অনেকে বলে তাবিজ ভুল। কিন্তু আমার মনে হয় এটা কাজ করসে আমার আমি যখন সপ্নদোষের জন্য নিয়েছিলাম। আসলে বেপারটা কি?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Unknown

Call

তাবিজ কবচ কিছু ক্ষেত্রে কার্যকরী হয়। অতিপ্রাকৃত বিষয়গুলো যতই অমান্য করা হোক না কেনো, কিছু সত্য এর মধ্যে অবশ্যই আছে। যদিও ম্যাক্সিমাম ক্ষেত্রে এগুলো ধর্মীয় ভাবে নাজায়েজ এবং সার্বিক দিক থেকে কুসংস্কারের অন্তর্ভুক্ত। আরেকটি ব্যাপার হলো মানুষ যে জিনিসের উপর দৃঢ় বিশ্বাস রাখে আল্লাহ তাকে সে জিনিসের প্রতিই মুখিয়ে দেন। তখন সমস্যা অন্য কোনো কারনে সমাধান হলেও ব্যাক্তি মনে করে তার আস্থার বস্তুটি দ্বারাই কার্যসিদ্ধি হয়েছে। হতে পারে আপনার ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছে। জেনে রাখা ভালো--> এটিতে বিশ্বাস করা কিন্তু শিরকের পর্যায়ে পড়ে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
অনেক মূর্খ আলেম সমাজে শোনা যায় যে আল্লাহর কালামের তাবিজ ব্যবহার নাকি শিরক। নাউজুবিল্লাহ।
ইসলামে কয়েক প্রকার তাবিজ জায়েজ
নয়।
যথা-
১/কুরআন হাদীস দ্বারা ঝাড়ফুক
দেয়া ছাড়া শুধু তামা, পিতল
বা লোহা দ্বারা তাবিজ
বানিয়ে লটকিয়ে রাখা। অর্থাৎ শুধু
এগুলো লটকানো দ্বারাই রোগমুক্ত
হওয়া যাবে বিশ্বাস
করে তা লটকানো নাজায়িজ।
২/ এমন তাবিজ যাতে আল্লাহর নাম,
কুরআনের আয়াত, দুআয়ে মাসূরা ব্যতিত
শিরকী কথা লিপিবদ্ধ থাকে।
৩/তাবীজকে মুয়াসসার বিজজাত
তথা তাবীজ নিজেই আরোগ্য করার
ক্ষমতার অধিকারী মনে করে তাবিজ
লটকানো। এ বিশ্বাস
জাহেলী যুগে ছিল, বর্তমানেও ইসলাম
সম্পর্কে কিছু অজ্ঞ
ব্যক্তিরা তা মনে করে থাকে।
৪/যে কালামের অর্থ জানা যায়
না এমন শব্দ দ্বারা তাবিজ লেখা।
৫/আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায়
তাবিজ লেখা।
এ সকল সুরতে সর্বসম্মত
মতানুসারে নাজায়িজ ও হারাম
এবং শিরক। এতে কোন সন্দেহ নেই।
কিন্তু তাবিজে কুরআনের আয়াত,
আল্লাহর নাম,
দুআয়ে মাসুরা বা শিরকমুক্ত অর্থবোধক
থাকলে তা অবশ্যই জায়িজ।
একে নাজায়িজ ও শিরক
বলা মুর্খতা বৈ কিছু নয়। কেননা এসব
তাবিজের ক্ষেত্রে মুয়াসসার
বিজজাত তথা আরোগ্যের
ক্ষমতা আল্লাহ তাআলাকেই
মনে করা হয়। যেমন ডাক্তার প্রদত্ত
ঔষদের ক্ষেত্রে মুয়াসসার বিজজাত
আল্লাহকে মনে করার
কারণে তা নাজায়িজ নয়।
যদি মুয়াসসার বিজজাত ঐ
ঔষধকে মনে করলে ঔষধ সেবনও শিরক ও
হারাম হবে।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের দলিল
ﻋَﻦْ ﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﺷُﻌَﻴْﺐٍ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ -
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - ﻛَﺎﻥَ ﻳُﻌَﻠِّﻤُﻬُﻢْ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻔَﺰَﻉِ ﻛَﻠِﻤَﺎﺕٍ « ﺃَﻋُﻮﺫُ
ﺑِﻜَﻠِﻤَﺎﺕِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟﺘَّﺎﻣَّﺔِ ﻣِﻦْ ﻏَﻀَﺒِﻪِ ﻭَﺷَﺮِّ ﻋِﺒَﺎﺩِﻩِ ﻭَﻣِﻦْ ﻫَﻤَﺰَﺍﺕِ
ﺍﻟﺸَّﻴَﺎﻃِﻴﻦِ ﻭَﺃَﻥْ ﻳَﺤْﻀُﺮُﻭﻥِ » . ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦُ ﻋَﻤْﺮٍﻭ
ﻳُﻌَﻠِّﻤُﻬُﻦَّ ﻣَﻦْ ﻋَﻘَﻞَ ﻣِﻦْ ﺑَﻨِﻴﻪِ ﻭَﻣَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﻌْﻘِﻞْ ﻛَﺘَﺒَﻪُ ﻓَﺄَﻋْﻠَﻘَﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
আমর ইবনে শুআইব তাঁর পিতা ও
তিনি তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন
যে,রাসূল (সঃ) ইরশাদ করেন,তোমাদের
কেউ যখন ঘুম অবস্থায়
ঘাবড়িয়ে উঠে,সে যেন
ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻜَﻠِﻤَﺎﺕِ ﺍﻟﻠَّﻪِ
ﺍﻟﺘَّﺎﻣَّﺔِ ﻣِﻦْ ﻏَﻀَﺒِﻪِ ﻭَﺷَﺮِّ ﻋِﺒَﺎﺩِﻩِ ﻭَﻣِﻦْ ﻫَﻤَﺰَﺍﺕِ ﺍﻟﺸَّﻴَﺎﻃِﻴﻦِ ﻭَﺃَﻥْ
ﻳَﺤْﻀُﺮُﻭﻥِ
দো’আটি পাঠ করে। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর তাঁর উপযুক্ত সন্তানদের
তা শিক্ষা দিতেন এবং ছোটদের
গলায় তা লিখে লটকিয়ে দিতেন।
{সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৮৯৫}
এ হাদীস স্পষ্টভাষায় উল্লেখ
করা হয়েছে যে, আব্দুল্লাহ বিন আমর
বিন আস রাঃ তাঁর অবুঝ সন্তানদের জন্য
তাবীজ লিখে তা লটকিয়ে দিতেন।
যারা বলেন যে, সকল তাবিজই শিরক,
তাহলে আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস
রাঃ কি শিরক করেছেন?
নাউজুবিল্লাহ!
যে সব হাদীসে তাবীজকে হারাম
শিরক বলা হয়েছে এর জবাব কি?
হাদীস দেখেই ফাতওয়া দেয়া যায়
না। হাদীস
সম্পর্কে প্রাজ্ঞতা থাকতে হয়। তাবীজ
কবচ সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা সম্বলিত
হাদীসে সেসব তাবীজকে নিষিদ্ধ
করা হয়েছে যেসব তাবীজের
কথা ইতোপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখিত ৫ ধরণের নিষিদ্ধ
তাতো আমরা আগেই উল্লেখ করেছি।
নিষিদ্ধতার হাদীসে কেবল সেসবই
উদ্দেশ্য। এ কারণেই আব্দুল্লাহ বিন আমর
বিন আস রাঃ তার সন্তানদের তাবিজ
দিতেন। যাতে উল্লেখিত শর্তের
কোনটি বিদ্যমান নয়।
দেখুন বিজ্ঞ ওলামা ও
ফক্বীহরা কী বলেন?
আল্লামা ইবনে হাজার
আসকালানী রহঃ বুখারী শরীফের
ব্যাখ্যগ্রন্থ ফাতহুল বারীতে লিখেন-
ﻭﺍﻟﺘﻤﺎﺋﻢ ﺟﻤﻊ ﺗﻤﻴﻤﺔ ﻭﻫﻲ ﺧﺮﺯ ﺃﻭ ﻗﻼﺩﺓ ﺗﻌﻠﻖ ﻓﻲ ﺍﻟﺮﺃﺱ
ﻛﺎﻧﻮﺍ ﻓﻲ ﺍﻟﺠﺎﻫﻠﻴﺔ ﻳﻌﺘﻘﺪﻭﻥ ﺃﻥ ﺫﻟﻚ ﻳﺪﻓﻊ ﺍﻵﻓﺎﺕ ﻭﺍﻟﺘﻮﻟﺔ
ﺑﻜﺴﺮ ﺍﻟﻤﺜﻨﺎﺓ ﻭﻓﺘﺢ ﺍﻟﻮﺍﻭ ﻭﺍﻟﻼﻡ ﻣﺨﻔﻔﺎ ﺷﻲﺀ ﻛﺎﻧﺖ ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ
ﺗﺠﻠﺐ ﺑﻪ ﻣﺤﺒﺔ ﺯﻭﺟﻬﺎ ﻭﻫﻮ ﺿﺮﺏ ﻣﻦ ﺍﻟﺴﺤﺮ ﻭﺇﻧﻤﺎ ﻛﺎﻥ
ﺫﻟﻚ ﻣﻦ ﺍﻟﺸﺮﻙ ﻷﻧﻬﻢ ﺃﺭﺍﺩﻭﺍ ﺩﻓﻊ ﺍﻟﻤﻀﺎﺭ ﻭﺟﻠﺐ ﺍﻟﻤﻨﺎﻓﻊ ﻣﻦ
ﻋﻨﺪ ﻏﻴﺮ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻻ ﻳﺪﺧﻞ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﻣﺎ ﻛﺎﻥ ﺑﺄﺳﻤﺎﺀ ﺍﻟﻠﻪ
ﻭﻛﻼﻣﻪ
তামায়েম শব্দটি তামীমা শব্দের
বহুবচন। যা পুঁতি বা মালা সাদৃশ্য।
মাথায় লটকানো হয়।
জাহেলী যুগে বিশ্বাস করা হতো যে,
এর দ্বারা বিপদমুক্ত হওয়া যায়,
মহিলারা এসব ব্যবহার করতো স্বামীর
মোহাব্বত অর্জন করতে। এটি জাদুরই
একটি প্রকার। এটি শিরকের অন্তুর্ভূক্ত।
কেননা এর দ্বারা আল্লাহ
ছাড়া অন্যের থেকে বিপদমুক্ত হওয়া ও
উপকার অর্জন করা উদ্দেশ্য হয়ে থাকে।
কিন্তু এ শিরকের অন্তুর্ভূক্ত
হবে না যেসব তাবীজ কবচে আল্লাহর
নাম বা কালাম থাকে। {ফাতহুল
বারী-১/১৬৬, ঝারফুক অধ্যায়}
মোল্লা আলী কারী রহঃ বলেন-
ﺇﺫﺍ ﻛﺘﺐ ﻟﻪ ﺍﻟﻨﺸﺮﺓ ﻭﻫﻲ ﻛﺎﻟﺘﻌﻮﻳﺬ ﻭﺍﻟﺮﻗﻴﺔ ﻭﺍﻟﻤﺮﺍﺩ ﺑﺎﻟﻀﻤﻴﺮ
ﺍﻟﺒﺎﺭﺯ ﻓﻲ ﻗﻮﻟﻪ ﻓﻘﺎﻝ ﺃﻱ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﻫﻮ ﻣﻦ ﻋﻤﻞ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ ﺍﻟﻨﻮﻉ
ﺍﻟﺬﻱ ﻛﺎﻥ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺠﺎﻫﻠﻴﺔ ﻳﻌﺎﻟﺠﻮﻥ ﺑﻪ ﻭﻳﻌﺘﻘﺪﻭﻥ ﻓﻴﻪ ﻭﺃﻣﺎ ﻣﺎ
ﻛﺎﻥ ﻣﻦ ﺍﻵﻳﺎﺕ ﺍﻟﻘﺮﺁﻧﻴﺔ ﻭﺍﻷﺳﻤﺎﺀ ﻭﺍﻟﺼﻔﺎﺕ ﺍﻟﺮﺑﺎﻧﻴﺔ
ﻭﺍﻟﺪﻋﻮﺍﺕ ﺍﻟﻤﺄﺛﻮﺭﺓ ﺍﻟﻨﺒﻮﻳﺔ ﻓﻼ ﺑﺄﺱ ﺑﻞ ﻳﺴﺘﺤﺐ ﺳﻮﺍﺀ ﻛﺎﻥ
ﺗﻌﻮﻳﺬﺍ ﺃﻭ ﺭﻗﻴﺔ ﺃﻭ ﻧﺸﺮﺓ ﻭﺃﻣﺎ ﻋﻠﻰ ﻟﻐﺔ ﺍﻟﻌﺒﺮﺍﻧﻴﺔ ﻭﻧﺤﻮﻫﺎ
ﻓﻴﻤﺘﻨﻊ ﻻﺣﺘﻤﺎﻝ ﺍﻟﺸﺮﻙ ﻓﻴﻬﺎ
যদি তাবীজের মত কাগজ লিখা হয়।
রাসূল সাঃ এর
বানী “এটি শয়তানী কর্ম” এর
দ্বারা উদ্দেশ্য হল
জাহেলী যুগে যদ্বারা চিকিৎসা করা হতো ও
যার উপর নির্ভর করা হতো। আর
যা কুরআনের আয়াত, আল্লাহর নাম,
আল্লাহর সিফাত সম্বলিত,
দুআয়ে মাসুরা হয়, তাহলে কোন
সমস্যা নেই। বরং এটি মুস্তাহাব। চাই
সেটি তাবীজ হোক, বা ঝারফুক হোক
বা কাগজে লিখা হোক। আর যেসব
ইবরানী ও অন্যান্য ভাষায় লিখা হয়
তা নিষিদ্ধ। কারণ তাতে শিরকের
সম্ভাবনা আছে। {মিরকাতুল
মাফাতীহ-৮/৩২১}
আল্লামা ইবনে আবেদীন
শামী রহঃ উল্লেখ করেন-
ﺇﻧﻤﺎ ﺗﻜﺮﻩ ﺍﻟﻌﻮﺫﺓ ﺇﺫﺍ ﻛﺎﻧﺖ ﺑﻐﻴﺮ ﻟﺴﺎﻥ ﺍﻟﻌﺮﺏ ، ﻭﻻ ﻳﺪﺭﻯ ﻣﺎ
ﻫﻮ ﻭﻟﻌﻠﻪ ﻳﺪﺧﻠﻪ ﺳﺤﺮ ﺃﻭ ﻛﻔﺮ ﺃﻭ ﻏﻴﺮ ﺫﻟﻚ ، ﻭﺃﻣﺎ ﻣﺎ ﻛﺎﻥ
ﻣﻦ ﺍﻟﻘﺮﺁﻥ ﺃﻭ ﺷﻲﺀ ﻣﻦ ﺍﻟﺪﻋﻮﺍﺕ ﻓﻼ ﺑﺄﺱ ﺑﻪ
নিশ্চয় নিষিদ্ধ তাবীজ হল
যা আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় লিখা হয়,
বুঝা যায় না তাতে কি আছে?
অথবা যাতে জাদু,
কুফরী ইত্যাদি কথা থাকে। আর যেসব
তাবীজে কুরআন বা দুআ সম্বলিত হয়
তা ব্যবহারে কোন সমস্যা নেই।
{ফাতওয়ায়ে শামী-৬/৩৬৩}
কথিত আহলে হাদীস ভাইদের
কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের মতামত
কথিত আহলে হাদীস
নামধারী ভাইদের কাছেও গ্রহণযোগ্য
ব্যক্তিত্ব শাইখুল ইসলাম
ইবনে তাইমিয়া রহঃ বলেন-
ﻳﺠﻮﺯ ﺃﻥ ﻳﻜﺘﺐ ﻟﻠﻤﺼﺎﺏ ﻭﻏﻴﺮﻩ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﺮﺿﻰ ﺷﻴﺌﺎ ﻣﻦ
ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺫﻛﺮﻩ ﺑﺎﻟﻤﺪﺍﺩ ﺍﻟﻤﺒﺎﺡ ﻭﻳﻐﺴﻞ ﻭﻳﺴﻘﻰ ﻛﻤﺎ ﻧﺺ
ﻋﻠﻰ ﺫﻟﻚ ﺃﺣﻤﺪ ﻭﻏﻴﺮﻩ
বিপদগ্রস্ত বা অসুস্থ লোকদের জন্য
কারি দ্বারা আল্লাহর কিতাব,
আল্লাহর জিকর
লিখে দেয়া এবং ধুয়ে পান
করা জয়েজ।
তারপর এ আলোচনার
শেষদিকে তিনি তাবিজাত বৈধ
হওয়ার পক্ষে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)
এর একটি আছার পেশ করেন।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) কাগজের টুকরায়
তাবিজ
লিখে দিতেন,তা সন্তানসম্ভবা নারীদের
বাহুতে বেঁধে দেয়া হত।
{ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া-১৯/৬৪}
আল্লামা শাওকানী রহঃ নাইলুল
আওতারে ঝারফুক ও তাবীজের
অধ্যায়ে স্পষ্ট ভাষায় উপরোক্ত শর্ত
সাপেক্ষের তাবীজকে জায়েজ
বলেছেন।
সকল প্রকার তাবীজ নাজায়িজ
হলে ঝাড়ফুঁকও না জায়েজ হয়
কথিত আহলে হাদীস
ভাইয়েরা তাবীজ
কবচকে আমভাবে না জায়িজ বলার জন্য
যেসব হাদীস দলিল হিসেবে উপস্থাপন
করে থাকে সেসব হাদীসের
মাঝে একটি হাদীস হল-
ﺇﻥ ﺍﻟﺮﻗﻰ ﻭﺍﻟﺘﻤﺎﺋﻢ ﻭﺍﻟﺘﻮﻟﺔ ﺷﺮﻙ
অবশ্যই ঝাড়ফুঁক, তাবীজ ও জাদু শিরক।
{সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৮৮৬}
এ হাদীসে ঝাড়ফুঁককেও শিরক
বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
তাহলে কি সকল প্রকার ঝাড়ফুঁক শিরক ও
হারাম? আমাদের কথিত আহলে হাদীস
ভাইয়েরাও তা স্বীকার করেন যে,
কুরআন ও দুআয়ে মাসুরা দ্বারা ঝাড়ফুঁক
জায়েজ। এছাড়া হলে নাজায়িজ।
তাহলে এ হাদীস দিয়ে তাবীজ
নিষিদ্ধের দলিল দেয়া কি ঠিক হবে?
ঝাড়ফুঁক জায়েজের যেমন
ব্যখ্যা দেয়া হয় যে, এখানে সর্বপ্রকার
ঝাড়ফুঁক উদ্দেশ্য নয়,
তেমনি আমরা বলে তাবীজ
নিষিদ্ধতার হাদীসে সব ধরণের
তাবীজ নিষিদ্ধের কথা উদ্দেশ্য নয়।
যেমনটি বিজ্ঞ আলেমগণের মতমত
উল্লেখ পূর্বক ইতোপূর্বে উল্লেখ
করা হয়েছে।
একটি হাস্যকর দলিলের জবাব
আমাদের কথিত আহলে হাদীস
ভাইয়েরা সকল প্রকার তাবীজ হারাম
সাব্যস্ত করার জন্য কিছু হাস্যকর
দলিলের অবতারণা করে থাকেন। তার
মাঝে একটি তারা কুরআন ও হাদীসের
সেসব আয়াত ও হাদীস উপস্থাপন
করে থাকেন, যাতে তাওয়াক্কুল
তথা ভরসা একমাত্র আল্লাহর উপর
করতে বলা হয়েছে। সেই সাথে সব কিছু
করার ক্ষমতা আল্লাহর উপরই ন্যস্ত
মর্মে বক্তব্য এসেছে।
এসব আয়াত ও হাদীস উপস্থাপন
করে তারা বলতে চান যে, তাবীজের
উপর ভরসা করা মানে আল্লাহর
সাথে শিরক করা তাই তা হারাম।
কিন্তু আমাদের কথিত আহলে হাদীস
ভাইয়েরা ভরসা করা ও ওসীলা গ্রহণের
অর্থ না জানার কারণে এমন
বিভ্রান্তিতে নিপতিত হয়েছেন মূলত।
আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর
ভরসা করে মুক্তি বা আরোগ্য
কামনা শিরক এর মাঝে কোন দ্বিমত
নেই। কিন্তু মূল ভরসা আল্লাহর উপর
রেখে ওসীলা গ্রহণ করা জায়েজ
এটা সর্বজন স্বীকৃত কথা। যদি বলা হয়
যে, ওসীলা গ্রহণ জায়েজ নয়।
তাহলে অসুখ হলে অষুধ
খাওয়া কি করে জায়েজ হয়?
এ্ক্ষেত্রেতো একই বিষয়
আসছে যেমনটি তাবীজের
ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে।
এখানে যদি বলেন যে, ভরসা আল্লাহর
উপর, আর বড়ি বা চিকিৎসা কেবল
ওসীলা মাত্র, তাই তা নাজায়েজ নয়।
তাহলে তাবীজের ক্ষেত্রে কেন এ
অহেতুক প্রশ্ন তোলা?
সুতরাং বুঝা গেল যে,
ডাক্তারী বড়িকে আরোগ্যের মূল
কারণ সাব্যস্ত না করে আল্লাহর উপর
ভরসা করে ওসীলা হিসেবে যেমন
তা ব্যবহার করা বৈধ,
তেমনি প্রথমে উল্লেখিত
শর্তসাপেক্ষে তাবীজ কবচও জায়েজ।
না জায়েজের কোন কারণ নেই।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Fikar

Call



1)     নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
 (من علق شيئا وكل إليه)
“যে ব্যক্তি কোন জিনিষ লটকাবে, তাকে ঐ জিনিষের দিকেই সোপর্দ করে দেয়া হবে”।[১]


2)    কোন এক সফরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একজন লোক পাঠিয়ে বলে দিলেন যেঃ
أَنْ لاَ يَبْقَيَنَّ فِي رَقَبَةِ بَعِيرٍ قِلاَدَةٌ مِنْ وَتَرٍ أَوْ قِلاَدَةٌ إِلاَّ قُطِعَتْ
 “কোন উটের গলায় ধনুকের রশি বা গাছের ছাল দিয়ে তৈরী হার ঝুলানো থাকলে অথবা যে কোন মালা থাকলে সেটি যেন অবশ্যই কেটে ফেলা হয়।”[2]

3)    নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
إِنَّ الرُّقَى وَالتَّمَائِمَ وَالتِّوَلَةَ شِرْكٌ)
“ঝাড়-ফুঁক করা, তাবীজ লটকানো এবং স্বামী বা স্ত্রীর মাঝে ভালবাসা সৃষ্টির জন্যে যাদুমন্ত্রের আশ্রয় নেয়া শির্ক”।[3]

4)    নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য এক হাদীছে বলেনঃ
(مَنْ تَعَلَّقَ تَمِيمَةً فلا أتم الله له ومن علق ودعة فلا ودع الله له)
“যে ব্যক্তি তাবীজ লটকালো, আল্লাহ্‌ যেন তার উদ্দেশ্য পূর্ণ না করেন। আর যে ব্যক্তি রুগমক্তির জন্যে শামুক বা ঝিনুকের মালা লটকালো, আল্লাহ্‌ যেন তাকে শিফা না দেন”।[৪]

5)    তিনি অন্য এক হাদীছে বলেনঃ
 (مَنْ تَعَلَّقَ تَمِيمَةً فَقَدْ أَشْرَكَ)
“যে ব্যক্তি তাবীজ লটকালো সে শির্ক করল”।[৫]


6)    নবী (সাঃ) এক ব্যক্তির হাতে পিতলের একটি আংটা দেখে বললেনঃ এটি কী? সে বললঃ এটি দুর্বলতা দূর করার জন্যে পরিধান করেছি। তিনি বললেনঃ
(انْزِعْهَا فَإِنَّهَا لَا تَزِيدُكَ إِلَّا وَهْنًا فَإِنَّكَ لَوْ مِتَّ وَهِيَ عَلَيْكَ مَا أَفْلَحْتَ أَبَدًا)
“তুমি এটি খুলে ফেল। কারণ এটি তোমার দুর্বলতা আরো বাড়িয়ে দিবে। আর তুমি যদি এটি পরিহিত অবস্থায় মৃত্যু বরণ কর, তাহলে তুমি কখনই সফলতা অর্জন করতে পারবে না”।[৬]

7)     হুজায়ফা (রাঃ) দেখলেন এক ব্যক্তির হাতে একটি সুতা বাঁধা আছে। তিনি তা কেটে ফেললেন এবং কুরআনের এই আয়াতটি পাঠ করলেনঃ
)وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إلاَّ وَهُمْ مُشْرِكُونَ(
“তাদের অধিকাংশই আল্লাহকে বিশ্বাস করে; কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে”। (সূরা ইউসুফঃ ১০৬)

৮) সাঈদ বিন জুবায়ের (রাঃ) বলেনঃ 
যে ব্যক্তি কোন মানুষের শরীর থেকে একটি তাবীজ কেটে ফেলল, সে একটি গোলাম আযাদ করার ছাওয়াব পেল। সাঈদ বিন জুবায়েরের এই কথাটি নবী (সাঃ) হতে বর্ণিত মারফু হাদীছের পর্যায়র্ভূক্ত।


[১] -তিরমিযী, অধ্যায়ঃ কিতাবুত্‌ তিব্ব। শায়খ নাসির উদ্দীন আলবানী (রঃ) হাসান বলেছেন। ( দখুনঃ সহীহুত্‌ তিরমিযী হা নং- ২০৭২ )
[২] – বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুত্‌ তিব্ব।
[৩] – আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ কিতাবুত্‌ তিব্ব। শায়খ নাসির উদ্দীন আলবানী হাদীছ সহীহ বলেছেন। দেখুনঃ সিলসিলায়ে সহীহা হাদীছ নং- (৬/১১৬১)। এখানে যে ঝাড়ফুঁক করাকে শির্ক বলা হয়েছে, তা দ্বারা শির্কী কালামের মাধ্যমে ঝাড়ফুঁক উদ্দেশ্য। তবে ঝাড়ফুঁক যদি আল্লাহর কালাম, আল্লাহর সিফাত বা সহীহ হাদীছে বর্ণিত কোন বাক্যের মাধ্যমে হয়, তাতে কোন অসুবিধা নেই।
[৪] – হাকেম, (৪/২১৯। ইমাম আলবানী (রঃ) হাদীছটিকে যঈফ বলেছেন। দেখুনঃ সিলসিলায়ে যঈফা, (৩/৪২৭)
[৫] – মুসনাদে আহমাদ, (৪/১৫৬) ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন, দেখুন সিলসিলায়ে সহীহা হাদীছ নং- (১/৮০৯)
[৬] – মুসনাদে আহমাদ, দেখুনঃ আহমাদ শাকেরের তাহকীক, (১৭/৪৩৫) তিনি হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।   
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

যে কোন রোগ ভাল হয়ার জন্য প্রয়োজন মনের জোর। আপনার মনের জোর কম ছিল। আর তাবিজ গ্রহণ করায় আপনার মনের জোর বেরে গেছে। আসলে তাবিজ কিছুই না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ