কেউউ বলে সুন্নাত, কেউ বলে নফল (নাউযুবিল্লাহ) নাকি এটা আসলে ওয়াজিব? দাড়ি রাখার বা কাটার ইসলামী নির্দেশনা কি? দলীল সহ জানতে চাই
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
NahidAkib

Call

প্রথমে একটি হাদিস দেখি: যে ব্যক্তি আমার সুন্নতকে মুহাব্বত করল সে যেন আমাকেই মুহাব্বত করল। আর যে আমাকে মুহাব্বত করল সে আমার সাথে জান্নাতে বসবাস করবে। (তিরমিযী শরীফ, মেশকাত- পৃ: ৩০) দাঁড়ির হুকুম ও পরিমাপ: ইসলামী শরীয়তে একমুষ্টি পরমান লম্বা দাঁড়ি রাখা ওয়াজিব বা আবশ্যক। দাঁড়ি এক মুষ্টির কম রাখা বা একেবারে তা মুন্ডিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে হারাম এবং কবীরা গুনাহ। স্বয়ং হুজুর স. এর দাঁড়ি রাখা এবং তার অসংখ্য হাদীসে উম্মতের প্রতি দাঁড়ি রাখার সাধারণ নির্দেশই প্রমান করে যে, দাঁড়ি রাখা ওয়াজিব এবং না রাখা হারাম। কারন, শরীয়ত প্রবর্তক কর্তৃক কোন বিষয়ের প্রতি সাধারন নির্দেশ হলে তা পালন করা ওয়াজিব এবং বিপরীত করা হারাম হয়ে যায়। আরে এটা ফিক্বাহ শাস্ত্রের একটি মূলনীতিও বটে। এছাড়া সাহাবা, সালফে সালেহীন এবং ফুক্বাহাগণের দাঁড়ি রাখার নিরবচ্ছিন্ন আমল এবং তাদের বিভিন্ন উক্তিসমূহের দ্বারাও এক মুষ্টি পরিমাপ লম্বা দাঁড়ি রাখা ওয়াজিব এবং এর বিপরীত করা হারাম প্রমাণিত হয়। নিম্নে দাঁড়ি সম্পর্কিত কতিপয় হাদীস, সাহাবাগণের আমল ও ফুক্বাহাগণের উক্তিসমূহ উল্লেখ করা হল: হাদীস শরীফে দাঁড়ি: ১. হযরত আয়েশা রা. বলেন, রাসূল স. ইরশাদ করেছেন, দশটি বিষয় সকল নবী রাসূলগণের সুন্নাত। তন্মধ্যে গোঁফ ছোট করা এবং দাঁড়ি লম্বা করা অন্যতম। (মুসলিম শরীফ,১/১২৯) ২. হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল স. ইরশাদ করেছেন, তোমরা গোঁফ কাট এবং দাঁড়ি লম্বা কর, আর অগ্নিপূজকদের বিরোধিতা কর। (মুসলিম শরীফ,১/১২৯) ৩. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল স. ইরশাদ করেন, মুশরিকদের বিরোধিতরা কর, দাঁড়ি লম্বা কর, আর গোঁফ ছোট কর। (বুখারী শরীফ- ২/৮৭৫, মুসলিম) ৪. হুজুর স. বলেছেন যে, তোমরা ভালভাবে গোঁফ কাট এবং দাড়ি বাড়াও। (বুখারী শরীফ) ৫. হুজুর স. এরশাদ করেন যে, গোঁফ কাট এবং দাড়ি ছড়িয়ে রাখ। (কাজী এয়াজ শরহে মুসলিম নববী) ৬. হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলে আকরাম স. ইরশাদ করেন, দাড়ি বাড়াও , গোঁফ কাট এবং এ ক্ষেত্রে ইহুদী-খ্রীষ্টানদের সাদৃশ্য অবলম্বন করোনা। (মাসনাদে আহমদ) ৭. নবী করীম স. এর আমল দ্বারাও দাড়ি প্রমান পাওয়া যায়। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে যে, সাহাবী হযরত খাব্বাব রা.-কে কেউ জিজ্ঞেস করেন, হুজুর পাক স. কি জোহর ও আছর নামাযে কেরআত পাঠ করতেন? তিনি বলেন, হ্যা, পাঠ করতেন। লোকটি পুন:প্রশ্ন করেন, আপনি কিভাবে তা বুঝতেন ? তিনি বলেন হুজুর স.-এর দাড়ি মুবারকের দোলায় আমরা বুঝতাম যে, তিনি কিরআত পাঠ করছেন। (তাহাবী শরীফ) বলাবাহুল্য, কেরআত পাঠকালে ঐ দাড়ি দোলাই পরিদৃষ্ট হবে, যা যথেষ্ট দীর্ঘ হয়, ছোট ছোট দাড়ি কখনো দুলবে না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেছেন, তোমরা দাড়ি লম্বা করো এবং মোচ ছোট কর । দাড়ি সংক্রান্ত এ সহীহ হাদীসটি একাধিক হাদীস গ্রন্থে বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। হযরত ইবনে উমর রা. এর হাদীসে আছে-রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন, তোমরা দাড়ি লম্বা করো, গোফ ছোট রাখো । কোন কোন হাদীসে উপরোক্ত বাক্যের পূর্বে আছে-“তোমরা মুশরিকদের বিরোধিতা করো”। রাসূল সা. এর দাড়ি মোবারক ছিল কালো, গভীর, ঘন প্রশস্ত । তাঁর বক্ষ মুবারক দাড়িতে ভরে যেতো । প্রিয় নবী সা. দাড়ি রেখেছেন এবং গোটা উম্মতকে দাড়ি রাখার প্রতি তাগিদ দিয়েছেন । দাড়ি পুরুষের সৌন্দর্য, যেমন চুল নারীর সৌন্দর্য । দাড়ি রাখা ওয়জিব । চার মাযহাবের কোন মাযহাবে এ নিয়ে কোন বিতর্ক নেই । দাড়ি রাখা সুন্নত নয় । যেমন এ যুগের অনেকেই ধারণা করেন এবং দাড়ি রাখার ব্যাপারে মারাত্মক অবহেলা করেন । ফলশ্রুতিতে চব্বিশ ঘন্টা কবীরা গুনাহে লিপ্ত থকেন । আল্লাহর ক্রোধ তাদের প্রতি। এক কথায় দাড়ি লম্বা করা ওয়াজিব । আলেমদের চূড়ান্ত মত হল, আদেশ সূচক বাক্য দ্বারা কোন কাজকে জরুরী ও ওয়াজিব সাব্যস্ত করা হয় । দাড়ি এক মুষ্টির ভিতরে কাটা কিংবা ছাটা হারাম। (১)দাড়ি মুন্ডানো এবং ছোট করা মুশরিক অগ্নিপুজক এবং বিধর্মীদের আলামত আর মুসলমানদের জন্য বিধর্মীদের সাদৃশ্য অবলম্বন করা হারাম । হাদীসে ইরশাদ হয়েছে, যে ব্যক্তি অন্য কোন জাতির বেশবুষা আকার আকৃতি সাদৃশ্য অবলম্বন করবে সে ঐ জাতির অন্তর্ভুক্ত বলে গন্য হবে। (জামে ছগীর ২/৮) (২)দাড়িবিহীন চেহারা নারী জাতির চেহারার সাথে সামঞ্জস্য রাখে। এধরনের সামঞ্জস্য অবলম্বন করা হারাম । হাদীসে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ তা’আলা অভিসম্পাত করেন সেসব পুরুষের উপর যারা নারীদের সাদৃশ্য গ্রহণ করে। (৩)রাসূল সা. সারাজীবন লম্বা দাড়ি রেখেছিলেন, যদি দাড়ি মুন্ডানো কিংবা মুষ্টি পরিমাণের আগে কর্তন করা জায়িয হত, তাহলে তিনি সারা জীবনে কম পক্ষে একবার হলেও তা করে দেখাতেন । অথচ তার দ্বারা তা প্রমাণিত নয় । (৪) সকল সাহাবায়ে কেরামের দাড়ি লম্বা ছিল, কোন একটি দুর্বল হাদীসও এমন পাওয়া যায় না যদ্বারা বুঝা যায় যে, কোন একজন সাহাবী জীবনে কখনো দাড়ি মুন্ডিয়েছেন বা খাটো করেছেন। (৫) ফাতাওয়া শামীতে বর্ণিত আছে যে, পুরুষের জন্য দাড়ি মুন্ডন করা হারাম।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

রাসূল সঃ বলেছেন,  "اوفلوا اللحي"  অর্থাৎ দাড়িকে বাড়াও, এই

আমলটি "মুতাওয়াতির আমল" অর্থাৎ কোন নবী রাসূল,

সাহাবায়ে কেরাম কিংবা কোন তাবেয়ি ' এদের কারো ব্যপারে

শুনা যায় না যে তারা দাড়ি কেটেছেন।

দাড়ি রাখা আমলটি সুন্নাত, তবে এর হুকুম হল ওয়াজিব।

কেননা  হাদিসে দাড়ি রাখতে আদেশ করা হয়েছে,আর আদেশ

বাচক শব্দ ব্যবহৃত হলে তার হুকুম ওয়াজিব হয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

১. দাড়ি বাড়াও। (বুখারী, মুসলিম শরীফ) ২. দাড়ি পূর্ণ কর। (মুসলিম শরীফ) ৩. দাড়ি ঝুলন্ত ও লম্বা রাখ। (মুসলিম শরীফ) ৪. দাড়ি বহার রাখ। (মাজমাউল বিহার) ৫. দাড়ি বেশী রাখ (বুখারী, মুসলিম) ৬. দাড়িকে ছাড়, অর্থাৎ কর্তন করো না। (তাবরানী) দাঁড়ি ও সাহাবায়ে কেরামের আমল : ১.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা.যখন হজ্জ্ব বা উমরা আদায় করতে, তখন স্বীয় দাঁড়ি মুষ্টি করে ধরতেন, অতঃপর অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন। (বুখারী শরীফ- ২/৮৭৫) ২. হযরত আবু হুরায়রা রা. স্বীয় দাঁড়ি ধরতেন, অতঃপর অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন। (মুসান্নাফ লি-ইবনি আবি শাইবা- ১৩/১১২) দাঁড়ি ও ফুক্বাহাদের উক্তি: ১. হানাফী মাযহাবের কিতাব শরহে মুনহাল ও শরহে মানজুমাতুর আদবের মধ্যে লিখেছেন, নির্ভরযোগ্য ফতোয়া হল দাড়ি মুন্ডানো হারাম। ২.মাওলানা আশেকে এলাহী মিরাঠী রহ. তার প্রণিত “’”দাড়ি কী কদর ও কীমত” কিতাবে চার মাজহাবের ফক্বীহগণের মতামত শাফেয়ী মাজাহাবের প্রামান্য গ্রন্থ “আল ওবাব” হতে উদ্বৃত করেছেন : ইমাম ইবনুর রাফ’আ বলেন, ইমাম শাফেয়ী রহ. “আলউম্ম” কিতাবে লেখেন যে, দাড়ি কাটা হারাম। ৩. মালেকী মাজহাব মতেও দাড়ি মুন্ডন করা হারাম। অনুরূপভাবে ছুরত বিগড়ে যাওয়া মত ছেটে ফেলাও হারাম। (কিতাবুল ওবদা) ৪. হাম্বলী মাজহাবের কিতাব “শাহহুল মুন্তাহা” ও “শরহে মুজ্জুমাতুল আদব” এর উল্লেখ হয়েছে যে, নির্ভরযোগ্য মত হল দাড়ি মুন্ডন করা হারাম। অনুরূপ অন্যান্য গ্রন্থাকারও দাড়ি রাখা ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে মাননীয় ইমামদের ইজমা (ঐকমত) বর্ণনা করেছেন। দাড়ি কর্তনকারী আল্লাহ পাকের দুশমনদের মধ্যে গণ্য হওয়ার সম্ভাবনা: ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. নিজ রচিত “কিতাবুজ্জুহুদে” আকীল ইবনে মোদরেক সালামী হতে উদ্ধৃতি করেন যে, আল্লাহ জাল্লা শানুহু বনী ইস্রাইলের এক নবীর নিকট এই অহী প্রেরন করেন যে, তিনি যেন নিজ কওম বনী ইস্রাইলকে এ কথা জানিয়ে দেন যে, তারা যেন আল্লাহ তা’য়ালার দুশমনদের বিশেষ খাদ্য শুকরের গোশত না খায় এবং তাদের বিশেষ পানীয় অর্থাৎ শরাব(মদ) পান না করে এবং তাদের শিক্ল ছুরত (আকৃতি) না বানায়। যদি তারা এমন করে অর্থাৎ শুকরের গোশত খায়, বা মদ পান করে, অথবা দাড়ি মুন্ডায় বা ছোট করে (ফ্রেন্সকাট করে) অথবা বড় বড় মোচ রাখে, তা’হলে তারাও আমার দুশমন হবে, যেমন তারা আমার দুশমন। (দালায়েলুল আসর) কওমে লূতের নিন্দনীয় বৈশিষ্ট্য ও ধ্বংসের কারন: প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনে আসাকেরসহ আরো কতিপয় মুহাদ্দিস হযরত হাসান রা. হতে নবী করীম স. এর এই মুবারক হাদীস বর্ণনা করেন যে, দশ প্রকার পাপে লূত সম্প্রদায় ধ্বংস হয়েছিল; তন্মধ্যে দাড়ি কাটা, গোঁফ বড় রাখা অন্যতম। আল্লাহ সুবানুহুতা’'য়ালা আমাদের সকলকে দাঁড়ি রাখার গুরুত্ব অনুধাবন করে যারা এখন দাঁড়ি রাখিনি তাদের দাঁড়ি রাখার তৌফিক দান করুন এবং যারা দাঁড়ি সম্পর্কে আজেবাজে মন্তব্য করেন তাদের হেদায়াত দান করুন। আমীন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

মুসলমাদেরকে দাড়ি রাখতে ও লম্বা করতে রাসূল সাঃ নির্দেশ দিয়েছেন। দাড়ি ছোট করতে ও মুন্ডন করতে রাসূল সাঃ নিষেধ করেছেন। নিম্ন এ সম্পর্কে রাসূল সাঃ এর বাণী উল্লেখ করা হল। ১-হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ গোঁফ নিশ্চিহ্ন করতে, আর দাড়ি বড় করতে নির্দেশ দিয়েছেন। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৬২৪} ২-হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা গোঁফকে কর্তন কর, এবং দাড়িকে লম্বা কর। তোমরা অগ্নিপূজকদের বিপরীত কর। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৬২৬} ৩-হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন যে, আল্লাহ তাআলার ভর্ৎসনা ঐ সব পুরুষদের উপর যারা মহিলাদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করে এবং ঐ সব মহিলাদের উপর আল্লাহ তাআলার ভর্ৎসনা যারা পুরুষদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করে। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৫৪৬, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৭৫০} দাড়ি থাকা পুরুষের নিদর্শন। আর দাড়ি না থাকা মহিলাদের নিদর্শন। তাই দাড়ি কেটে মহিলাদের সাদৃশ্য গ্রহণ এ হাদীসের ভাষায় নিষিদ্ধ হয়ে যায়। ৪-রাসূল সাঃ এর যুগে মুশরিক ও অগ্নি উপাসকদের মধ্যে দাড়ি ছোট করে রাখা বা দাড়ি মুন্ডন করার রীতি প্রচলিত ছিল। রাসূলুল্লাহ সাঃ তার উম্মতকে বিশেষভাবে এ সকল অমুসলিম সম্প্রদায়ের বিরোধিতা করতে এবং বড় দাড়ি রাখতে নির্দেশ দিয়ে ইরশাদ করেন- হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন- তোমরা মুশরিকদের বিরোধীতা কর। দাড়ি লম্বা কর। আর গোঁফকে খাট কর। আর ইবনে ওমর রাঃ যখন হজ্ব বা ওমরা করতেন, তখন তিনি তার দাড়িকে মুঠ করে ধরতেন, তারপর অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৫৫৩} রাসূল সাঃ এর দাড়ি রাসূল সাঃ এর দাড়ি লম্বা ছিল। সাহাবাগণের দাড়িও লম্বা ছিল। ১-হযরত আলী রাঃ রাসূল সাঃ এর বর্ণনা দিতে গিয়ে উল্লেখ করেন যে, “তিনি অনেক বড় দাড়ির অধিকারী ছিলেন। {সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৬৩১১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৯৪৬} ২-হযরত জাবির বিন সামুরা রাঃ বলেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাড়ি ছিল বেশি বা ঘন। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৬২৩০, মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-৭৪৫৬} ফক্বীহদের দৃষ্টিতে দাড়ির বিধান উপর্যুক্ত হাদীসগুলোর আলোকে মুসলিম উম্মাহের ফক্বীহগণ একমত যে, দাড়ি বড় করা মুসলিমের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব এবং দাড়ি মুন্ডন করা বা “একমুষ্টি” এর কম রাখা নিষিদ্ধ। পারিভাষিক মূলনীতির আলোকে কোন কোন ফক্বীহ দাড়ি রাখা “ফরজ” বলে উল্লেখ করেছেন। কেউ তা “ওয়াজিব”মত দিয়েছেন। কেউ বা “সুন্নাত” বলেছেন। পঞ্চম হিজরী শতকের প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস ও ফক্বীহ ইবনে হাযম যাহিরী আলী ইবনে আহমাদ বলেন “দাড়ি ছেড়ে দেওয়া ও গোঁফ কর্তন করা ফরজ”। {আল মুহাল্লা-২/২২০} চতুর্থ হিজরী শতকের অন্যতম মুহাদ্দিস ও ফক্বীহ আবু আওয়ানা ইয়াকুব ইবনে ইসহক বলেন “গোঁফ কর্তন করা এবং তা ছোট করা ওয়াজিব ও দাড়ি বড় করা ওয়াজিব”। { মুসনাদে আবী আওয়ানা-১/১৬১} ষষ্ঠ হিজরী শতকের প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস ও মালিকী ফক্বীহ কাযী ইয়াজ বলেন যে, “দাড়ি মুন্ডন করা, কাটা বা পুড়ানো মাকরূহ। তবে দাড়ির দৈর্ঘ ও প্রস্থ থেকে কিছু কাটা ভাল। দাড়ি কাটা বা ছাটা যেমন মাকরূহ, তেমনি প্রসিদ্ধির জন্য তা বেশি বড় করাও মাকরূহ”। {ফাতহুল বারী-১০/৩৫০, নাইলুল আওতার-১/১৩৬} একাদশ হিজরীতে প্রসিদ্ধ হাম্বলী ফক্বীহ মানসূর বুহুতী রহঃ বলেন যে, “দাড়ি মুন্ডন করা হারাম, এক মুষ্টির অতিরিক্ত দাড়ি কর্তন করা মাকরূহ নয়। {কাশশাফুল কিনা-১/৭৫} একাদশ শতকে প্রসিদ্ধ হানাফী ফক্বীহ আলাউদ্দীন হাসকাফী রহ^ তাঁর প্রসিদ্ধ গ্রন্থ “আদ দুররুল মুখতার” এ লিখেন যে, “দাড়ি লম্বা করার সুন্নাত সম্মত পরিমাণ এক মুষ্টি। নিহায়া গ্রন্থে এক মুষ্টির অতিরিক্ত দাড়ি কর্তন করা ওয়াজিব বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর এক মুষ্টির কম পরিমাণ দাড়ি ছাটা কেউই বৈধ বলেন নি। মরক্কো অঞ্চলের কিছু মানুষ ও মেয়েদের অনুকরণপ্রিয় কিছু হিজড়া পুরুষ এরূপ সমর্বসম্মতভাবে নিষিদ্ধ কর্মে লিপ্ত হয়। {রদ্দুল মুহতার-২/৪১৭-৪৮১} কোন মুহাদ্দিস, ফক্বীহ, ইমাম বা আলিম এক মুষ্টির কম দাড়ি রাখার সুষ্পষ্ট অনুমতি দিয়েছেন বলে জানা যায় না। যারা দাড়ি থেকে কিছু ছাটার অনুমতি দিয়েছেন তাদের প্রায় সকলেই সুষ্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে, একমুষ্টির অতিরিক্তই শুধু কাটা যাবে। তাই একমুষ্টি হওয়ার আগেই দাড়ি কাটা, মুন্ডানো ইসলামের দৃষ্টিতে মাকরূহে তাহরীমী তথা হারামের কাছাকাছি গোনাহ। আহবান ও দাওয়াত দাড়ি রাখা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক। দাড়ি ছোট করা এবং মুন্ডানো উভয়টিই মারাত্মক অপরাধ। দাড়ি মুসলিমের পরিচায়ক। সুতরাং যখন একজন পুরুষের মুখে দাড়ি গজানো শুরু হয় তখন থেকেই দাড়িতে কেঁচি বা ব্লেড ব্যবহার না করা। ছোট বা মুন্ডানো থেকে বিরত থাকা জরুরী। সকল নবীদের মুখে দাড়ি ছিল। সকল সাহাবাগণের মুখে দাড়ি ছিল। সকল আল্লাহ ওয়ালা বুজুর্গদের মুখে দাড়ি ছিল। তাই দাড়ি নিয়ে ব্যাঙ্গ করা, বিরূপ মন্তব্য করা ঈমানের জন্য ক্ষতিকর হবে। নিজে দাড়ি রাখতে হবে, সেই সাথে দাড়িওয়ালা ব্যক্তিদের সম্মান করা, এবং দাড়ি অবমাননা হয এমন কোন কাজ করা যাবে না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ