শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

সমাজে প্রচলিত বিশ্বাস , আদর্শ , চিন্তা ভাবনা যার দ্বারা সামাজিক সম্পর্ক নিয়ন্ত্রিত হয় সেগুলোর সমষ্টিই হল সামাজিক মূল্যবোধ ।।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে উন্নত জাতি সৃষ্টি করা, যে জাতির প্রতিটি নাগরিকের মধ্যে দেশপ্রেম, নৈতিক শিক্ষা, সামাজিক মূল্যবোধ ও সর্বোপরি মানবপ্রেম বিরাজ করবে। মানুষ সামাজিক জীব। সমাজের মধ্যে বসবাস করার প্রধান শর্ত হচ্ছে একে অপরের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা করা এবং একে অপরকে এই অধিকার ভোগ করতে সাহায্য করা। তাইতো সমাজের চাহিদা পুরন করার লক্ষ্যে শিক্ষার চলমান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিটি শিক্ষার্থীর মাঝে মূল্যবোধের শিক্ষা দেওয়া উচিৎ। আর এই মূল্যবোধের শিক্ষা থেকে একজন শিক্ষার্থীর শৈশব বয়স থেকেই সঠিক সিদ্ধান্তই এক সময় তাকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। শিক্ষা শুধু সার্টিফিকেট অর্জনের লক্ষ্য হলে আর যাই হোক, তা দিয়ে দেশের উন্নতি আশা করা যায় না। এ শিক্ষা যদি শুধু টাকা কামানোর মাধ্যম হয় , তাহলে শিক্ষার দরকার নেই তা অনায়েসে বলা যায়। শিক্ষা যদি মানুষকে আলোকিত না করে তাহলে সেটা কিসের শিক্ষা?
যে শিক্ষা মানুষের বুদ্ধির অর্গল খুলে দেয় না বা হৃদয় প্রসারিত করে না সেটা শিক্ষা নয়। দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়লেও সে নৈতিক শিক্ষা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়। জগৎকে বোঝা ও জানাই হলো শিক্ষা। আমরা সেই শিক্ষা চাই যা মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত হয়। একজন মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষই জনগণের কল্যাণে এগিয়ে আসতে দ্বিধাবোধ করে না। অথচ একজন মূল্যবোধহীন মানুষ চোখের সমানে সব ঘটে যাওয়া অন্যায় অবিচারগুলো অবনতমস্তকে মেনে নেয়।
কোন ধরনের প্রতিবাদ করার সাহস যেমন নেই তেমনি অন্যায় মেনে নিতেই কুণ্ঠবোধ করেন না । নিজস্ব ঐতিহ্য, ইতিহাস কিংবা গৌরবকে ধরে রাখতে আপন সংস্কৃতিকে লালন করতে যেমন সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের শিক্ষা প্রয়োজন, তেমনি বৈশ্বিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে আন্তর্জাতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন। ব্যক্তিগত মূল্যবোধের শিক্ষা ও সামাজিক মূল্যবোধের শিক্ষা আর সেই শিক্ষা তাকে বিকশিত করে একজন আলোকিত মানুষের পর্যায়ে নিয়ে যায়।
মানুষের বড় সম্পদ হলো মূল্যবোধ। সেই মূল্যবোধের শিক্ষা শুরু হয় পরিবার থেকে। একটি শিশুকে আচার-আচরণ শিক্ষার পাশাপাশি মূল্যবোধ শিখানো হয় নানাভাবে। সালাম দেওয়া, বিদায়ের সময় মহৎ কামনা করা, ধন্যবাদ জানানো ইত্যাদির মাধ্যমেই সেই শিশুকে মূল্যবোধের শিক্ষা দেওয়া হয়। পরিবারে যে শিক্ষা শিশু গ্রহন করতে থাকে তা পরবর্তীতে পূর্ণদমে শুরু হয় স্কুলে গিয়ে। শিশুশ্রেণি থেকে সেই শিশু শিক্ষার্থীকে মূল্যবোধের শিক্ষা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে ধাপে ধাপে তা চলতে থাকে। সত্যবাদিতা, দেশপ্রেম, দয়া, সহমর্মিতা, আত্মত্যাগ, শান্তি ও মানবতাবোধ করতে আমাদের শিক্ষা ব্যবস’াতে নানান সময়ে নানান কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। যে জাতি উন্নয়নের পথে হাঁটতে চায়, তাহলে সেই জাতিকে অবশ্যই মূল্যবোধের শিক্ষায় সমৃদ্ধ হতে হবে। শিক্ষা শুধুমাত্র মানোন্নয়ন নয়, একটি আলোকিত ও উন্নত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে শিক্ষার কার্যক্রমে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। একটি শিশুকে অনবরত প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে শিশুর যে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় তা নিয়ে মতভেদ আছে ।
বয়স অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম ও পাঠদান কর্মসূচি ঢেলে সাজানোর জন্য শিক্ষাবিদগণ মতামত প্রকাশ করছেন। জ্ঞানমুখী ও কর্মমূখি শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে শিক্ষার্থীরা যেমন একটি মানসম্মত শিক্ষা গ্রহন করতে সক্ষম হবে তেমনি এ শিক্ষিত মূল্যবোধের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে জাতিকে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ উপহার দিতে তৈরি হবে।
আমরা এমন শিক্ষা চাই না যে শিক্ষাতে সামান্য কোন কারনে এক ভাই আর এক ভাইকে মারতে উদ্যত হয়, হঠাৎ কোন নোটিশ ছাড়াই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করতে হয়, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে বিভেদের সৃষ্টি হয়।
এজন আদর্শ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী জীবন সম্পর্কে নেতিবাচক ধারনা পোষণ করতে শুরু করে। জীবনের মানে খুঁজতে গিয়ে অর্থ ও ক্ষমতার মোহে পড়ে যায়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ