আল্লাহর অসংখ্য নিয়ামতে পরিপূর্ণ আমাদের এই পৃথিবী। এর মধ্যে অনেক বড় একটা নিয়ামত হচ্ছে পানি। যেটাকে জীবন ও বলা হয়ে থাকে। আল্লাহ আমাদের অনেক কঠিন সময়ে বিভিন্ন নিয়ামত দান করে সেই সময় টাকে সহজ ও সুন্দর করে দেন। আল্লাহর নিয়ামতে কেউ যদি গাফিলতী বা বেখায়ালিপনা করে তবে কঠিন ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়। একটা ছোট্ট উদাহরনের মাধ্যমে এটা বোঝা যাবে-

এক ব্যক্তি আরব মরুভূমিতে যাত্রা শুরু করলো সাথে বেশিকিছু খাবার ও পানি নিলো। মরুভূতিতে যাত্রা অবস্থায় হঠাৎ অন্য কিছু মুসাফিরদের দেখা পেলো। পথের মধ্যে আবহাওয়া খারাপ দেখে তারা সবাই ই সেখানে আশ্রয় গ্রহণ করলো। হঠাৎ অনেক ঝড় শুরু হলো। ঝড় থেমে এলো আর সন্ধ্যা নেমে এলো। তখন  সবাই মিলে চিন্তা করলো কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে আবার যাত্রা শুরু করবে। তারা সবাই ই খুব তৃষ্ণার্ত ছিল। তাদের লোকটি জিজ্ঞেস করলো আপনি এত তৃষ্ণার্ত কিন্তু পানি খাচ্ছেন না কেন। পানি কি শেষ আপনাদের? লোকগুলি বললো আমরা অনেক দূর পাড়ি দিয়ে আসছি। সাথে যে পানি আছে তা ২জনের বেশি খাওয়া সম্ভব না। কিন্তু আমরা আছি মোট ৪জন। তাই বাকি পথটুকু যে তৃষ্ণায় থাকতেই পারবেনা তাকেই পান করতে দেওয়া হবে পানি। তখন লোকটি শুনে বললো আমার  কাছে পানি আছে পর্যাপ্ত নিতে পারেন। লোকগুলি বললো আপনার সাথে যা পানি আছে তা বাকি পথ পাড়িতে দিতে সমস্যা হবে। আমরা তো গন্তব্যে প্রায় পৌছে গেছি আর আপনার শুরু। লোকটি তখন একটা অট্টহাসি দিলো। ইতোমধ্যে সেখানে বৃষ্টি শুরু হলো। লোকগুলি তাদের পাত্র ধরে বৃষ্টীর পানি সংরক্ষণ করলো। কিন্তু আলাদা ব্যক্তিটি পানি সংরক্ষন করলো না। সে ভাবলো যে পানি আছে আমার তাতেই হবে। অন্যান্য লোকগুলি তাকে বলাতেও পানি সংরক্ষণ করলো না। ঐ লোকগুলি সবাই তখন পানি পান করলো আর বৃষ্টি ছাড়লে সবাই আবার যাত্রা শুরু করলো। একা মানুষ এতবড় পথ পাড়ি দিতে লোকটির পানি এক পর্যায়ে শেষের পথে অথচ পথ শেষ হয়না। এভাবে একটা টাইমে লোকটির পানি একবার খাওয়ার মত আছে। সে বুঝতে পারিছিলনা এখন সে কি করবে। তার সাথে একটাই উট। মাঝপথ। আকাশের দিকে তাকিয়ে আল্লাহ কে ডাকা শুরু করলো বৃষ্টির জন্য। কোন বৃষ্টি এলোনা। এক পর্যায়ে থাকতে না পেরে সে বাকি পানি টুকুও শেষ করে ফেললো। এরপর আপসোস করতে করতে যাওয়া শুরু করলো কেন অতিরিক্ত পা্নি খেয়ে শেষ করলাম আর কেনই বা বৃষ্টির পানি টা সংরক্ষণ করলাম না। তার গাফিলতীর জন্য এক পর্যায়ে লোকটি পানি পিপাসায় কাতর হয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়লো আর উটের পিঠ থেকে পড়ে গেলো। এই মরুভূমিতে সে কাকে পাবে সাহায্যের জন্য ! পিপাসায় কতরাতে কতরাতে এক পর্যায়ে লোকটি মারা গেলো। তারা গাফিলতীই তাকে মৃত্যু শয্যা পর্যন্ত নিয়ে গেলো। পানির প্রয়োজন হবে জন্যই আল্লাহ তখন তার নিয়ামক সিহেবে বৃষ্টি দিয়েছিলো যেটা অন্যান্য মুসাফিরগণ সংরক্ষন করে উপকৃত হয়েছেন। কিন্তু এই ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামক কে উপেক্ষা করে চরম বিপর্যয়ের সমুখ্যীন হয়েছে। আল্লাহর প্রতিটি নিয়ামকই আমাদের প্রয়োজন বুঝে গ্রহণ করা উচিত। আল্লাহ মানুষের জন্যই সমস্ত নিয়ামত দান করেন। 


আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
seyamchow

Call

যখন নিয়ামত নাযিল হয় তখন কেউ যদি গাফিল থাকে তাহলে কঠিন পরিণতি হবে। এর উদাহরণটা কি?
=================================================

যখন নিয়ামত নাযিল হয় তখন কেউ যদি গাফিল থাকে তাহলে কঠিন পরিণতি হয় এর উদাহরণ হচ্ছে-
১. ইহুদিরা। তারা হাজার বছর ধরে অপেক্ষা করেছিল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য। বনু কায়নুকা, বনু নাযির ইত্যাদি ইহুদি গোত্রসমূহ হাজার বছর ধরে অপেক্ষমান ছিল আখেরী নবী উনার জন্য। যখন তিনি তাশরিফ মুবারক নিলেন তখন তারা নফসানিয়াতের কাছে হেরে গেল। তারা ভেবেছিল তিনি বনী ইসরাইল এর মধ্যে আগমন করবেন কিনতু তিনি বনী ইসমাঈলে হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মধ্যে আগমন করার কারণে তারা বিদ্বেষী হয়ে উঠল। তারা নফসানিয়াতের কাছে হেরে গেল। চির লা’নতগ্রস্থ হয়ে গেল।

২. উদাহরণ মক্কাবাসী মুশরিকরা। তারা প্রচলিত রীতিনীতি ছাড়তে পারলনা। তারাও চির লা’নতগ্রস্থ হযে গেল।

৩. আরেকটি উদাহরণ হল কুফাবাসী। আশুরার দিনে তারা ইমামুছ ছালিছ হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার খিদমত মুবারকে সাড়া না দিয়ে তারা ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত ছিল। তারাও চির লা’নতগ্রস্থ হযে গেল।

৪. আর একটি উদাহরণ হচ্ছে- সা’য়লাবা ইবনে হাতিফ। তার চরম পরিণতি। তার অন্তরে মুনাফিকি তৈরী করে দেয়া হয়েছে ইলা ইয়াওমিয়াল কাওনাহু। কেউ তার যাকাত গ্রহণ করেনি। কেন, যখন তাকে শুকরিয়া আদায় করতে বলা হলো তখন সে শুকরিয়া আদায় করেনি।

যারা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনাকে অবহেলা করবে, সাধারণভাবে নিবে তাদেরও ঠিক একই পরিণতি হবে

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ