ডকুমেন্ট ফরমেট ডকুমেন্ট ফরমেট আম-মোক্তারনামা দলিল তৈরি করার নিয়ম, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দলিল ফরমেট 

পাওয়ার অব এটর্নি দলিল লেখার নিয়ম প্রথমেই জেনে নেই আম-মোক্তারনামা কি? আম-মোক্তারনামা যেটাকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নিও বলা হয়ে থাকে। আম-মোক্তার নামা হল কোন এক দরকারে প্রয়োজনে আইনি ভাবে কারোকে সম্পত্তি দেখাশুনা করার দায়িত্ব দেওয়া, ভোগদখল বা বেচা কেনা করার জন্য পাওয়ার দেওয়া অথবা নিজের পক্ষে অন্য কাউকে ক্ষমতা প্রদান করাকে আম-মোক্তারনামা বা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বলা হয়। এই আমমোক্তার নামা কেন দরকার হয়? কেউ যদি বিদেশ থাকে সেক্ষেত্রে তার সম্পত্তি দেখা শুনা করার জন্য বা প্রয়োজনে বেচা কেনা করার জন্য দরকার হতে পারে। আবার কেউ যদি অসুস্থ থাকে বা অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকে সেক্ষেত্রে অন্য কাউকে ক্ষমতা প্রদান করে থাকে সে যেন তার হয়ে যেকোন পরিস্থিতিতে মোকাবেলা করতে পারে বা লেনদেন করতে পারে। পাওয়ার অব অ্যাটর্নি আইন কিভাবে করবেন বা আম-মোক্তার নামা আইনি ভাবে কিভাবে করতে হয়? আপনি যদি বিদেশে থাকেন তাহলে ঐ দেশের এম্বেসির মাধ্যমে আপনার পাওয়ার অব অ্যাটর্নির ডকুমেন্ট পাঠাতে হবে, এই এম্বেসী হইতেই সহি স্বাক্ষর ও এদেশের আইনি ভাবে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি তৈরি করে নিতে হয়। আবার আপনি যদি দেশেই থাকেন আর যেকোন কারনে অন্য কাউকে আপনার পক্ষে ক্ষমতা প্রদান করতে চান তাহলে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে আম-মোক্তার নামা তৈরি করতে পারেন। তবে আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে কিভাবে আম-মোক্তারনামা দলিল তৈরি করতে হয় সেটাও জানানোর চেষ্টা করব। নিম্নে পাওয়ার অব এটর্নি দলিল লেখার নিয়ম বা আম-মোক্তারনামার একটি ফরমেট দেওয়া হলো, এই ফরমেট অনুযায়ী আপনার তথ্য দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন, তৈরি করার পর নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে এডভোকেট দিয়ে নোটারী করে নিলেই আপনার পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দলিলটি হয়ে যাবে। নিচে পাওয়ার অব এটর্নি দলিল লেখার নিয়ম বা আম-মোক্তারনামা (পাওয়ার অব অ্যাটর্নি) দলিল ফরমেট দেওয়া হলোঃ- আমমোক্তার দলিল নাম:………….., পিতা:…………………ঠিকানা:………………. জাতীয়তা- বাংলাদেশী, ধর্ম- ইসলাম, পেশা- ব্যবসা। —-প্রথম পক্ষ/ আমমোক্তার দাতা। নাম:………….., পিতা:…………………ঠিকানা:………………. জাতীয়তা- বাংলাদেশী, ধর্ম- ইসলাম, পেশা- ব্যবসা। —-দ্বিতীয় পক্ষ/আমমোক্তার গ্রহীতা। পরম করুনাময় মহান আল্লাহ তায়ালার নাম স্মরন করিয়া রাজারবাগস্থিত পৈত্রিকওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি দেখাশুনা, রক্ষনা-বেক্ষনের ও মামলা মোকদ্দমা পরিচালনা করার জন্য আমি প্রথম পক্ষ দ্বিতীয় পক্ষকে ক্ষমতা প্রদান করিলাম। অত্র দলিলের মাধ্যমে ২য় পক্ষ অত্র সম্পত্তির জন্য যেখানে যা করার, যেখানে যাওয়া দরকার সে সকল কর্ম সম্পাদন করিবেন। বর্তমানে আমি দলিল দাতা শারিরিক অসুস্থতার জন্য উক্ত সম্পত্তি দেখাশুনা ও শাসন সংরক্ষন, তদারক আমার পক্ষে সম্ভব নয়। নিম্ন তফসিল ভূক্ত সম্পত্তি দেখাশুনা, শাসন, সংরক্ষন করা ও মামলা মোকদ্দমা ইত্যাদি পরিচালনা করার জন্য একজন বিশ্বস্ত দক্ষ আমমোক্তার নিয়োগ করা একান্ত আবশ্যক হওয়ায় অত্র দলিল গ্রহীতাকে নিম্ন তফসিল বর্ণিত সম্পত্তির আমমোক্তার নিযুুক্ত করিয়া নিম্ন বর্ণিত দায়িত্ব অর্পন করিলাম। চলমান পাতা-২ (পাতা-২) ১. যেহেতু আপনি আমমোক্তার গ্রহীতা সম্পত্তির শাসন, সংরক্ষনসহ যাবতীয় কার্যকলাপ আমার নাম ব-কলামে আপনার নাম সহি স্বাক্ষর করিতে পারিবেন এবং আমার নাম ব-কলামে সহি স্বাক্ষর দিয়া যে কোন মামলা মোকদ্দমা বাদী হিসেবে নালিশ দাখিল করিতে পারিবেন। এবং বিবাদী হিসেবে জবাব প্রদান, কাগজপত্র দাখিল করিতে, উত্তোলন, সোলেনামা, যাবতীয় করিতে পারিবেন, ডিক্রি জারী ও দখল গ্রহণ করিতে পারিবেন। ২. যেহেতু আমার উপরোক্ত আম মোক্তার কোট, কাচারি যে কোন সরকারী অফিস, সিভিল ক্রিমিনাল, রেভিনিউ সেটেলম্যান্ট, জর্জ কোট, হাই কোট, সুপ্রিম কোট, থানা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, সিটি কর্পোরেশন অফিস, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যে কোন ঋণদান সংস্থার কার্যালয়, যে কোন প্রকার ব্যাংক ও সরকারী প্রতিষ্ঠান সমূহ, আধা সরকারী ও বেসরকারী অফিস আদালত সমূহে নিম্ন তফসিল বর্ণিত জোত জমির বিষয় আমার হইয়া নিযুক্তীয় আমমোক্তার সাহেব প্রয়োজনীয় কার্যকলাপ পরিচালনা করিতে পারিবেন। ৩. যেহেতু উপরে উল্লেখিত শর্তাদী আমার জবানীতে লিখিত হওয়ায় যাবতীয় কার্যাদী আমার কার্য বলিয়া বিবেচিত ও গন্য হইবে। চলমান পাতা-৩ (পাতা-৩) ৪. নিযুক্তীয় আমমোক্তার সাহেব তফসিল বর্ণিত সম্পত্তি দাগ খতিয়ান সংশোধনী দলিল দ্বারা বা আদালতের মাধ্যমে রেকর্ড সংশোধন করাইতে পারিবেন। যাহা আমার করনীয় বলিয়া বিবেচিত ও গন্য হইবে। ৫. যেহেতু নিম্ন তফসিলভূক্ত সম্পত্তির ব্যপারে আমি দলিল দাতা যাহা যাহা করিতাম, যা আইনত বৈধ তাহা অত্র আমমোক্তার দলিল গ্রহীতা করিতে পারিবেন। এতদ্বার্থে স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে, সুস্থ শরীরে সরল মনে অন্যের বিনা প্ররোচনায় অত্র দলিল পাঠ করিয়া শুনিয়া উহার সারমর্ম ভাল ভাবে অবগত হইয়া উপস্থিত স্বাক্ষীগনের মোকাবেলায় অত্র আম-মোক্তার নামা দলিল সহি সম্পাদন করিয়া দিলাম । ইতি, তারিখঃ আম-মোক্তারকৃত সম্পত্তির তফসিল পরিচয় জিলা ঢাকা সদর জয়েন্ট সাব রেজিষ্ট্রিারী অফিস সূত্রাপুর। থানা সাবেক তেজগাঁও তৎপর মতিঝিল বর্তমানে সবুজবাগ অধীন। ঢাকা কালেকক্টরীর ১২২৫নং তৌজিভূক্ত সাবেক ২৮৬নং হালে ১০নং মৌজা রাজারবাগ স্থিত। সি.এস- ১২৫নং, এস.এ ৪৯১ নং, আর.এস ২২২৯নং খতিয়ানের লিখিত সি.এস. ২০০নং এস.এ ১৪২৪ এবং আর.এস ৭৫২৪নং দাগের মোট জমির পরিমাণ ০.২৯ শতাংশ ইহার কাতে আমি দলিল দাতার পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত ১৪২৮ অযুতাংশ দলিল দ্বারা আমমোক্তারকৃত সম্পত্তি বটে। চলমান পাতা-৪ (পাতা-৪) আম-মোক্তারকৃত সম্পত্তির চৌহদ্দী উত্তরেঃ আর. এস. ৭৫২৫ ও ৭৫২৫নং দাগ দক্ষিণেঃ আর. এস. ৭৫২২নং দাগ পূর্বেঃ আর. এস. ৭৫২৩ ও ৭৭২৮নং দাগ পশ্চিমেঃ আর. এস. ৭৭২৫নং দাগ অত্র আমমোক্তার দলিল ৪ (চার) পাতায় কম্পোজকৃত এবং ৩ (তিন) জন স্বাক্ষী বটে। স্বাক্ষীগণের স্বাক্ষরঃ ১। ২। ৩। আমমোক্তার দাতার স্বাক্ষর আশা করি যারা আম-মোক্তারনামা তৈরি করতে চান তারা উপরের দেখানো মতে দলিলটি দেখানো মতে তৈরি করতে পারবেন। আর যদি কেউ জানতে চায় পাওয়ার অব এটর্নি বাতিল করার নিয়ম বা আম-মোক্তারনামা দলিলটি কিভাবে বাতিল করব? তাহলে বলব আপনি যদি নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্য পাওয়ার দিতে চান তাহলে এই দলিলের মধ্যে এত তারিখ থেকে এত দিয়ে দিতে পারেন, তাহলেই ওই তারিখ শেষ হলেই আম-মোক্তারনামা দলিলটিও অকার্যকর হয়ে যাকে। আবার আপনি যেভাবে পাওয়ার অব এটর্নিটি তৈরি করলেন ঠিক সেই ভাবেই আরেকটি তৈরি করতে হবে আম-মোক্তারনামাটি বাতিল বলে লিখে। তাহলেই আমমোক্তারনামাটি বাতিল হয়ে যাবে। আপনি যদি বিদেশ থাকেন তাহলে ঐ এম্বেসির মাধ্যমেই ডকুমেন্ট পাঠিয়ে বাতিল করতে পারবেন আবার আপনি যদি দেশে থেকে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে করেন তাহলে ঐ নোটারী পাবলিকের মাধ্যমেই বাতিল করতে পারবেন। আমমোক্তারনামা দলিলের খরচ কি রকম হয়ে থাকে? আপনি যদি বিদেশ থেকে এম্বেসির মাধ্যমে এদেশে ডকুমেন্ট পাঠান সেটা খরচ বহন করবে আপনার পারিপার্সিক দিক হিসেবে আর যদি দেশের মধ্যে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করেন তাহলে সেটা নির্ভর করবে আপনি কিভাবে কাজটি করবেন, আপনি যদি মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে একটি আম-মোক্তারনামা তৈরি করে ষ্ট্যাম্প পেপারে প্রিন্ট করে শুধু নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে এডভোকেট দিয়ে নোটারী করেন তাহলে খরচ কম পরবে হয় ২০০/- বা ৪০০/- টাকা নিতে পারে আর যদি নোটারী পাবলিকের তারাই সব দেয় যেমন ষ্ট্যাম্প পেপার বা লেখাগুলোও লিখে দেয় তাহলে একটু বেশি নিতে পারে, এক্ষেত্রে ১০০ টাকার যতগুলো ষ্ট্যাম্প পেপার লাগবে তত টাকা নিবে আবার লেখার জন্য আলাদা চার্জ করবে এভাবে করে আপনার কাছে চেয়ে বসতে পারে হাজার বারশত টাকা। সবচাইতে ভাল হয় আপনি যদি এই পোষ্টের ফরমেটটি দেখে নিজে নিজেই তৈরি করতে পারেন আর নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে নোটারী করতে পারেন। আজ এ পর্যন্তই কোন কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে