণ্ডা পানি দিয়ে এবং পরের ২০ বার ঝাপটা দেবেন ঈষদুষ্ণ পানি দিয়ে। এতে চোখে রক্ত চলাচল বাড়বে। চোখ হবে প্রাণবন্ত। চোখের এই যত্ন যে কত উপকারী তা প্রখ্যাত লেখক অডলাস হাক্সলীর জীবন আলোচনা করলেই বোঝা যায়। ১৯৩৯ সালে হাক্সলীর বয়স যখন ৪৫, তখন তাঁর দৃষ্টিশক্তির দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে। পড়ার জন্যে তিনি ব্যবহার শুরু করেন মোটা ম্যাগনিফাইং গ্লাসের চশমা। এ সময় তিনি বেটস মেথডের কথা শোনেন। এবং ২ মাস এই পদ্ধতির চর্চা করার পর তিনি চশমা ছাড়া পড়তে সক্ষম হন। পরে হাক্সলী নিজেও চোখের যত্ন বিষয়ে একটি বই লেখেন। বইটির নাম ‘দি আর্ট অব সিইং’। তাতে তিনি লিখেছেন, শুধুমাত্র তিনিই নন, বেটস মেথডের সহজ নিয়ম পালন করে হাজার হাজার রোগী তাদের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সক্ষম হয়েছেন। অবশ্য এ উন্নতি সবসময়ই নির্ভর করে কতটা মনোযোগ ও একাগ্রতা নিয়ে আপনি অনুশীলন করছেন তার ওপরে।