শেয়ারযারা বাজারে বিনিয়োগ করতে চান; কিছু বেসিক জানা ভালো। ওয়ারেন বাফেটের বিখ্যাত উক্তি দুই পা ডুবিয়ে পানির গভীরতা মাপতে যাবেন না। মানে সব টাকা এক শেয়ারে বিনিয়োগ করবেন না। এক্ষেত্রে আপনার মোট মূলধনের ২৫% প্রথমে এক বা একাধিক শেয়ারে বিনিয়োগ করুন। যদি আপনার কেনা শেয়ারের দাম কমে যায় তবে সেই একই শেয়ার তত পরিমানে আরো কিনুন যেন দুই বা তিন বারে কেনা একই শেয়ারের গড় ক্রয় মুল্য বাজার মুল্যের কাছাকাছি চলে আসে। এটাকে সহজ ভাষায় গড় করা বলে। উদাহরনে বলি ধরুন আপনি একটা শেয়ার ১৫ টাকায় ১০০০ শেয়ার কিনলেন । পরদিন বা কয়েক দিনের ভিতর ঐ শেয়ারের দাম যদি ১৪ টাকা বা ১৩ টাকায় পড়ে যায় তবে ১৪ টাকা হলে আরও ১০০০ কিনলে মোট ২০০০ শেয়ারের গড় ক্রয় মুল্য ১৪ টাকা ৫০ পয়সা হবে ; ১৩ টাকা হলে ২০০০ কিনলে মোট ৩০০০ শেয়ারের গড় ক্রয় মুল্য ১৩ টাকা ৬৭ পয়সা হবে যা কিনা বাজার মুল্যের কাছাকাছি । এভাবে মুল্য পরতি শেয়ারের পরিমান যত বেশী কিনবেন গড় ক্রয় মুল্য বাজার মুল্যের তত কাছাকাছি হবে। একদিন বাজার মুল্য সামান্য বাড়লেই সব শেয়ার বেচে দিন, লাভ খুব বেশী না হলেও ক্ষতি হবে না। এ কারণেই প্রথমেই মোট মূলধনের ২৫% এর বেশী বিনিয়োগ করা উচিৎ না। কারণ আপনার হয়তো গড় করে মূলধন ফেরত আনতে হতে পারে। তখন আরো মূলধন বিনিয়োগ করতে হবে। আর বিশেষ সুত্রের কথায় শেয়ার কিনতে পারেন। সে ক্ষেত্রেও প্রথমেই বেশী বিনিয়োগ করা উচিৎ না। তো শেয়ারের দাম পরলেই আতঙ্কিত না হয়ে কৌশল করে মূলধন তুলে আনুন। ফাইনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্টের অনেক সূত্র আর কৌশল আছে । কিন্তু আমাদের শেয়ার বাজারে ঐ সব কৌশল আকেজো। তাই ঐসব আর বললাম না। তবে গড় করার এই কৌশল শুধু বাংলাদেশে নয় সব শেয়ার বাজারেই কার্যকর। আবার এক শেয়ারে অনেক বিনিয়োগ না করে কয়েকটি শেয়ারে বিনিয়োগ করুন। কিছু শেয়ারের দাম কমলেও একটা দুইটার দাম বাড়তে পারে । আগে ঐ গুলি বিক্রয় করুন। শেয়ার কখন কিনবেন? বাজার দাম বাড়তে সময় না, বরং যখন বাজার পরতেছে তখন। এই সময় শেয়ার সর্বচ্চো কম মুল্যে কিনতে পারবেন। একটা কথা চালু আছে “ কিনে লাভ করতে না পারলে ; বেচে লাভ করা যায় না” মানে কেনার সময়ই সর্বচ্চো কম মুল্যে কিনতে হবে। আমাদের বাজার হিসাব বিজ্ঞানের বিশ্লেষণ মানে না। বেশীর ভাগ সময়ই হুজুগে বাড়ে কমে। তবুও কিছু বিষয় জেনে শেয়ার কেনা ভালো । যেমন দরুন শেয়ারের মোট সম্পদ মুল্য যদি ২০ টাকা হয় ঐ শেয়ার ২০ টাকা বা এটার কমে যেকোনো মুল্যে কেনায় ঝুঁকি কম। আবার যে শেয়ার নিয়মত লভ্যাংশ দেয় ঐ শেয়ারের দাম এখন কম থাকলেও যদি অতীতে আরো বেশী ছিল এমন হয় এবং এখনও নিয়মিত লভ্যাংশ দেয় ঐ শেয়ারের দাম বেশিতে কেনা যেতে পারে। আবার ধরুন শেয়ার বাজার শুধু পরতেছেই তখন কি কৌশল হবে। মূলধন হারাবেন তবে এখানেও কৌশল আছে। ধরুন একটা শেয়ারের দাম ১০০ টাকায় কেনা। দাম কমে ৯০ টাকা হয়ে গেছে। আপনার কাছে গড় করার টাকাও নেই। শেয়ার বাজার দেখুন যদি আরও ৫ টাকা কমে যায় এখন শেয়ার বেচে দিন। দাম যখন কমে কমে আরও ১৫ টাকা কমবে আপনার বিক্রয় করার সম পরিমান বা বেশী শেয়ার কিনুন। দাম বারলে কিছুটা লাভ করতে পারবেন। যদি দেখেন দাম আরও পরতেছে ৫,১০,১৫ টাকা যাই কমোক অবস্থা বুঝে বেচে দিন। দাম কমলে আবার কিনুন। কোনো ভাবেই ১০০ টাকা দামের শেয়ার ৪০ টাকায় নেমে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করে ধরে রাখবেন না। তো বিনিয়োগ করুন কিন্তু ঝুঁকি কমানোর কৌশল জেনে।