মানুষের মৃত্যুর ব্যাখ্যা দুই ভাবে দেয়া যায়, একটা হচ্ছে ধর্মের মতাদর্শের ভিত্তিতে এবং অপরটি হচ্ছে মৃতদেহকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরীক্ষা নিরীক্ষা হতে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে। পৃথিবীতে সবচেয়ে যন্ত্রনাদায়ক হচ্ছে মৃত্যু যন্ত্রণা। ধর্ম গ্রন্থগুলোতে মৃত্যু যন্ত্রণাকে সর্বোচ্চ যন্ত্রণা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পৃথিবীর সাধারণ যন্ত্রণাগুলোর ক্ষেত্রেই মানুষ তার দুচোখের পাতাকে বন্ধ করতে পারে না। আর মৃত্যুর মত এমন কঠিন যন্ত্রণার মধ্যে মানুষ কীভাবে তার চোখকে বন্ধ করে রাখবে বিষয়টাকে নিয়ে একটু ভেবে দেখুন তাহলে এর উত্তরটা আপনি নিজে থেকেই পেয়ে যাবেন । আসলে মানুষ ত আর জীবিত অবস্থায় তার আত্মাকে দেখতে পায় না, তাই হয়ত সৃষ্টিকর্তার এ এক অপরূপ লীলাখেলা যে, মানুষ তার শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার আগে চোখ খোলা অবস্থায় দেহ থেকে আত্মা পৃথক হওয়ার দৃশ্যটাকে অবলোকন করবে। এটা শুধুই একান্ত আমার ভাবনা । এ ব্যাপারে সৃষ্টিকর্তাই ভাল জানেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলতে গেলে সেখানেও একই বিষয় লক্ষ্য করা যায় যে মানুষের শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার আগ মুহুর্তে প্রচুর পরিমানে মৃত্যু যন্ত্রণা অনুভুত হয় যার কারনে মৃত্যুবরন করতে যাওয়া ব্যাক্তির মৃত্যু ভয় এবং যন্ত্রণায় চোখগুলো বড় বড় হয়ে খোলে যায় এবং অবশেষে মৃত্যুবরন করে। চোখের পলক পড়া থেকে শুরু করে মানুষের সমস্ত অঙ্গগুলোকে মানুষের মস্তিষ্কই নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। মৃত্যুর সময় একজন মানুষের যখন হৃৎপিণ্ড বন্ধ হয়ে যায় তখন মস্তিষ্কেও অক্সিজেন সাপ্লাই বন্ধ হয়ে যায় তারপর ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের সকল প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। যে হরমোনগুলো মস্তিষ্ককে সাপোর্ট করত মানুষের সবগুলো অঙ্গকে পরিচালনার জন্য এক সময় তাও বন্ধ হয়ে যায়। তাই মৃত্যু হওয়ার আগ মুহূর্তে মানুষ মৃত্যু ভয়ে এবং যন্ত্রণায় চোখ খোলা অবস্থায় মৃত্যুবরন করে। কারন মানুষের মৃত্যু হয়ে গেলে পর্যাপ্ত পরিমান অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্ক অকার্যকর হয়ে পড়ে, তখন মস্তিষ্কের যে হরমোনগুলো চোখের পাতা খোলা এবং বন্ধ করার নির্দেশনা দিত অকার্যকর হওয়ার কারনে মস্তিষ্ক সেই ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। তাই মস্তিষ্কের নির্দেশনার অভাবে মৃত্যুর পরেও মানুষের চোখ জোড়া খোলা অবস্থায় রয়ে যায়।