শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

সারা বিশ্বজুড়েই ক্রমবর্ধমান নগরায়ন এর কারণে টাইপ-১ ডায়াবেটিস এর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। ডায়াবেটিস এর প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে ডায়াবেটিস জনিত জটিলতাগুলো বাড়ছে এর ফলে ডায়াবেটিস এর জটিলতাগুলোর চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে। এই ব্যয়ভার একজন ডায়াবেটিক ব্যক্তির পরিবার তথা সমগ্র দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উপর প্রভাব ফেলছে। বিশেষত নিম্ন আয়ের উন্নয়নশীল দেশগুলো বেশি তিগ্রস্থ হচ্ছে। এসব থেকে উত্তরণের অন্যতম উপায় হচ্ছে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন এনে অনেকাংশেই ডায়াবেটিস এবং ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব। স্থুলকায় ও যাদের পরিবারের সদস্যদের ডায়াবেটিস আছে তারাই উচ্চঝুঁকিপূর্ণ এছাড়া গর্ভাবস্থায় মায়ের অপুষ্টি গর্ভস্থ শিশুর ভবিষ্যত জীবনে ডায়াবেটিস হবার ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়াও যাদের প্রিডায়াবেটিস ও ডায়াবেটিস এর পূর্বাবস্থা আছে তাদেরও ডায়াবেটিস হবার ঝুঁকি বেশি। এ সব দিক বিবেচনা করে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ এর পদপে নেয়া জরুরি। আমেরিকান ডায়াবেটিক এসোসিয়েশনের অনুসারে কয়েকটি পদপে এর মাধ্যমে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ সম্ভব: প্রথম ধাপ : শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়াম। নিয়মিত ব্যায়ামের অনেক উপকারিতা রয়েছে। নিয়মিত ব্যায়াম ওজন ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। নিয়মিত ব্যায়াম শরীরে তৈরি ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সাথে সাথে ডায়াবেটিস প্রতিরোধেও সহায়তা করে। সপ্তাহে অন্তত: ৫দিন ব্যায়াম এর দ্বারা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের ওজন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ বা বিলম্বিত করা সম্ভব। কখনই দেরী নয়, যে কোন বয়সেই ব্যায়াম শুরু করা সম্ভব, আমাদের দৈনন্দিন কাজের মধ্যে কিছুটা সময় ব্যায়াম এর জন্য নির্ধারিত করতে পারলে ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি অনেক হ্রাস করা সম্ভব। দ্বিতীয় ধাপ: প্রচুর আঁশযুক্ত খাবার। গ্রহণ শাক-সব্জি ও ফলমূলে প্রচুর আঁশ থাকে। খাদ্যের আঁশ খাদ্যনালী থেকে চর্বি ও গ্লুকোজ এবং শোষণ কমায় ও এভাবে রক্তের চর্বি ও গ্লুকোজ এর মাত্রা কমায়। এর ফলে ওজন হ্রাসের মাধ্যমে ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি কমে। যাদের প্রিডায়াবেটিস আছে তাদের েেত্রও আঁশ যুক্ত খাবার ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি কমায়। তৃতীয় ধাপ : সঠিক খাদ্য নির্বাচন। নগরায়নের সাথে সাথে আমরা কম পরিশ্রমে খাদ্য গ্রহণে অভ্যস্থ হয়ে পড়েছি। এর ফলে বেড়েছে ফাষ্ট ফুডের প্রচলন। অধিক শর্করা ও চিনি যুক্ত খাবারে গ্রহণের ফলে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পায় ও ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি বাড়ে। তেল, চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণেও ওজন বৃদ্ধি পায়। অত্যাধিক সুতরাং ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সঠিক খাদ্য তালিকা মেনে খাদ্য গ্রহণের ভূমিকা অপরিসীম। এেেত্র প্রয়োজনে পুষ্টিবিদের পরামর্শ গ্রহণ করা বাঞ্জনীয়। চতুর্থ ধাপ : শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ। ওজনাধিক্য ডায়াবেটিসের অন্যতম প্রধান কারণ তাই ওজন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। এক সমীায় দেখা গেছে প্রতি ১ কেজি ওজন হ্রাসে ডায়াবেটিস হবার সম্ভাবনা শতকরা ১৬ ভাগ কমে যায়। নিয়মিত ব্যায়াম এর মাধ্যমে যদি অতিরিক্ত জ্ঞানের ৫-১০% ও কমানো সম্ভব হয় তবে ডায়াবেটিস হবার ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভম। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের প্রতিরোধ কর্মসূচীতে অন্তর্ভূক্ত করা প্রয়োজন। ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিটি স্তরে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। লেখক পরিচিতি: ডা. ফারিয়া আফসানা, এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট ও ডায়াবেটোলজিস্ট, বারডেম, ঢাকা।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ