Jobedali

Call

চোর দোষী বটে, কিন্তু কৃপণ ধনী, তদপেক্ষা শতগুণে দোষী

মূলভাব : না বলে অন্যের জিনিস নিলে চুরি করা হয়। যারা এ কাজ করে তারা নিঃসন্দেহে চোর এবং দোষী। কিন্তু মানুষ কেন এ ধরনের কাজে প্রবৃত্ত হয় তা আমাদের অনুসন্ধান করে দেখা উচিত। জগতে বেঁচে থাকতে হলে প্রথমে আমাদের প্রয়োজন ক্ষুধার জ্বালা মিটানোর জন্য দু'মুঠো খাবার এবং লজ্জা নিবারণের জন্য পোশাক। এর পরই দরকার মাথা গোঁজার একটা ঠাঁই। কিন্তু আমাদের সমাজের বৃহত্তর অংশই অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয় বঞ্চিত। তার প্রধান কারণ সামাজিক বিধিব্যবস্থা। আমাদের সমাজে যে বিধি ব্যবস্থা প্রচলিত তার সুফল ভোগ করে এক শ্রেণীর মানুষ, বঞ্চিত হয় বেশির ভাগ । কেউ প্রচুর ধন ঐশ্বর্যে স্ফীত হয়ে বাবুয়ানা করে দিন কাটায় আর অনেকেই অসহনীয় দারিদ্রের মধ্যে দিনতিপাত করে। দারিদ্র্যের অসহ্য পীড়নে, ক্ষুধার তীব্র জ্বালায় অধৈর্য হয়ে কেউ বিধিব্যবস্থা লঙ্ঘন করে, চুরির দায়ে তখন সে দোষী , অভিযুক্ত। বিজ্ঞজনের মতে, কিন্তু ‘তুমি কি দেখতে পাওনা যে, ধনীর দোষেই দরিদ্রে চোর হয়? পাঁচ শত দরিদ্রকে বঞ্চিত করিয়া একজনে পাচশত লোকের আহার্য সংগ্রহ করিবে কেন? যদি করিল, তবে সে খাইয়া তাহার যাহা বাহিয়া পড়ে, তাহা দরিদ্রকে দিবে না কেন? যদি না দেয়, তবে দরিদ্র অবশ্য তাহার নিকট হইতে চুরি করিবে।’ বিচক্ষণ মানুষ মাত্রই এ যুক্তি চিরকাল স্বীকার করতে বাধ্য যে চোরেরা তার নিজের অভাব পূরণের জন্যই চুরি করে। আর কৃপণ ধনী লোকেরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ জমা করে অন্যকে বঞ্চিত করে চলেছে। যুগ যুগ ধরে যে কোন দেশে এ অন্যায় চলে আসছে।

তাই শুধু চোর নয়, কৃপণ ধনী তার চেয়ে অনেকগুণে দোষী।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Sumya Akter

Call

চোর দোষী বটে, কিন্তু কৃপণ ধনী, তদপেক্ষা শতগুণে দোষী

ভাব-সম্প্রসারণ : লোকসমাজে চুরি করা অশাস্ত্রীয় কাজ। শাস্ত্রসম্মত না হলেই তা অধর্মীয় বলে গণ্য হয়। সে অর্থে চৌর্যবৃত্তি অধর্মীয় আচরণ বলে নিন্দনীয়। তাছাড়া সামাজিক বিধিবিধান ও আদর্শের দিক থেকেও চুরি করা অমার্জনীয় অপরাধ। কিন্তু চুরির যে মূল কারণ অভাব, প্রয়োজনের অপ্রতুলতা, তার পরোক্ষ কারণ ধনীর অর্থ-কৃপণতা, অথচ সেজন্য কৃপণ-ধনীর শাস্তি হয় না। ওরকম ব্যয়কুণ্ঠ মানুষের মতগুণ শাস্তি হওয়াই বিধেয়।

সমাজে ধন-বৈষম্যের ফলে মুষ্টিমেয় মানুষ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে শোষণ ও বঞ্চনা করে অর্থের পাহাড় বানায়। শোষণ-বঞ্চনায় নিঃস্ব-রিক্ত হয়ে সংখ্যাধিক্য মানুষ দারিদ্র্যের প্রান্তসীমায় গিয়ে পৌঁছায়। তাদের নিত্যসঙ্গী হয় অভাব-অনটন, আর তারই তাড়নায় কেউ কেউ বাধ্য হয়ে চৌর্যবৃত্তির পথ বেছে নেয়। সমাজে যতদিন ধনবৈষম্য থাকবে, ধনী-গরিবের দুস্তর ব্যবধান থাকবে, অসদুপায়ে অর্জিত অর্থ ধনী কৃপণতা করে সঞ্চয় করবে, ততদিন একদল অভাবী মানুষকে চৌর্যবৃত্তির দিকে ঠেলে দেওয়া হবে। এজন্য চোরের স্বভাব-চারিত্র, হীন মানসিকতা যতটা না দায়ী, তার চেয়ে ঢের বেশি দায়ী কৃপণ ধনীর অর্থ-কৃচ্ছ্রতা।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ