Call

বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে হয়, গুরু উত্তরসাধক মাত্র

 ,

শিক্ষা বা জ্ঞান অর্জন হলো সাধনার ব্যাপার। তবে এই সাধনার সাধক হতে হবে শিষ্যের নিজেকেই। একজনের সাধনা কখনও অন্য কেউ করে দিতে পারে না। যার সাধনা তাকেই সাধন করতে হয়। অন্যথায় সাধনার ফলাফল কখনই আশানুরূপ হয় না। আমাদের অনেকের মধ্যেই একটি বিশেষ প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়, তা হলো গুরু বা শিক্ষকের উপর সম্পূর্ণ ভরসা করে বসে থাকা। আমাদের এই প্রবণতার কারণেই আমাদের শিক্ষা শতভাগ পরিপূর্ণ হয় না। গুরু কিংবা শিক্ষক নিঃসন্দেহে একজন ছাত্রের নিকট ভরসার পাত্র হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, গুরুই তার শিক্ষাকে অন্তরে গেঁথে দেবেন। অন্তরে গেঁথে দেওয়ার দায়িত্ব গুরুর নয়। গেঁথে নেওয়ার দায়িত্ব শিষ্যের। গুরু বড়জোর পথ দেখিয়ে দিতে পারেন। গুরু শুধুমাত্র শিষ্যকে বলে দিতে পারেন কোন পথ তার জন্য উত্তম, কোন পথে, কিভাবে হেটে গেলে সে তার কাঙ্ক্ষিত বস্তুর দেখা পেতে পারে। কিন্তু এরপরের সব দায়িত্বই শিষ্যের। গুরুর দেখানো পথে, গুরুর নির্দেশিত পন্থায় হেটে যেতে হবে শিষ্যের নিজেকেই। সঠিকভাবে সে পথ পাড়ি দিয়ে কাঙ্ক্ষিত বস্তুটি অর্জন করে আনা শিষ্যেরই দায়িত্ব। আমরা প্রায়ই ছাত্রের খারাপ ফলাফলের জন্যই শিক্ষককেই দোষারোপ করি। কিন্তু খারাপ ফলাফলের জন্য কখনও শিক্ষক দায়ী নয়, বরং ছাত্ররাই দায়ী। কিন্তু শিক্ষকের দেখানো পথে ছাত্র যদি হাঁটতে না পারে সে অযোগ্যতা শুধুমাত্র ছাত্রের। শিষ্য পথভ্রষ্ট হলে সে ত্রুটির ভার শিষ্যকেই বহন করতে হয়। সে ভার গুরুর উপর চাপিয়ে দিলে তা কখনও সুবিচার হয় না। গুরু সর্বদাই শিষ্যের মঙ্গল কামনা করেন এবং কল্যাণের পথই দেখিয়ে থাকেন। কিন্তু সেই কল্যাণ সাধনে যদি শিষ্যের সাধনায় ত্রুটি থাকে, তবে তা একান্তই শিষ্যের অপারগতা।

শিক্ষা: বিদ্যা অর্জনের জিনিস। আর অর্জন করতে হলে চাই সাধনা। সে সাধনায় গুরু উত্তরসাধক হতে পারেন বটে। তবে তার বেশি কিছু নয়। নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করতে, এবং নিজের শিক্ষাকে চিরস্থায়ী করতে, যে সাধনার প্রয়োজন তা শিষ্যকেই সঠিকভাবে করতে হয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Jobedali

Call

বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে হয়, গুরু উত্তরসাধক মাত্র

মূলভাব : শিক্ষার পূর্ণতার দিকে অগ্রসর হতে হলে মানুষকে নিজস্ব প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে এবং সুশিক্ষিত হওয়ার জন্য স্বশিক্ষা বা নিজে নিজে শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। 

সম্প্রসারিত ভাব : শিক্ষা সম্পূর্ণভাবেই অর্জন সাপেক্ষ। শিক্ষালাভের জন্য বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। ধাপে ধাপে এগিয়ে শিক্ষার্থীগণ সেসব প্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রী অর্জন করে এবং শিক্ষিত হিসেবে পরিচিত হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষাগুরু প্রতিটি ছাত্রের জন্য পথ প্রদর্শক। শিক্ষক ছাত্রের জ্ঞান জীবনের স্রষ্টা। শিক্ষক ছাত্রের ভবিষ্যৎ জীবন গঠনের পবিত্র দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু ছাত্র যদি শিক্ষাগুরুর নির্দেশ, আদেশ, ‍উপদেশ পালন না করে তাহলে তার জীবন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। শিক্ষক শিক্ষা দান করেন এবং কিভাবে শিক্ষা অর্জন করতে হবে তার পথ নির্দেশ করে দেন। কিন্তু ছাত্র যদি সে শিক্ষা গ্রহণ না করে তাহলে শিক্ষকের কিছু করার থাকে না। শিক্ষাগুরু তাঁর শিষ্যকে ভালো-মন্দ, সত্য-মিথ্যা ও ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য বুঝিয়ে দিয়ে তাকে সঠিক পথ দেখিয়ে দেন। শিষ্য সে পথ অনুসরণ করে জীবনকে সার্থক করে তুলবে এটাই কাম্য। বস্তুত জ্ঞানকে আত্মস্থ করার জন্য আত্মপ্রয়াসের কোন বিকল্প নেই। শিক্ষার পরিধি অনেক বড়। ‘দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত শিক্ষা লাভের সময়।’ তাই যথেষ্ট জ্ঞান অনুশীলন ছাড়া কেউ সুশিক্ষিত হতে পারে না। অনেক স্বশিক্ষিত ব্যক্তি প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি ছাড়াও দেশ ও জাতি তথা বিশ্বমানবের কল্যাণের জন্য অনেক কিছু করে গেছেন। দৃষ্টান্তস্বরূপ- সক্রেটিস, এরিস্টটল, প্লেটো, নিউটন, গ্যালিলিও, কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম প্রমুখের নাম উল্লেখ করা যেতে পারে। তাঁরা বিদ্যার সাধনায় নিজেকে সুশিক্ষিত হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন বলেই মরেও অমর হয়ে আছেন। 

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে যথার্থ জ্ঞানার্জনের জন্য জ্ঞানের রাজ্যে বিচরণ করতে হয়। সুশিক্ষার জন্য নিজের উদ্যোগের প্রয়োজন হয়। সেজন্য সারাজীবন ধরে মানুষের জ্ঞান সাধনা চলে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ