শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

ইসলামী পর্দার মর্যাদা:

পর্দা আল্লাহ্‌ এবং তাঁর রাসূল মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর আনুগত্য। কেননা তাঁদের আনুগত্য প্রতিটি নর-নারীর উপর ফরয করা হয়েছে।

আল্লাহ্‌ তা’আলা নারীদেরকে পর্দার নির্দেশ দিয়ে এরশাদ করেন:

]وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلا مَا ظَهَرَ مِنْهَا[

“ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন সাধারণত: প্রকাশমান স্থান ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।” (সূরা নূর- ৩১)

তিনি আরো বলেন:

]وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى[

“তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে- মূর্খতা যুগের অনুরূপ (বেপর্দা হয়ে) নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না।” (সূরা আহযাব- ৩৩)

আল্লাহ্‌ আরো বলেন,

]وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ[

“তোমরা তাঁর পত্নীগণের নিকট থেকে কোন কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ।” (সূরা আহযাব- ৫৩)

আল্লাহ্‌ আরো বলেন,

]يَاأَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَنْ يُعْرَفْنَ فَلا يُؤْذَيْنَ[

“হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না।” (সূরা আহযাব- ৫৯)

রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেন: 

الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ  

“নারী গোপন বস্তু।”[50] 
অর্থাৎ- তাকে ঢেকে রাখতে হবে।

[৫০] . তিরমিযী, অধ্যায়ঃ দুগ্ধপান, হা/১০৯৩।

[৫১] . তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনু মাজাহ্‌, মুসনাদ আহমাদ, ছহীহ্‌ আল জামে হা/ ২৭০৮ ছহীহ তারগীব তারহীব ১৬৪-১৬৬।

পর্দা নারীর পবিত্রতা: আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন, “হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না।” (সূরা আহযাব- ৫৯) নারী নিজেকে ঢেকে রাখবে। এতে সে পূত-পবিত্রা সংরক্ষিতা থাকবে, আর তবেই তাকে কষ্ট দেয়া হবে না, ফাসেক বা খারাপ লোকেরা তাকে উত্যক্ত করতে সুযোগ পাবে না। এখানে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, নারীর সৌন্দর্য অপরের কাছে প্রকাশ হলেই তাকে কষ্ট, ফিৎনা ও অকল্যাণের সম্মুখিন হতে হয়।

পর্দা নির্মলতা: আল্লাহ্‌ বলেন, “তোমরা তাঁর পত্নীগণের নিকট থেকে কোন কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ।” (সূরা আহযাব- ৫৩)

এ আয়াতে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর স্ত্রীদের নিকট থেকে কোন কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইতে বলা হয়েছে; অথচ তাঁরা হচ্ছেন মুমিনদের সম্মানিত মাতা, পৃথিবীর তাবৎ নারীর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সবচাইতে অধিক পূত-পবিত্র। তাদের চাইতে অধিক পবিত্র এমন কোন নারী আছে কি যারা পর্দা না করে বলবে যে আমাদের অন্তর ঠিক আছে? আর অযৌক্তিক কথা বলবে ‘মনের পর্দা বড় পর্দা’?

এই আয়াতে পর্দাকে ঈমানদার নারী-পুরুষের হৃদয়ের পবিত্রতার কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কেননা চক্ষু যখন অবলকণ করে; হৃদয় তখন কামনা করে। আর এজন্যই দৃষ্টিপাত না করাটা হৃদয়ের পরিশুদ্ধতার কারণ এবং ফিৎনা থেকে বেঁচে থাকার সুস্পষ্ট মাধ্যম। কেননা পর্দার মাধ্যমে দুর্বল অন্তরের মানুষদের কুপ্রবৃত্তিকে বিনষ্ট করে দেয়া হয়। আল্লাহ্‌ বলেন,

] إِنْ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ[

“যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করে থাক, তবে পরপুরুষের সাথে নম্র ও আকর্ষনীয় ভঙ্গিতে কথা বলবে না। এতে দুবর্ল হৃদয়ের লোকদের অন্তরে লালচ (কুবাসনা) সৃষ্টি হবে।” (সূরা আহযাব- ৩২)

পর্দা নারীর আবরণ: রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: “নিশ্চয় আল্লাহ্‌ লজ্জাশীল গোপনকারী। তিনি লজ্জা ও গোপনীয়তা পসন্দ করেন।” (নাসাঈ) তিনি আরো বলেন: “যে নারী নিজ গৃহ ব্যতীত অন্যের গৃহে গিয়ে ¯^xq পোষক খুলবে, সে আল্লাহ্‌ ও তার মাঝের পর্দা ছিঁড়ে ফেলবে।”[51]

পর্দা হল ঈমান: আল্লাহ্‌ তা’আলা ঈমানদার নারী ব্যতীত কাউকে পর্দার নির্দেশ দেন নি। এজন্যই তিনি বলেছেন: “আপনি মুমিন নারীদেরকে বলুন!...”।

একদা বনূ তামীম গোত্রের কতিপয় নারী উম্মুল মুমেনীন আয়েশা (রা:) এর নিকট আগমণ করে, তাদের পরিধানে ছিল খুবই পাতলা পোষাক। তা দেখে আয়েশা (রাঃ) বললেন, ‘তোমরা যদি মুমেনা হয়ে থাক, তবে এটা ঈমানদার নারীর পোষাক নয়।’

পর্দা আত্মসম্ভ্রম: আত্মসম্ভ্রমবোধ সম্পন্ন পুরুষের জন্যও পর্দা মানানসই, যে পুরুষ নিজ স্ত্রী ও কন্যাদের প্রতি পরদৃষ্টির লোলুপতায় মর্যাদাবোধে আঘাত প্রাপ্ত হয়। জাহেলী যুগে এবং ইসলামের মধ্যেও অনেক যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে নারীর মর্যাদা ও সম্ভ্রম রক্ষার জন্য। আলী (রা:) বলেন, “আমি শুনলাম তোমাদের নারীরা অনারব কাফের পুরুষদের সাথে বাজারে গিয়ে ভিড় জমায়? তোমাদের মধ্যে আত্মসম্ভ্রম বোধ নেই? যার মধ্যে আত্মসম্ভ্রম বোধ নেই, তার মধ্যে কোন কল্যাণ নেই।”

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ