Call

প্রথমে খুব সংক্ষেপে চার মাযহাবের সংক্ষিপ্ত পরিচয় জেনে নিই- ১. হানাফী মাযহাবঃ ইমাম আবু হানীফা নামে একজন প্রসিদ্ধ তাবে তাবেয়ী ছিলেন, যার জন্ম ৮০ হিজরীতে ও মৃত্যু ১৫০ হিজরীতে। আবু হানীফা তার উপনাম ছিলো কারণ তার প্রথম সন্তান ছিলো মেয়ে যার নাম ছিলো হানীফা (আবু হানীফা - হানীফার বাবা). তার আসল নাম ছিলো নুমান বিন সাবিত। আর "মাযহাব" শব্দের অর্থ হচ্ছে পথ বা চলার পদ্ধতি। সুতরাং, হানাফী মাযহাব কথাটির দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে ইমাম আবু হানীফার চলার পদ্ধতি বা তরীকা। ২. মালেকী মাজহাবঃ ইমাম মালেকের জন্ম ৯০ হিজরীতে আর তার মৃত্যু ১৭৯ হিজরীতে। তাঁকে কেন্দ্র করে যে মতবাদের সৃষ্টি হয়, তাকে মালেকী মাজহাব বলে। ৩. ইমাম শাফেয়ীর জন্ম ১৫০ হিজরীতে আর তার মৃত্যু ২০৪ হিজরীতে। তাঁকে কেন্দ্র করে শাফেয়ী মাজহাবের সূচনা হয়। ৪. ইমাম আহমদ বিন হাম্বলের জন্ম- ১৬৪ হিজরীতে আর তার মৃত্যু ২৪১ হিজরীতে। তাঁকে কেন্দ্র করে তার ভক্তরা যে মতবাদে প্রচার করে তা হাম্বলী মাজহাব বলে সর্বাধিক পরিচিত। এছাড়া রফাদানী বলে পরিচিত আরেকটি মতবাদ বিশ্বে চালু আছে, যারা ছলাতে রাসূলুল্লাহর দেখানো পথ অনুযায়ী রফঊল ইয়াদাইন করে বলে তাদের কে রফাদানী বলে অভিহিত করা হয়। যা এক প্রকার গালি-ই বটে। এ তরীকার লোকগুলো নির্দিষ্ট কোন মাযহাবের উপর অন্ধভাবে অটল থাকাকে হারাম মনে করে। আর এই বৈশিষ্ট্য ছিল সলফে সালেহীনেরও। যারা সর্বক্ষেত্র কুর আন ও সহীহ হাদীসের নিঃশর্ত অনুসরণকে জরুরি মনে করতেন। রাসূল (সাঃ) কর্তৃক নাজী ফেরকার যে বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে, তা এ দলের মধ্যে পূর্ণমাত্রায় বিদ্যমান। এর মধ্যে বাংলাদেশ সহ গোটা বিশ্বে হানাফী মাজহাবটি সর্বাধিক প্রসিদ্ধ। যে মাযহাবের সৃষ্টি হয়েছে ৪০০ হিজরীতে। তাহলে বুঝা গেল, যে সকল ইমামদের নামে তাদের ভক্তরা মাযহাব বানিয়েছে, ঐ সকল ইমামদের জন্মের আগে কোন মাযহাব ছিলনা এবং তাদের যামানায়ও মাযহাব হয় নি। মাযহাব হয়েছে তাদের মৃত্যুর বহু দিন পরে। ইমাম আবু হানিফার মৃত্যুর আড়াইশো বৎসর পরে। তাহলে আমরা মাযহাব মেনে চলি কেন ? তাছাড়া চার ইমামের জন্মের পূর্বেও তো ইসলাম ছিল, মুসলমান ছিল। তখন তাদের কারো মত ও পথের দরকার হয় নি, এখন দরকার কেন ? তাছাড়া কেউই ভূলের উর্দ্ধে নয়। তখনও মুসলমানদের কাছে কোরআন হাদীস ছিল, এখনও আছে। কাজেই কোরআন ও সহীহ্ হাদীসই যথেষ্ট। চার মাযহাবের কোন একটিও মেনে চলার জন্য আল্লাহ ও রাসূলের (সাঃ) নির্দেশ নাই। তবে হ্যাঁ, দ্বীন বুঝার সহজতার জন্য এই মাজহাবগুলোর সহযোগীতা গ্রহণ করতে পারেন, তা স্রেফ দ্বীন বুঝার নিয়তে, তাক্বলিদ বা গোড়া অন্ধভাবে কখনোই নয়। আল্লাহ আমাদের হক্ব বুঝার তাওফিক দিন। আমীন!

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ