আমরা জানি যদি কেউ ছবি তৈরি করে তাহলে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তাকে সেই ছবিতে প্রাণ সঞ্চার করতে বলবেন। সে না পারলে তাকে কঠিন শাস্তি দিবেন। এই বিধান কি মোবাইলের ছবির বেলায় ও প্রযোজ্য আমরা যে মোবাইলে ছবি রাখি আর কি।
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

প্রশ্নটি বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্তপূর্ণ। বর্তমান ইন্টারনেট এর যুগে ছবি তোলা/তোলান, ভিডিও করা বা করানো কোন প্রেক্ষাপটে কতটুকু জায়েজ? ছবি তোলা বা ভিডিও করা বর্তমান সমাজের একটি ব্যাধি। আমরা অনেকেই ফেসবুক-এ সুন্দর সুন্দর ছবি আপলোড করি। তাতে অনেকে কমেন্ট দেয়, লাইক দেয়। এই লাইক/কমেন্ট পেতে আরো বেশি ছবি আপলোড করি। প্রাণীর ছবি তোলা হারাম এমন বিষয় ত আমরা সবাই শুনে থাকি। বিষয়টা যদি কবিরা গুনাহ হয় তাহলে এটি হেলাফেলার বিষয় নহে। আবার দেখি ঈদ এর নামাযের শেষে অনেকেই আমরা ছবি তোলায় ব্যাস্ত হয়ে পড়ি। অনেক নামযের ভিডীও ও হয়।এক জাইগায় দেখেছিলাম পাত্রি পক্ষকেও ছবি দেয়ার নিয়ম নেই। ছেলে সরাসরি দেখবে। আর এক জাইগায় দেখলাম প্রিন্ট করার আগ পর্যন্ত কম্পিউটারে রাখা জায়েয আছে যদি না তা অশ্লীল না হয় । এই বিষয়ে কুরআন-হাদিস-এর আলোকে বিস্তারিত লেখা আশা করি। সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ্র। জীবন্ত প্রাণীর ছবি তৈরি করা বৈধ নয়, যার মধ্যে মানুষ, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণীর ছবি অন্তর্ভুক্ত। কারণ যারা এরূপ ছবি তৈরি করে তারা অভিশপ্ত। তবে প্রয়োজনের ক্ষেত্রে ছবি তোলা বৈধ, যেমন: আইডি কার্ড বা পাসপোর্টের জন্য ছবি তোলা ইত্যাদি। ছবির নিষেধাজ্ঞা যেখানে প্রযোজ্য: স্থায়ী চিত্রের ক্ষেত্রে ছবি তোলা নিষিদ্ধ, তা কাগজে ছাপা হোক বা কাপরে ছাপা হোক বা দেয়ালে অংকন করা হোক ইত্যাদি। আর অস্থায়ী চিত্র যা কোন ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম ছারা দেখা যায় না, যেমন ডিজিটাল ছবি যা মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে অথবা কম্পিউটার দিয়ে তোলা হয়, যা স্ক্রিনে দৃশ্যমান হয় আবার অদৃশ্য হয়ে যায়। এরূপ অস্থায়ী ছবি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পরে না। যা বিভিন্ন (আরব) আলেমেরা বলেছেন। শেইখ ইবনে উথাই’মিন বলেছেন: আধুনিক ছবি দুই ধরনের হয়ে থাকে: ১. যেসব ছবি, যা কোন কিছুর সাহায্য ছারা দেখা যায় না, আমাকে বলা হয়েছে যেমন ভিডিও ক্যামেরার দৃশ্য। এরূপ ছবির ক্ষেত্রে কোন নীতিমালা নেই এবং এগুলি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পরে না। যেসব আলেমরা প্রিন্ট করা ছবির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করেছেন তারাই বলেছেন এরূপ অস্থায়ী ভিডিও ক্যামেরার ছবির ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই। ২. যা কাগজে ছাপানো হয়। শেইখ ডা: খা’লিদ আল-মুস’হাকি (র:)-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল: আমি মোবাইল দিয়ে স্মৃতির জন্য আমার বাচ্চার ছবি তুলি। কিন্তু আমি পড়েছি যে স্মৃতির জন্য ছবি তোলা শরীয়ত মতে হারাম। আমার এই ছবি তোলা কি শরীয়তে নিষিদ্ধ অথবা এটা কি ঠিক আছে মোবাইলে ফোনের ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলা। এর ক্ষেত্রে দলিল কি? আমি এও পড়েছি যে কম্পিউটার এবং মোবাইলের ছবিকে ‘ছবি’ বলা হয় না, কারণ তা রাখা হয় কম্পিউটার বা মোবাইলের মেমোরিতে এবং তা ছাপানো হয় না। আমি যদি কম্পিউটার বা মোবাইলে ছবি খুলি তাহলে তাতে ফেরেশতারা কি থাকবে না চলে যাবে? আমি আশা করছি আপনি আমাকে বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে বুঝাতে পারবেন কারণ এটি খুব বিভ্রান্তিকর বিষয়। আল্লাহ্ যেন আপনাকে ভাল প্রতিদান দেয়। তার উত্তর: ‘মোবাইল বা কম্পিউটার বা ভিডিও টপের ছবিগুলি, শরীয়তের ছবির নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পরে না কারণ এই ছবিগুলোর কোন আকার নেই এবং তা স্থায়ী নয় , যতক্ষণ না তা কাগজে ছাপা হয়। এ ভিত্তিতে মোবাইলে বা কম্পিউটারে স্মৃতির জন্য ছবি রাখাতে কোন সমস্যা নেই, যদি না তা দ্বারা কোন হারাম কাজ করা হয়। এবং আল্লাহ্ই ভাল জানেন’… এই নীতির ভিত্তিতে, কেউ যদি মোবাইল দিয়ে বা ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে দেয় তাতে কোন সমস্যা নেই, যদি না তা ছাপানো হয়। কিন্তু মেয়েদের ক্ষেত্রে এরূপ ছবি তোলা শরীয়ত সম্মত নয়, কারণ তা ফিতনার কারণ হবে এবং তা ছেলেদের মধ্যে খারাপ কামনা-বাসনা তৈরি করবে। সুত্রঃ https://islamqabangla.wordpress.com/2013/07/18/বর্তমান-ইন্টারনেট-এর-যুগ/

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ