যেসব জলপ্রবাহের শাখা-প্রশাখা আছে অর্থাৎ যেগুলো থেকে আরও কিছু নতুন জলপ্রবাহের সৃষ্টি হয়েছে সেগুলোকে নদী বলা হয় এবং যেগুলোর কোন শাখা-প্রশাখা নেই সেগুলোকে নদ বলা হয়। বিস্তারিত :: নদ আর নদীর মধ্যে উৎপত্তি বা প্রকৃতিগত কোন পার্থক্য নাই তবে যেসব নদীর নাম পুরুষবাচক অর্থে ব্যবহৃত হয় সেসব নদীকে নদ বলে | আমাদের উপমহাদেশের সংস্কৃতিতে নদ-নদীকে নারী-পুরুষ হিসেবে ভাগ করার পেছনে পুরাণ, ধর্মীয় ও লোকজ বিশ্বাসের প্রভাবই মুখ্য | শাখা থাকুক আর নাই থাকুক, ব্রহ্মার পুত্র ব্রহ্মপুত্রকে তো আর আপনি মেয়ে ভাবতে পারেন না; তেমনিভাবে হিমালয়দুহিতা গঙ্গা, সে তো নারীই হবে | নদ ও নদীর সাথে শাখা থাকা না থাকার কোন সম্পর্ক নেই | এই দুয়ের মাঝে যা পার্থক্য আছে তা হল ব্যাকরণগত | বাংলা, হিন্দি, ফারসি ইত্যাদি ভাষার ক্ষেত্রে, পুরুষবাচক শব্দ সাধারণত অ-কারান্ত এবং নারীবাচক শব্দ আ-কারান্ত বা ই,ঈ-কারান্ত হয় | যেমনঃ রহিম (অ-কারান্ত) -রহিমা (আ-কারান্ত, নামের শেষে আ আছে ) , রজক (অ-কারান্ত) – রজকী ( ঈ-কারান্ত, নামের শেষে ঈ আছে ) | তেমনিভাবেঃ ফুল-ফুলি, কুমার-কুমারী, নদ-নদী ইত্যাদি | তাই যে সকল ‘নদীর’ নাম পুরুষবাচক অর্থাৎ অ-কারান্ত তারা নদ আর যে সকল ‘নদীর’ নাম নারীবাচক অর্থাৎ আ-কারান্ত বা ঈ,ই-কারান্ত তারা নদী | এই কারণে ব্রহ্মপুত্রের শাখা নদী থাকলেও এটি নদ | একই কারণে নীল ‘নদী’ নয় ‘নদ’ | অনেকে আমাজন নদী বললেও উপরে উল্লেখিত কারণে তা হবে নদ। তাই এখন থেকে যে নদীর নাম অ-কারান্ত দেখবেন, নিশ্চিন্তে তাকে নদ বলুন |