সামাজিক মাধ্যম গুলোর অবক্ষয়তাই যুবক সমাজ ধ্বংসের মূল কারন


বর্তমান সময়ে পৃথিবী আমাদের হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে যে প্রযুক্তি তার নাম আমরা দিয়েছি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা সোস্যাল মিডিয়া।এটি আমাদের পুরোনো সেই দিন গুলোর কথা ভুলিয়ে দিয়েছে যে কোন এককালে আমরা চাইলেই প্রিয় জনের খোজ নিতে পারতাম না। চিঠি পাঠিয়ে প্রতিদিন ডাক পিওনের বাইসাইকেল এর ঘন্টার টীং টিং আওয়াজের অপেক্ষায় কত যে পথ চেয়ে বসে থাকা।

আজ আর সেই সব দিন নেই।আর মানুষ সেই দিন গুলোকে মনে ও করে না খুব একটা।নিত্য নতুন প্রযুক্তি আমাদের সব কিছু কেই আপন করে দিয়েছে।আর আমার লেখা সেই সব সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম কি আর আমাদের যুবক দের মাঝে তার ক্ষতিকর কোন প্রভাব কি পড়েছে?

তার আগে আসুন আমরা জেনে নেই সোস্যাল মিডিয়া কি?

আমরা যাকে ফেইসবুক নামে চিনি এটি একটি এই সোস্যাল মিডিয়া।এ রকম আরো অনেক রয়েছে যেমনঃ টুইটার,মাইস্পেস,গুগল প্লাস,ইন্সটাগ্রাম,ইউ টিউব ইত্যাদি।

তাহলে আমরা একে সংজ্ঞায় রুপান্তরিত করলে যা দ্বারায় তা হলঃআমরা যার মাধ্যমে আমাদের নিত্যদিনের খবর সামান্য সময়ের মাধ্যমে একস্থান থেকে চাইলে হাজারো মানুষের কাছে লিখিত বা ভিডিওর মাধ্যমে একই সময়ে পাঠাতে পারি তার নাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।আর বর্তমান সময়ে ফেইসবুক সবচেয়ে বড় সামাজিক মাধ্যম।যা প্রায় ১ বিলিয়ন মানুষ ব্যবহার করে।

সামাজিক যোগাযোগের এই মাধ্যম আমাদের জীবন কে অনেক সহজ করে দিয়েছে আর এর ই মাধ্যমে আমাদের অনেক চাহিদাই খুব সহজে পূর্নতার মুখ দেখে।যেহেতু সামাজিক মাধ্যমের সুফল লেখা   আমার লক্ষ না তাই আমি এটা কে এড়িয়ে আজ যে বিষয় লিখব তা হল এই মাধ্যম গুলো আমাদের যুব সমাজের মাঝে কি ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।১ বিলিয়ন মানুষ পৃথিবী নামক যে গ্রহতে ফেইসবুক চালায় তার অধিকাংশ ই যুবক তাকে কোন সন্দেহ নেই।যা নিতান্ত ই আমাদের আগামী প্রজন্ম এর জন্য ভাল একটি দিক।কিন্তু সমস্যা দেখা যায়  যখন এই ফেইসবুক নামক  বস্তুটি কিংবা অন্য যাই হোক না কেন আমাদের যুবকরা তাদের পড়ার টেবিলে নিয়ে এসে ব্যবহার করে। যখন আমি এটা কে কোন ডানা কাটা পরী খুজে নিতে ব্যাবহার করি।যখন এটা দ্বারা সব খুব সহজেই করা যায় বিধায় যাকে তাকে হয়রানী করি।যখন কোন রাজকুমারী খুজে নিয়ে তার সাথে কিছু দিন চ্যাটিং করে দেখা সে করতে না চাইলে ও আমার জন্য দেখা করে আর তখন দেখি সে তো কোন রাজকুমারী নয়ই কোন কুমারী ই নয় তবে কোন কুমারীর মা কিংবা ভাই ও হতে পারে। আর যদি যে কুমারী হয়েও থাকে তা হয় আমার চাহিদার পূর্ন বিপরীত।আর ঘাবলা টা শুরু সেখান থেকে ই আমি তাকে হয়তো ভুলতে পারি না,নয়তো প্রতিশোধ নিতে চাই তার এই প্রতারনার।আর মাঝে মাঝে যে মানিব্যাগ থেকে শুরু করে আমার পরিধানের শেষ বস্ত্র খানি ও হারিয়ে ফেলি না তা কিন্তু না।আবার মাঝে মাঝে সব হিসেব চুকিয়ে বিয়ের পাটিতে গড়ালে ও শেষ অবধি আর ভাল কাটে না।

 

এতো গেল একটি দিক।বাবা তার ছেলে কে কিংবা মেয়ে কে কি কষ্ট করেই না পড়াশুনা করাচ্ছে কিন্তু ফলাফল কোন দিন ই ভাল আসে নি।পুরোনো হিসেব মিলাতে গিয়ে দেখা গেল খুব বেশী না সে মাত্র তার ২৪ ঘন্টার ১৮ ঘন্টাই দিয়েসে যোগাযোগ রক্ষা করতে।

এক জরিপে দেখা গেছে,

 সময়                            ১০০% থেকে                 

১ ঘন্টা থেকে একটু বেশী           ৩১,৭

২-৩ ঘন্টা                     ৪২,৬ 

৪-৫ ঘন্টা                     ১৮,৩

৬-৭ ঘন্টা                     ৪

৮ থেকে আর বেশী               ৩,৪

মোটঃ                       ১০০%     

সময় যুবকেরা সোস্যাল মিডিয়ার সামনে ব্যয় করে।অপর দিকে পড়ার টেবিল এর তুলনায় খুব ই কম।

সোস্যাল মিডিয়ার সবচেয়ে খারাপ এ মারাত্মক যে দিক তা হল ভিডীও সাইট গুলো। এটা কে য দি ও আমরা পুরাপুরি সোস্যাল যোগাযগের হিসেবে নাও বলি তবে সামাজিক মাধ্যম ই হয়ে উঠেছে আমাদের জন্য আজকাল। এই ভিডিও সাইট গুলো তে আমাদের জন্য খারাপ সে খবর অপেক্ষা করছে তা হল এই সাইটে নৈতিক অবক্ষয় জনিত ভিডিও গুলোর প্রবেশ কারী অন্য গুলোর থেকে প্রায় ৪০ ভাগ বেশী।আর তার ৮০ ভাগ এর বয়স ই ১৬-২৩।

আমাদের সমাজের এই নৈতিক  অবক্ষয় ও কিন্তু আমাদের এই হাতে পাওয়া মাধ্যম গুলো থেকে ই হয়েছে। যা আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি। এই অবক্ষয় এখন ই ঠেকাতে না পারলে আমরা আর আমাদের যুব সমাজ পুরো টাই অতলে হারিয়ে যাওয়া কেহ ঠেকাতে পারবে না।

 কিভাবে আমরা আমাদের যুবকদের ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারিঃ

১/ আমাদের যুবকদের মাঝে ধর্মীয় চেতনা জাগিয়ে তোলা আবশ্যাক।সেটা যে ধর্মের ই হোক না কেন।কারন কোন ধর্মই আমাদের নৈতিক অবক্ষয় শিখায় না।

২/আমাদের যুবকদের জন্য সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু হতে হবে তারা পরিবার।যাতে সে কোন ভালবাসার অভাবে নতুন ভালবাসা না খুজে ।

৩/বাবা মাকে আমাদের মেয়েদের বা ছেলেদের জানাতে হবে তার দৌড়াত্ম কত।মানে তার সামজিক অবস্থান থেকে সে কি করতে পারে আর কি পারে না।

৪/শুধু ভালবাসা নয় প্রয়োজনে শাসন ও তাদের থেকে কাম্য।কারন যিনি ভালবাসেন শাসন সেই করতে পারেন।

৫/বাবা মাকে খোজ রাখতে হবে কে বা কারা আমার ছেলে বা মেয়ের বন্ধু হচ্ছে।

৬/ইন্টারনেট ব্যবহারে আমরা কি করতে পারি না সে শিক্ষা আমাদের পরিবার থেকে ই পাওয়া উচিত।

৭/ফেইসবুক থেকে সকল মাধ্যম গুলোতে বাবা এবং মায়েদের ফ্রেন্ড রাখা উচিত,এবং সকলের প্রোফাইল পাবলিক থাকা উচিত।

৮/ছেলে বা মেয়ে কোন ভুল করে ফেললে ও তাকে কাছে নিয়ে আপন করে আবার নিজেকে জাগিয়ে তুলতে সাহায্য করতে হবে।

উপোরোক্ত দিক গুলো থেকে আরো ভাল অনেক দিক আমার জানার বাহিরে আছে যা আমদের কেই খুজে নিয়ে আমাদের সন্তানদের মানুষ হয়ে সকল নৈতিক অবক্ষয় থেকে বাঁচাতে হবে।


সোর্স

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ