এই নোটটা মূলত একটি শব্দকে ঘিরে - আয়তন । সবাই জানে সবাই বোঝে, পরিবর্তনে কেউ আগ্রহী নয়। এটা ঠিক না। সেদিন পড়াতে গিয়ে ক্লাস নাইন এর একজন ছাত্র জিজ্ঞেস করছিল, একটা দেশ কতটুকু জায়গা জুড়ে আছে, সেটা বোঝাতে আমরা সাধারণ অর্থে যে শব্দটা ব্যাবহার করি, সেই শব্দটা আয়তন না হয়ে ক্ষেত্রফল হওয়া উচিত কিনা। উত্তরটা হলো হ্যাঁ। একটা দ্বিমাত্রিক বস্তু যতটুকু জায়গা দখল করে সেটা তার ক্ষেত্রফল (Area), আর ত্রিমাত্রিক বস্তু যতটুকু জায়গা দখল করে সেটা তার আয়তন (Volume) । আমরা যদি চিন্তা করতাম, একটি দেশের উপরে কতখানি জায়গা জুড়ে বায়ুমন্ডল আছে, সেখানে আয়তন ব্যবহার করা যেত। কিন্তু আমরা তো তা করি না। আমরা দেখি তার পৃষ্ঠদেশ কতখানি জায়গা জুড়ে আছে। পৃষ্ঠ বা তল দ্বিমত্রিক সুতরাং এখানে ক্ষেত্রফল শব্দটা ব্যবহার করাই শ্রেয়। ইংরেজিতেও তাই করে- বলে 'Area' of a country.
আয়তন শব্দটা ব্যুৎপত্তিগতভাবে ক্ষেত্রফল এর সমার্থক হলেও আমরা এরই মাঝে একে volume এর বাংলা পরিভাষার মর্যাদা দিয়েছি। আয়তনকে রেখেছি ত্রিমাত্রিক বস্তুদের জন্য। তাই এর দ্বিমাত্রিকে অধঃপতন মেনে নেয়া যায় না।
যেহেতু এই বিষয়টার যথার্থতা নিয়ে কারও সংশয় নেই, আসুন সবাই মিলে চেঁচামেচি করে বইগুলোতে, প্রবন্ধে সব জায়গায় শব্দটা বদলে দিই। নিজেরা তো ভুল শিখেছি, পরবর্তীতে যারা শিখবে, তারা অন্তত নিঃসংশয় থাক। চেঁচামেচি করলে যে দেশের জন্য বিশাল কোন লাভ হবে তা না, কিন্তু অনেক মানুষ সচেতন হবে। অন্তত এইটুকু জানবে এখানে একটা ঝামেলা আছে। এটাই বা কম কিসে?
তাই আসুন বলি, বলতে থাকি , আয়তন নয় ক্ষেত্রফল...
যখন কোন বস্তুর কেবল তলের (সমান পৃষ্ঠদেশের) হিসাব করা হয়, তখন একক হয় বর্গ। অর্থাৎ, বর্গমিটার, বর্গফুট, বর্গকিলোমিটার ইত্যাদি। কিন্তু যখন একটি ঘনকের আয়তন হিসাব করা হয়, তখন একক হয় ঘন। অর্থাৎ, ঘনমিটার, ঘনফুট ইত্যাদি।
একটি দেশের সিমানা মাটি থেকে আকাশ পর্যন্ত হলেও তাকে সমতল হিসাবে আয়তন নির্ণয় করা হয়, ঘনক হিসাবে নয়।
নিচের চিত্রটি দেখলে পরিষ্কার বুঝতে পারবেন:
এখানে চিত্র (a) -র আয়তন নির্ণয় করতে একক ব্যাবহৃত হয় "ঘন" এবং চিত্র (b) -র আয়তন নির্ণয় করতে একক ব্যাবহৃত হয় "বর্গ"।
আশা করি বুঝতে পেরেছেন।