ইসলাম এ যদি কোন দিবস পালন করা হারাম হয়ে থাকে তাহলে কি নববর্ষ পালন করা হারাম? ব্যাখ্যা দিলে ভালো হবে
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

বর্তমান সমাজে যেভাবে দিবস পলন করা শুরু হয়েছে সেটা বিজাতিয় সংস্কৃতিকে ও হার মানাবে। অথছ এটা স্পষ্ট হারাম। অনেক ক্ষেত্রে শিরিকী কাজও হয়ে থাকে। শরীয়ত কোন দিবস পালন করা সমর্থন করে না। ইসলামী শরীয়ত যদি দিবস পালন করা সমর্থন করতো তাহলে ৩৬৫ দিনের কোন না কোন একটা দিন দিবস হিসেবে পালন করা হতো, কারন ইসলামী ইতিহাস তালাশ করলে দেখতে পাবেন কত শত স্বরণীয় দিন আছে যেগুলো বর্তমান দিবসের তুলনায় শত শত গুন বেশী মর্যদাসম্পূন্ন। অথচ, নবীযুগ থেকে সাহাবাদের যুগ অর্থাত যে যুগকে সর্বশ্রেষ্টযুগ বলা হয় তাদের কোন যুগে এমন ইতিহাস নাই যে তারা দিবস পালন করেছেন। আজ কত ধরনের দিবস পালন করত ইসলাম বিরুধী কাজ তথা হারাম কাজে লিপ্ত হচ্ছি সে খবর কি আমাদের আছে? আসুন জেনে নেই দিবস পালন করা কেন হারাম। দিবস পালন করা হারাম হওয়ার অনেকগুলো কারন আছে। প্রথম কারনঃ ইসলামে দুটি দিবস ব্যতীত অন্য তৃতীয় কোন দিবস পালন করা নিষেধ। ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧَﺎ ﻋَﻠِﻲُّ ﺑْﻦُ ﺣُﺠْﺮٍ ﻗَﺎﻝَ ﺃَﻧْﺒَﺄَﻧَﺎ ﺇِﺳْﻤَﻌِﻴﻞُ ﻗَﺎﻝَ ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺣُﻤَﻴْﺪٌ ﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲِ ﺑْﻦِ ﻣَﺎﻟِﻚٍ ﻗَﺎﻝَ ﻛَﺎﻥَ ﻟِﺄَﻫْﻞِ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ ﻳَﻮْﻣَﺎﻥِ ﻓِﻲ ﻛُﻞِّ ﺳَﻨَﺔٍ ﻳَﻠْﻌَﺒُﻮﻥَ ﻓِﻴﻬِﻤَﺎ ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻗَﺪِﻡَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔَ ﻗَﺎﻝَ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻜُﻢْ ﻳَﻮْﻣَﺎﻥِ ﺗَﻠْﻌَﺒُﻮﻥَ ﻓِﻴﻬِﻤَﺎ ﻭَﻗَﺪْ ﺃَﺑْﺪَﻟَﻜُﻢْ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺑِﻬِﻤَﺎ ﺧَﻴْﺮًﺍ ﻣِﻨْﻬُﻤَﺎ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻔِﻄْﺮِ ﻭَﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﺄَﺿْﺤَﻰ অর্থ, আনাস (রা) বলেন, “রাসুল (সা) মদীনায় আগমন করে দেখলেন যে, মদীনাবাসীরা দুটি ঈদ (আনন্দের দিন) পালন করছে ৷ তা দেখে রাসূল (সা)বললেন, জাহীলিয়াতের যুগে তোমাদের দুটি দিন ছিল যাতে তোমরা খেলাধূলা, আনন্দ-ফুর্তি করতে এখন ঐ দিনগুলির পরিবর্তে আল্লাহ্তো মাদেরকে দুটি উত্তম দিন প্রদান করেছেন, ঈদুল ফিৎর ও ঈদুল আযহার দিন। ( নাসাই: ৩/১৯৯ হাদীস নং ১৫৫৫ হাদীস সহীহ আবূ দাউদ: ১০০৪,) এই হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেছেন ঐ দুটি দিনের পরিবর্তে আল্লাহ্ তোমাদেরকে দুটি উত্তম দিন প্রদান করেছেন। এখানে যদি আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলতেন তোমাদের ছিল দুটি দিন, আর আল্লাহ্ তোমাদেরকে দিয়েছেন আরো দুটি দিন। তাহলে মুসলিমরা ১৪০০ বছর যাবৎ ৪টি উৎসবের দিন পালন করে আসতো। যেহেতু আল্লাহর রাসুল (সাঃ) অন্য মানব রচিত গুলো পরিবর্তন করে আল্লাহর পক্ষ থেকে দুটি উত্তম দিন প্রদান করেছেন তাই অন্য যে কোন দিবস পালন করা এমনেতেই বাতিল হয়ে যায়। তাই কোন মুসলিমদের জন্য অন্য কোন প্রকার দিবস পালন করা বৈধ নয়, হোক সেটা জন্মদিন, শোক দিবস, মাতৃভাষা দিবস, বিজয় দিবস, নববর্ষ ইত্যাদি যা-ই হোক না কেন, তা পালন করা যাবে না। দ্বিতীয় কারনঃ এই ধরণের যত প্রকার দিবস রয়েছে সেগুলোর কোনটাই মুসলিমদের সংস্কৃতি নয়। যদি এগুলো মুসলিমদের সংস্কৃতি হত তবে এগুলো সাহাবাদের যুগ থেকেই পালিত হয়ে আসতো। তাই যেহেতু এগুলো মুসলিমদের সংস্কৃতি নয় তাহলে বুঝাই যাচ্ছে যে এগুলো কাফের- মুশরিক বিজাতীয়দের সংস্কৃতি থেকে এসেছে। আর এ প্রসঙ্গে রাসূল ﷺ বলেছেন, ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ” ﻣﻦ ﺗﺸﺒﻪ ﺑﻘﻮﻡ ﻓﻬﻮ ﻣﻨﻬﻢ ” অর্থ, যে ব্যক্তি যে জাতির অনুকরণ করবে, সে ব্যক্তি সেই জাতিরই একজন বলে গণ্য হবে’ ( আবূ দাঊদ হা/৪০৩১) । অন্য হাদীসে নবী মুহাম্মাদ ( ﷺ ) বলেন, “যে ব্যক্তি বিজাতির তরীকা অনুযায়ী আমল করে, সে আমাদের কেউ নয়।”(ত্বাবারানী, সিলসিলাহ সহীহাহ ২১৯৪নং) আর সব চেয়ে বড় কারন যেটা সেটা হলো, এই দিন সমূহকে কেন্দ্র করে অনেক ধরনের শিরিকী কাজ করে থাকে। যেমন, শহীদ মিনারে ফুল দেয়া ইত্যাদি। তাই অনেক উলামায়ে কিরাম কিছু কিছু দিবস পালন করাকে শিরিকও বলেছে। এরপরেও কি আমরা সতর্ক হবো না? তাই আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বিজাতীয়দের সংস্কৃতি বর্জন করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ওয়াজিব। অতএব মুসলিমরা যদি জান্নাতের আশা করে এবং জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচতে চায় তবে তারা আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসুলের দিকে ফিরে আসুক। আল্লাহ পাক আমাদের বুঝার তাওফীক দান করুক। আমীন। শাইখ মুফতি ফখরুল ইসলাম নিজামপূরী সাহেব এর লেখনী থেকে

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
TarikAziz

Call

এটা কেবল মুসলিম ধর্মে অবৈধ। অন্য ধর্মে এটি পালন বৈধ। এর জন্য কিছু প্রমাণ : নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজরতের পর মদীনা শরীফ গিয়ে ঐ এলাকাবাসীর দুটি উৎসব বন্ধ করেছিলেন। একটি হচ্ছে, বছরের প্রথম দিন উদযাপন বা নওরোজ; অন্যটির নাম ছিলো ‘মিহিরজান’। এ উৎসবের দুটির বিপরীতে চালু হয় মুসলমানদের দুই ঈদ। (তাফসিরসমূহ দেখতে পারেন) মূলত: নওরোজ বা বছরের প্রথম দিন পালন করার রীতি ইসলামে নেই, এটা পার্সী মজুসীদের (অগ্নিউপাসক) অুনকরণ। এ সম্পর্কে হাদীস শরীফে এসেছে: “যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করে সে তাদের দলভুক্ত।” তাই যে কোন নওরোজ সেটা থার্টি ফাস্ট নাইট হোক, পহেলা নববর্ষ হোক কিংবা পহেলা মুহররম হোক, বিজাতীয় রীতি হিসেবে প্রতেকটি ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ সম্পর্কে-------- ১) ইমাম ফখরুদ্দীন উসমান বিন আলী আয যাইলায়ী বলেন: “নওরোজ ও মেলার নামে কিছু দেয়া নাজায়েয। এ দুই দিনের নামে প্রদত্ত হাদিয়া হারাম; বরঞ্চ কুফর”। (গ্রন্থ - তাবইনুল হাকায়েক : ৬/২২৮) ২) ইমাম হাফস কবীর রহমতুল্লাহি বলেন: ক) “নওরোজ বা বছরের প্রথম দিন উপলক্ষে যদি কেউ একটা ডিমও দান করে, তবে তার ৫০ বৎসরের আমল থাকলে তা বরবাদ হয়ে যাবে" খ) “যে ব্যক্তি নওরোজের দিন এমন কিছু খরিদ করল যা সে পূর্বে খরিদ করত না, এর মাধ্যমে সে যদি ঐ দিনকে সম্মান করতে চায় তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে।” ৩) হাম্বলি মাযহাবের ফিকাহর গ্রন্থ ‘আল-ইকনা’ তে বলা হয়েছে- “কাফিরদের উৎসবে যোগদান করা, সেই দিন উপলক্ষে বেচাবিক্রি করা ও উপহার বিনিময় করা হারাম”। উপরক্ত দলিল দেখলে এটা সহজেই বুঝা সম্ভব, থার্টি ফাস্ট নাইট, পহেলা নববর্ষ, পহেলা মুহররম শুধু পালন করা হারাম নয়, বরং ঐ দিবস উপলক্ষে কাউকে শুভেচ্ছা জানানো, কিংবা ঐ দিবসগুলো উপলক্ষে কোন অফার দিলে সেটা গ্রহণ করা, ঐ দিবস উপলক্ষে কেনাবেচা করা, খাদ্যগ্রহণ করা হারাম ও ক্ষেত্র বিশেষে কুফরী। (সংগৃহীত)

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ