রেফ্রিজারেটর কেনার ক্ষেত্রে এখন অবশ্য সতর্ক হওয়া প্রয়োজন । আপনি ঘুমিয়ে থাকলেও আপনার রেফ্রিজারেটর কিন্তু সারাক্ষণ খাবার-দাবার পাহারা দিয়ে রাখে, যাতে সেটা নষ্ট না হয়! আর এজন্যই রেফ্রিজারেটরকে সারাক্ষণ সচল থাকতে হয়। বুঝতেই পারছেন, সারাক্ষণ যেহেতু সচল থাকতে হয়, সেজন্য তার জ্বালানিও বেশি লাগে। ফলে মাস শেষে আপনাকে বিদ্যুৎ বিলের টাকাও বেশি দিতে হয়। আপনার ওপর থেকে বিদ্যুৎ বিলের এই বাড়তি বোঝা কমাতেই স্বনামধন্য হোম অ্যাপ্লায়েন্স কোম্পানিগুলো তাদের রেফ্রিজারেটরের কুলিং মেকানিজমে R600a গ্যাস (রেফ্রিজারেন্ট)-এর সংযোজন করছে। এতে করে প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কম বিদ্যুৎ খরচ হয়। ফলে মাস শেষে রেফ্রিজারেটর ব্যবহার বাবদ আপনার বিদ্যুৎ বিল অনেক কম আসে। উন্নত বিশ্ব এই গ্যাসের ব্যবহার অনেক আগেই শুরু করেছে। বাংলাদেশেরও কিছু রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ড ইতিমধ্যেই এই R600a গ্যাসের ব্যবহার শুরু করেছে। ভাবছেন, এটা আবার কি ধরনের মেকানিজম, যা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত জ্বালানি সাশ্রয়ী। তাহলে একটু পিছনে যেতে হয়। গত শতকের নব্বইয়ের দশকের কথা। জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের কারণে তখন বিশ্বজুড়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে। তার প্রভাব পড়ছে দেশে দেশে। কোনো দেশে খুব শীত পড়ছে। আবার কোনো দেশ পুড়ছে খরায়। সেই সময়ে পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন গ্রিনপিস জার্মানির ফ্রিয়ন নামের একটি কোম্পানির সাথে মিলে গ্রিনফ্রিজ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয়। সেই প্রকল্প থেকেই রেফ্রিজারেটরে R600a গ্যাস ব্যবহার শুরু হয়। উল্লেখ্য, প্রতিটি রেফ্রিজারেটরে কুলিং মেকানিজমের অংশ হিসেবে গ্যাস ব্যবহার করা হয়ে থাকে, যা ফ্রিজের কম্পার্টমেন্টকে ঠান্ডা রাখে। কিন্তু ঠা-া করার জন্য সাধারণ রেফ্রিজারেটরে R134a গ্যাস ব্যবহার করা হয়। তবে এই গ্যাস ব্যবহারের কারণে বিদ্যুৎ খরচ যেমন বাড়ে, তেমনি পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের ওজন স্তরেরও ক্ষতি হয়। তাই অদূর ভবিষ্যতে Ozone Layer Protection Act এর অধীন R134a গ্যাস নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে। এ ছাড়া পরিবেশগত ঝুঁকি ও অত্যাধিক বিদ্যুৎ ব্যবহারের কারনে অধিকাংশ উৎপাদক দেশই R134a-এর উৎপাদন বন্ধ করে দিচ্ছে। তাই আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই এই গ্যাস দুষ্প্রাপ্য হয়ে যাবে। ফলে R600a গ্যাস ব্যবহৃত হচ্ছে এমন রেফ্রিজারেটর ক্রয় না করলে, পরবর্তীতে এর সার্ভিসিং-সংক্রান্ত সমস্যায় পড়তে হতে পারে।