সিফিলিস টেস্ট এর আগে কী এন্টিবায়োটিক খেলে টেস্ট এর ফলাফল ভূল আসতে পারে যেমন এজিথ্রমাইসিন জাতীয় ওষুধ
রোগের নাম সিফিলিস
পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ১২ মিলিয়ন মানুষ সিফিলিসে আক্রান্ত হয়।
রোগ যেভাবে ছড়ায় *
আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে অনিরাপদ যৌনমিলন- সরাসরি যৌন সঙ্গম, বিশেষ করে পায়ুপথে সঙ্গম (anal sex) কিংবা মুখ মৈথুন (oral sex) করলে অথবা চুম্বন বিনিময় করলে * রোগাক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত শরীরে গ্রহণ করলে- রক্তসঞ্চালন কিংবা ইনজেকশনের মাধ্যমে * আক্রান্ত মা যে শিশুর জন্ম দেয় সেই শিশু * আক্রান্ত মায়ের দুধ পান করলে এ রোগ কখনই খাওয়ার পাত্র, চামচ, গামছা বা টাওয়েল, ন্যাপকিন, সুইমিং পুল, বাথটাব, কিংবা ব্যবহৃত জামাকাপড় দিয়ে ছড়ায় না। রোগের প্রকোপ অনুসারে এ রোগের চারটি ধাপ আছে। প্রাইমারি : আক্রান্ত হওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যেই রোগীর শরীরে পোকার কামড়ের মতো গোল গোল দাগ দেখা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সিফিলিস আক্রান্ত পুরুষের লিঙ্গমুণ্ডুতে কিংবা লিঙ্গমুণ্ডুর ত্বকে গোটা ওঠে, নারীর ক্ষেত্রে গোটা ওঠে যোনির ঠোঁট কিংবা ক্লাইটরিসে। যৌনাঙ্গ ছাড়াও এ গোটা মলদ্বার, ঠোঁট কিংবা স্তনের বোঁটাতে হতে পারে। কাছাকাছি গ্রন্থিগুলো ফুলে উঠতে পারে। মাঝে মাঝে এগুলো ব্যথাহীন এবং শক্ত হয়ে দেখা দেয়। একে শ্যাঙ্কার (chancre) বলা হয়। সেকেন্ডারি : এ অবস্থায় সাধারণত শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চুলকানি/rash-এর মতো হয় এবং নিয়মিত জ্বর, ওজন কমে যাওয়া, লিম্ফ্যাটিক গ্ল্যান্ড ফুলে যায়। এ ছাড়া কুঁচকিতে ভেজা ফোস্কার মতো দেখা দিতে পারে। ল্যাটেন্ট : এ অবস্থায় রোগ সুপ্ত অবস্থায় থাকে। টারশিয়ারি : এটা অনেকদিন চিকিৎসা না করলে হয়। এ অবস্থায় রোগীর হার্ট, চোখ, ব্রেইন এবং নার্ভে সিরিয়াস সমস্যা দেখা দেয় এবং রোগী সাধারণত বাঁচে না। এসব লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিলে সিফিলিস টেস্ট করিয়ে নিশ্চিত হন। কীভাবে জানা যাবে : কিছু ল্যাবরেটরি পরীক্ষা যেমন- VDRL, TPHA এর মাধ্যমে সিফিলিস আছে কিনা সে সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হওয়া যায়। চিকিৎসা : প্রাথমিক পর্যায়েই সিফিলিসের চিকিৎসা করান উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পেনিসিলিন শ্রেণীর ওষুধ সেবন অথবা ইঞ্জেকশন গ্রহণে এ রোগ পুরোপুরি ভালো হয়ে যায়। স্বামী-স্ত্রী বা যৌনসঙ্গী উভয়েরই চিকিৎসা নেয়া উচিত অন্যথায় এ ইনফেকশন সঙ্গীর কাছ থেকে আবার হতে পারে। প্রতিরোধ : যৌনসঙ্গীর সিফিলিস আছে কিনা নিশ্চিত হন। সিফিলিস থাকলে অবশ্যই চিকিৎসা করান। সিফিলিস আক্রান্তদের সঙ্গে কোনো ধরনের যৌনকার্যক্রমে যাবেন না। কনডম ব্যবহার করেও না। কমার্শিয়াল সেক্স ওয়ার্কারদের কাছে যাবেন না। এ রোগ কোনোভাবেই পুষে রাখবেন না।
সিফিলিস টেস্ট এর আগে এন্টিবায়োটিক খেলে টেস্ট এর ফলাফল ভূল আসবেনা কখনো ই ।
লেখক : ডাবো মেডিকেল সেন্টার, অস্ট্রেলিয়া
সিফিলিস কার্যকরভাবে এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে, বিশেষভাবে বেঞ্জাথিন পেনিসিলিন জি (বা পেনিসিলিন জি পটাসিয়াম নিউরো সিফিলিসের জন্য), বা সেফট্রায়াক্সন, এবং যাদের গুরুতর পেনিসিলিন এলার্জি আছে তাদের ক্ষেত্রে ডক্সিসাইক্লিন (গর্ভকালীন এই জাতীয় ওষুধ ব্যবহার নিষেধ) বা অ্যাজিথ্রোমাইসিন দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে। তবে বিশেষ করে মনে রাখতে হবে সিফিলিসের চিকিৎসা অবশ্যই স্বামী - স্ত্রী অথবা যৌনসঙ্গী উভয়কেই গ্রহণ করতে হবে। রোগ ভালো না হওয়া পর্যন্ত সহবাস করা যাবেনা অথবা করলেও ভালো মানের কনডম ব্যবহার করতে হবে।