ভিক্ষাবৃত্তি ও এর সমাধান
মোঃ শাহাদৎ হোসেন

দেশে মোট ভিক্ষুকের সংখ্যা আড়াই লাখ , শতকরা হিসাবে ০.১৭ ভাগ মানুষ ভিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে। এক প্রশ্নের জবাবে, সমাজকল্যাণমন্ত্রী ১৩ জানুয়ারি-২০২০ সংসদে এ কথা জানান তিনি। দিন দিন এ সংখ্যা বেড়েই চলছে। যদি যথাযথ পদেক্ষেপ নেওয়া যায় তবে ভিক্ষাবৃত্তি একেবারে বন্ধ করা সম্ভব ।

অনেক ভিক্ষুক আছে যারা প্রকৃতপক্ষে সর্বসান্ত হয়ে ভিক্ষায় নেমেছে। কেউ কেউ আছে খুব সহজে আয় করা যায় বলে ভিক্ষায় নেমেছে। বেগিং মাফিয়া আছে, যারা বিভিন্ন উপায়ে অপকর্ম করছে এবং ভিক্ষুকের সংখ্যা বাড়াছে। আবার কেউ কেউ ভিক্ষাবৃত্তি নেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে । স্বাবলম্ভী হয়েও ভিক্ষা ছাড়তে না পেরে ভিক্ষা করছে । আবার কেউ কেউ খন্ডকালীন ভিক্ষুক হিসেবেও আছে ।
এই ভিক্ষুকরা পথচারি, সাধারণ মানুষকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে, তেমনি ভিক্ষুকের ছদ্মবেশে অপরাধীরা অপরাধ কার্যও সংঘটিত করে । এরা যেমন সমাজ ও রাষ্ট্রের বোঝা ।
সমাজের এ স্বল্প সংখ্যক মানুষকে পুনঃবাসন করা কঠিন কাজ নয়। সর্ব প্রথম ভিক্ষুক এবং এদের উপর নির্ভরশীল যদি কেউ থাকে তবে তাদের সহ এদের তালিকা করা । তালিকা অনুযায়ী প্রতিটি থানা/ উপজেলায় পুনবাসন কেন্দ্র নির্মাণ করা । যারা কর্মক্ষম তাদের কাজে নিযুক্ত করা যারা অক্ষম তাদের পুনবাসণ কেন্দ্রে তাদেরকে আশ্রয় প্রদান করানো, তাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা। ভিক্ষুকের জন্য যে দানগুলো মানুষ করে সেগুলো সরকারিভাবে সঠিক নিয়মে সংগ্রহ করা। দুর্নীতি গ্রস্থ ব্যক্তিদের জরিমানার টাকা, কালো টাকা,মালিকানাবিহীন সম্পদের অর্থ, মুসলিম বিত্তবানদের যাকাত, ফেতরা, দান, সরকারি বরদ্দকৃত অর্থ এসব যদি সঠিকনিয়মে সুষমভাবে ব্যবস্থপনা করা হয় তবে তা পুনবাসনের জন্য পর্যাপ্ত হবে। সমাজ কল্যান মন্ত্রনালয়, জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর যৌথ ব্যবস্থপনার মাধ্যমে সম্পন্ন করলে কাজটি সুচারু হবে।
উল্লেখ্য যে ভিক্ষুকদের তালিকা করার সময় যদি বলা হয়, ভিক্ষুকদের পুনবাসন কেন্দ্রে রাখা হবে, মুক্তভাবে ভিক্ষা করতে পারবে না, ভিক্ষা নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়। তবে প্রকৃত সংখ্যা অনেক কমে আসবে।
এ স্বল্প সংখ্যক মানুষকে পুনবাসিত করা খুব কঠিন সাধ্য কাজ নয়। আমরা যদি এত সংখ্যক রোহিঙ্গাদের পুনবাসন করতে পারি তবে দেশের নাগরিকের অধিকার অবশ্যই নিশ্চিত করতে পারব। এতে যেমন রাষ্ট্র তার নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে সক্ষমতা অর্জন করবে তেমনি দেশ মুক্ত হবে ভিক্ষুকের অভিশাপ থেকে মুক্ত। দেশের বিত্তবান মানুষ, সমাজ সেবক, সরকারি, বেসকারি সংস্থা সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ভিক্ষাবৃত্তিকে নির্মূল করা সম্ভব।

শিক্ষক-দোসাইদ এ কে স্কুল এন্ড কলেজ- আশুলিয়া, সাভার , ঢাকা ই-মেইল shadu_cu @yahoo.com ।


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে