ব্যবহারিক শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে
মোঃ শাহাদৎ হোসেন

সুশিক্ষাই জাতীর মেরুদন্ড। সুন্দর একটি জাতী গঠনে প্রয়োজন পরিকল্পিত শিক্ষা ব্যবস্থা । প্রচলিত শিক্ষা ব্যবসস্থায় ত্বাত্তিক শিক্ষার প্রতি যতটা গুরুত্ব প্রদান করা হয় ততটা ব্যবহারিক শিক্ষার প্রতি ততটা গুরুত্ব প্রদান করা হয় না ।ফলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার সাথে বাস্তবতার মিল কমই খুঁজে পায় । এতে করে এ শিক্ষা শিক্ষিত বেকার তৈরীতে অগ্রনী ভুমিকা পালন করছে। বিজ্ঞান বিভাগসহ অন্যান্য বিষয়ে ব্যবহারিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকলেও তা সঠিকভাবে শিখনকার্য ও মুল্যায়নের অনীহার কারনে তার যথার্থতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
ত্বাত্তিক শিক্ষা যেমন কোন বিষয়বস্তুর আলোচনা, বিশদ বর্ননা থাকে, ব্যাখ্যা প্রয়োগিক আলোচনা, উদারণ দেওয়া থাকে। ফলে শিক্ষার্থীর মনোজগতে সেই বিষয়ের প্রতি একটি কাল্পনিক ভিত্তি তৈরী হয় । ব্যাবহারিকভাবে যে বিষয়গুলো উপস্থাপন ও সম্পাদনের সুযোগ রয়েছে তা যদি শিক্ষার্থীকে সম্পাদনের সুযোগ দেওয়া হয় সে ক্ষেত্রে তার দেহ ও মন দুইটির মাধ্যমে সেই শিক্ষা গ্রহন করা হয় বলে সেই শিক্ষাটি মনন ও মগজে সেটি স্থায়ীভাবে একটি প্রতিচ্ছবি তৈরী হয়। যার দরুন পরবর্তীতে অনুরুপ সৃষ্টিশীল কোন কর্মে আত্ননিয়োগ করতে পারবে। এতে করে তারা কোন না কোন বিষয়ে তারা দক্ষ হয়ে উঠতে পারে।
আমাদের শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিক শিক্ষার মুল উদ্দেশ্যই সঠিকভাবে বুঝতে পারে না। কিছুদিন পুর্বে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ‘ব্যবহারিক শিক্ষা জরুরী কেন, সে প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষার্থীদের যে হাস্যকর ও অবান্তর উত্তর পেয়েছিলাম তা দুঃখজনক। শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক বিষয়ের প্রতি বেশীরভাগ প্রতিষ্ঠানে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। অনেক প্রতিষ্ঠানে নেই বিজ্ঞানাগার, নেই প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, ফলে ব্যবহারিক শিক্ষাটা চলছে দায়সারা গোছের ভাবে। যেহেতু শিখন কার্যক্রমে ঘাটতি তাই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক উভয় পর্যায় ব্যবহারিক মুল্যায়নও হয় নাম মাত্র। শিক্ষার্থীর যথাযথ যোগ্যতা অর্জন না হলেও নাম্বার প্রাপ্তিতে কমতি নেই। এ ক্ষেত্রে শিক্ষা বোর্ডের ত্বাত্তিক বিষয়ের মত তদারিকিও উল্লেখযোগ্য নয়। শিক্ষার্থীরা সহজে পুর্ণ নাম্বার পায় বলে তারা ব্যবহারিকে বিষয়ে বেশীর ভাগ শিক্ষার্থীরা মনোনিবেশ করে না। সব মিলিয়ের বলা যায় এ ধরণের শিক্ষা গ্রহনের ফলে শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্যহত হচ্ছে আর প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছে শিক্ষিত বেকার। আশার কথা হল নতুন কারিকুলাম যেটি ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেনিতে চালু হয়েছে পর্যায়ক্রমে দ্বাদশ শ্রেণিতে হতে যাচ্ছে সেটি যদি সঠিকভারে বাস্তবায়ন করা যায় তাহলে হয়ত শিক্ষিত বেকার তৈরীর আশংকা কমে যাবে।
সর্বোপরি যদি ব্যবহারিক শিক্ষার প্রতি যথাযথ গুরুত্ব আরোপ না করা হয় আর যোগ্য ব্যাক্তিদের শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত না করা যায় তাহলে যেকোন শিক্ষা ব্যবস্থার ফলপ্রসু উন্নতি লাভ দুঃসাধ্য হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি ।

লেখক- গবেষক, শিক্ষক দোসাইদ অধন্য কুমার স্কুল এন্ড কলেজ, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা ।
(মাস্টার ট্রেইনার- জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২২ বিস্তরণ)


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে