হ্যাঁ এটা সত্য যে তাপ হ্রাস করলে পদার্থের আয়তনও হ্রাস পায়।কিন্তু কোনো বস্তুর আয়তন শূণ্য করে দিতে পারে না। আয়তন শূণ্য করা মানে বাস্তবে তার কোনো অস্তিত্ত্বই থাকবে না। এটা সম্ভব না। একমাত্র সৃষ্টিকর্তা এমন করতে পারে। বিজ্ঞানিরা কোনো বস্তুকেই তাপমাত্রা কমিয়ে শূণ্য করতে পারেনি। তাপমাত্রা হ্রাস করতে থাকলে একটা পর্যায় পদার্থের আয়তন আর কমবে না এটি আর তাপ শূষণ করতে পারবে না। যেমন পেট ভরে গেলে আমরা আর ক্ষেতে পারবো না। অতিরিক্ত খাবার বমি করে বের করে দেব ঠিক তেমনি পদার্থ এক পর্যায় আর ঠাণ্ডা হয়। তখন তার তাপমাত্রা স্হির হয়ে যাবে। আপনার চিন্তাটা খুব সু্দর। এমন চিন্তা চালিয়ে যান। আপনার যদি মনে হয় শূণ্য করা সম্ভব তবে চেষ্টা করতে পারেন কিন্তু সফল হবেন না।
অাপনার শিক্ষকের বক্তব্য সঠিক। গ্যাসীয় বস্তু সমূহের তাপমাত্রা কমিয়ে অায়তন শূণ্য করা যায়।
চার্লসের সূত্রানুসারে, স্থির চাপে নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের অায়তন প্রতি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হ্রাস বৃদ্ধির জন্য শূণ্য ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার এর অায়তনের 1/273 অংশ হ্রাস পায়।
সে অনুযায়ী স্থির চাপে -273 ডিগ্রি সেলসিয়াস বা 1 কেলভিন তাপমাত্রায় গ্যাসের অায়তন শূণ্য হবে।
কিন্তু বাস্তবে -273 ডিগ্রি সেলসিয়াস বা 1 কেলভিন তাপমাত্রার পরিবেশ তৈরী করা অসম্ভব। বিজ্ঞানীরাও শত চেষ্টা করেও যেতে পারেন নি। তাই বাস্তবে অায়তন শূণ্য বস্তু দেখা যায়না।
শীতকালে আমাদের দেশে কত ঠাণ্ডা পরে? এই সর্বনিম্ন ৮ ডিগ্রীতে নেমে যায়। কিন্তু মেরু অঞ্চলে অথবা হিমালয়ে তো অনেক ঠাণ্ডা পরে। টিভিতে আমরা দেখি শিতের অঞ্চলে বরফ পরে। বিয়ার গ্রীল বরফের মধ্য দিয়ে হেটে যায়। টিভির সামনে বসে থেকে এসব দেখেই আমাদের হাত-পা শিতে জমে যায়। মানুষ বাস করে পৃথিবীর সবথেকে কম তাপমাত্রা এমন একটি যায়গা হলও Oymyakon নামে রাশিয়ার একটা গ্রাম। এখানে তাপমাত্রা শূন্যের নিচে আরও ৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কিন্তু যদি জিজ্ঞেস করা হয় যে মহাবিশ্বে সর্বনিম্ন কত তাপমাত্রা থাকা সম্ভব? অনেকেই যারা মোটামুটি বিজ্ঞান জানে তারা বলবে -২৭৩.১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রাকে বলা হয় পরমশূন্য তাপমাত্রা। আচ্ছা, এবার যদি বলা হয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কত হতে পারে? এবার অনেকেই হয়তো মাথা চুলকাবে। তবে কেউ কেউ বলে দিবে যে পদার্থবিদরা হিসেব করে দেখেছেন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১,৪২০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ হতে পারে।
সর্বোচ্চ আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রাটা দেখে হয়তো অনেকেরই মাথা ঘুরে গিয়েছে। এই তাপমাত্রাটা আসলে পদার্থবিদরা তাত্ত্বিকভাবে হিসেব করে পেয়েছেন। বাস্তবে আমরা এখনো এমন কোন তাপমাত্রা মহাবিশ্বের কোথাও পাই নি। এ পর্যন্ত পাওয়া মহাবিশ্বে সবথেকে শীতল যায়গা হলও ‘বুমেরাং নেবুলা’। এর তাপমাত্রা পাওয়া গিয়েছে শূন্যের নিচে ২৩৬ ডিগ্রী অর্থাৎ -২৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তবে গবেষণাগারে আমরা আরও অনেক কম তাপমাত্রা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। এ পর্যন্ত আমাদের পাওয়া সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হলও -২৭৩.১৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস যা একদম পরম শূন্য তাপমাত্রার কাছাকাছি। ইতালির বিজ্ঞানীরা একটি কপার ভেসেলকে ঠাণ্ডা করে এই তাপমাত্রা পেতে সক্ষম হয়েছে। এপর্যন্ত মানুষের তৈরি সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হলও 5,500,000,000,000 ডিগ্রী সেলসিয়াস যা লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডারে দুইটা লেড আয়নের সংঘর্ষের ফলে তৈরি করা হয়েছে।
বিষটা বিস্তারিত ভাবে একটা ইনফোগ্রাফিক্সে দেয়া আছে এই সাইটে- https://bigganbortika.org/from-absolute-zero-to-absolute-hot/