Call

উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, ভয় নাই ওরে ভয় নাই নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই। ,

মানুষ পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর মৃত্যুবরণ করে। মানুষের মৃত্যুর পর স্বভাবতই তাকে আর কেউ মনে রাখে না। জন্ম ও মৃত্যুর এই মাঝামাঝি সময়ে মানুষ যে সময়টুকু পৃথিবীতে অবস্থান করে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই সময়ের কর্মফলই তার পরিচয়কে সুস্পষ্ট করে। জীবনে মানুষ নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে সচেষ্ট হয়। এই প্রতিবন্ধকতাকে রুখতে তাদের নানা আয়োজন, উদ্যোগ চোখে পড়ে। লক্ষ্যকে পূরণ করতে গিয়ে কেউ বেছে নেয় অন্যায়ের পথ। ভোগ-বিলাসে মত্ত হয়ে তারা নিতান্ত আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে। জীবনাবসানকালে পৃথিবীর বুকে তারা ঘৃণার পাত্র হিসেবে চিহ্নিত হয়। জীবনে ও মরণে উভয় কালেই তারা ঘৃণিত। অন্যদিকে যারা সৎ কাজ করে, মানবকল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দেয় তারা স্থান পায় গৌরবময় ইতিহাসের পাতায়। যুগে যুগে যেসকল মানুষ আত্মত্যাগ করে গেছেন তারা হয়েছেন মহামানব। এসব মহামানব সকল ভয়-ভীতি, বাধা-বিপত্তিকে উপেক্ষা করে মৃত্যুকে জয় করেছেন। তাঁদের দেখানো পথ সকল অন্ধকারকে দূরে ঠেলে দিয়েছে আলোর সন্ধান। মানব মুক্তির জন্য তারা দ্ব্যর্থহীন চিত্তে কাজ করে গেছেন। চে গুয়েভারা, নেলসন ম্যান্ডেলা, আব্রাহাম লিংকন প্রমুখ ব্যক্তিগণের অবদান চিরদিন পৃথিবীর বুকে লেখা থাকবে তাঁদের আত্মত্যাগের জন্য। সংকট উত্তরণে এসব মহামানবের আবির্ভাব ঘটেছিল, ভবিষ্যতেও ঘটবে। সমাজ দেশ ও জাতির কল্যাণে সামান্য একটু কাজই বদলে দিতে পারে জনসাধারণের সাধারণ জীবনপরিচয়। সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে ভয়-ভীতিকে বিসর্জন দিয়ে দ্বিধাহীন চিত্তে যাঁরা নিঃশেষ জীবন দান করতে পারেন তারাই সভ্যতার অগ্রগামী পথিক।

শিক্ষা: জীবনে সফলতা অর্জনের মূল চাবিকাঠি হলো উত্তম পথটি নির্বাচন করা। মানবকল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করাই হলো সেই উত্তম পথ। তাই আমাদের মানবকল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করা উচিত।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Jobedali

Call

উদয়ের পথে শুনি কার বাণী ভয় নাই ওরে ভয় নাই

নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।

মূলভাব : বর্তমান সভ্যতা সৃষ্টির পেছনে অনেক জ্ঞানী, গুণী মনীষীর অবদান রয়েছে। তাঁরা নিজেদের জীবনকে তুচ্ছ মনে করে মানব কল্যাণে জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। এসব লোকেরা নিজের কর্মের সাহায্যে পৃথিবীতে অমরত্ব লাভ করেন।

সম্প্রসারিত-ভাব : বর্তমান এ বিশ্বমানবতার ও নবজাগরণের যুগে, প্রতি মুহূর্তে উন্মোচিত হচ্ছে নতুন কাল-পুরুষ। পৃথিবী আজ তাঁর পিয়াসী ও তৃষ্ণার্ত নয়নে অবলোকন করতে চায় নতুনকে। এ পথের যারা অনুসারী তারা মহামানব ও নবজাগরণের মন্ত্রদ্রষ্টা। কিন্তু পৃথিবীর এ নবজাগরণের সংগ্রাম খুবই কণ্টকাকীর্ণ ও সর্পিল। প্রতি পদে আছে পিছুটান ও জরাজীর্ণের সাথে সুকঠোর সংগ্রাম, আছে স্বজনহারার আর্তনাদ। এমনকি স্বীয় প্রাণও সময় সময় এতে বিসার্জিত হয়। কিন্তু এ প্রাণ ইতিহাসের অভিধানে অমর অক্ষয়। তবুও নবজাগরণের সৈনিকেরা দুর্জয় ও নির্ভয়। নবজাগরণের স্মরণে তারা সরণের ভয় করে না।

অন্যদিকে আমরা যদি ইতিহাসের এ্যালবামে চোখ বুলাই তবে দেখতে পাব যে, যখনই অন্ধকারের যবনিকা চারদিকে উন্মোচিত হয়েছে, তখনই জাগরণের ও মুক্তির প্রদীপ হাতে করে আবির্ভূত হয়েছেন যুগাবতার। তাঁর জীবন বাজি রেখে অন্ধকারের অমানিশার টুটি চেপে ধরে অকল্যাণ ও অমঙ্গলের কপালে এঁকে দিয়েছেন শান্তির পদটীকা। এ সংগ্রামী কর্মে তাঁরা তিলে তিলে নিঃশেষ করে দিয়েছেন নিজের প্রাণ, তবুও কখনো পিছপা হননি।

এঁরা এক একজন অবতার। যাঁরা অবতার, যে কোনো উপলক্ষে তাঁদের নাম সংকীর্তন ও স্মরণ-মনন আমাদের মোহমায়ার আবরণ উন্মোচনে সাহায্য করে, নিদারুণ বন্ধনে স্বার্থহীন তন্দ্রাচ্ছন্ন জীবশক্তিকে জাগরণের মুক্তিমন্ত্র শোনায়, প্রাত্যহিকতার মালিন্য আমাদের যে সত্যদৃষ্টিকে প্রতিনিয়ত অবরুদ্ধ করে রাখে, স্মরণ-মনন অনেক সময় তার উন্মিলনে বিশেষ সহায়ক হয়।

তাই যখনই এ রঙিন পৃথিবী চিন্তা ও ভোগলালসায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়, তখনই উদয়ের পথে আবির্ভাব ঘটে এসব যুগ আবতারের। তাঁরা নিঃস্বার্থ ও প্রকৃত মানবপ্রেমিক। তানাহলে তিলে তিলে মানবতার জয়গান গাইতে গিয়ে নিজেদেরকে নিঃশেষ করতে পারেন না।

জীবন উৎসর্গ করার মধ্যে মানবকল্যাণে কৃতিত্ব রয়েছে। জীবদ্দশায় যাঁরা এমন কাজ করতে পারেন, তাঁরা চিরস্বরণীয়, চিরবরণীয় হয়ে থাকেন। ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণালি অক্ষরে তাঁদের নাম লিপিবদ্ধ থাকে। কাজেই, আমাদের উচিত মানবকল্যাণে জীবন উৎসর্গ করা।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ