হযরত লুত (আঃ)-এর স্ত্রী জাহান্নামে যাবে। কেননা, তাঁর স্ত্রী ওয়াহিলা পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম নারী, যে বনু তমীমের সরদারদেরকে সমলিঙ্গের অপকর্ম করার আহ্বান করেছিল।
লুত (আঃ)-এর স্ত্রী সমলিঙ্গ অপকর্ম প্রতিষ্ঠা করার জন্য অনেক চেষ্টা চালিয়েছিল। এর বিরুদ্ধে হযরত লুত (আঃ) তাঁর সম্প্রদায়কে পুরুষ-সমকামিতার বিরুদ্ধে প্রচারণা এবং সাথে সাথে আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস স্থাপনের জন্য আহ্বান করেন। যা তাঁকে ঐ স্থানের লোকদের দ্বারা উপেক্ষা ও তামাসার পাত্রে পরিণত হন। বনু তমীমের লোকেরা যখন পুরুষে পুরুষে যেনায় লিপ্ত ঠিক তখনই আল্লাহ তায়ালা গজব দেয়ার লক্ষ্যে প্রথম আসমানের ফেরেশতাদের সর্দার হযরত ঈসমাইল (আঃ)-এর নেতৃত্বে ১২জন ফেরেশতা হযরত লুত (আঃ)-এর ঘরে মেহমান স্বরূপ প্রেরণ করেন।
এ মেহমানদের দেখে ওয়াহিলা বনু তমীমে গিয়ে খবর দেয়, আমাদের বাড়িতে সুদর্শন ১২জন পুরুষ এসেছে। তোমরা যেতে পার। রাত শেষ হওয়ার পূর্বে লুত (আঃ) তাঁর অনুসারী সহ, তার স্ত্রী ছাড়া, সে স্থান ত্যাগ করেন। অবশেষে ফেরেস্তারা ঐ ভূমি উল্টিয়ে দিয়ে এবং প্রস্থর বৃষ্টি বর্ষণ করে সম্প্রদায়কে বিনাশ করেন। ইতিহাসে সেই স্থানটি এখন ডেড সি বা মৃত সাগর নামে পরিচিত।
আর, হযরত নূহ (আঃ)-এর সময় দীর্ঘকাল তাওহীদের প্রতি আহ্বানের পর যখন আর কেউ ঈমান আনার সম্ভাবনা থাকল না, তখন কাফিরদের মহাপ্লাবনের মাধ্যমে ধ্বংস করে দেয়া হয়। এর মধ্যে তাঁর স্ত্রীও বিদ্যমান ছিল। অবশেষে নৌকায় আরোহণ করে নূহ (আঃ) ও অন্য মুমিনরা বেঁচে যায় বলে কুরআনের বিভিন্নস্থানে বলা হয়েছে।
হযরত লুত ও হযরত নূহ (আঃ)-এর স্ত্রী যে জাহান্নামী, এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআন বর্ণিত হয়েছে, "যারা কুফরি করে তাদের জন্য আল্লাহ নূহের স্ত্রীর ও লূতের স্ত্রীর উদাহরণ পেশ করেন, তারা আমার বান্দাদের মধ্য হতে দু’জন সৎবান্দার অধীনে ছিল, কিন্তু তারা উভয়ে তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, অতঃপর আল্লাহর আযাব হতে রক্ষায় নূহ ও লূত তাদের কোন কাজে আসেনি। বলা হল, তোমরা উভয়ে প্রবেশকারীদের সাথে জাহান্নামে প্রবেশ কর।" (সুরা তাহরীম, আয়াত নং ১০)।
জনাব, এককথায় - হযরত লূত (আঃ)-এর স্ত্রী কুরআনে সীমালঙ্ঘনকারীদের অন্তর্ভূক্ত হিসেবে বর্নিত হয়েছে। এজন্য সে জাহান্নামে নিপতিত হবে। আর, কুরআনের বর্ননা অনুযায়ী সডোম ও গোমরাহ অঞ্চলের অধিবাসীদের সঙ্গে তার মৃত্যু হয়েছে এবং হযরত নূহ (আঃ)-এর স্ত্রী আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেনি বলে জাহান্নামে পদার্পণ করবে।