আসুন, প্রথমে দেখি অন্য ধর্মাম্বলীদের বেহেশতে যাওয়ার ব্যাপারে আল্লাহ কোরআনে কি বলেছেন:
كُنتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللّهِ وَلَوْ آمَنَ أَهْلُ الْكِتَابِ لَكَانَ خَيْرًا لَّهُم مِّنْهُمُ الْمُؤْمِنُونَ وَأَكْثَرُهُمُ الْفَاسِقُونَ
তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। আর আহলে-কিতাবরা যদি ঈমান আনতো, তাহলে তা তাদের জন্য মঙ্গলকর হতো। তাদের মধ্যে কিছু তো রয়েছে ঈমানদার আর অধিকাংশই হলো পাপাচারী।
(সূরা: আল ইমরান | আয়াত: ১১০)
وَإِنَّ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ لَمَن يُؤْمِنُ بِاللّهِ وَمَا أُنزِلَ إِلَيْكُمْ وَمَآ أُنزِلَ إِلَيْهِمْ خَاشِعِينَ لِلّهِ لاَ يَشْتَرُونَ بِآيَاتِ اللّهِ ثَمَنًا قَلِيلاً أُوْلَـئِكَ لَهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ إِنَّ اللّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ
আর আহলে কিতাবদের মধ্যে কেউ কেউ এমনও রয়েছে, যারা আল্লাহর উপর ঈমান আনে এবং যা কিছু তোমার উপর অবতীর্ণ হয় আর যা কিছু তাদের উপর অবতীর্ণ হয়েছে সেগুলোর উপর, আল্লাহর সামনে বিনয়াবনত থাকে এবং আল্লার আয়াতসমুহকে স্বল্পমুল্যের বিনিময়ে সওদা করে না, তারাই হলো সে লোক যাদের জন্য পারিশ্রমিক রয়েছে তাদের পালনকর্তার নিকট। নিশ্চয়ই আল্লাহ যথাশীঘ্র হিসাব চুকিয়ে দেন।
(সূরা: আল ইমরান | আয়াত: ১৯৯)
يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءكُمُ الرَّسُولُ بِالْحَقِّ مِن رَّبِّكُمْ فَآمِنُواْ خَيْرًا لَّكُمْ وَإِن تَكْفُرُواْ فَإِنَّ لِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَكَانَ اللّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا
হে মানবজাতি! তোমাদের পালনকর্তার যথার্থ বাণী নিয়ে তোমাদের নিকট রসূল এসেছেন, তোমরা তা মেনে নাও যাতে তোমাদের কল্যাণ হতে পারে। আর যদি তোমরা তা না মান, জেনে রাখ আসমানসমূহে ও যমীনে যা কিছু রয়েছে সে সবকিছুই আল্লাহর। আর আল্লাহ হচ্ছেন সর্বজ্ঞ, প্রাজ্ঞ।
(সূরা: আন-নিসা | আয়াত: ১৭০)
কোরআন শরীফে এরকম আরো অনেক আয়াত আছে যেখানে আল্লাহ সম্পূর্ণ মানবজাতিকে উদ্দেশ্য করে কথা বলেছেন। আল্লাহ বলেননি যে তোমরা কেবল মুসলমান হও। বরং তিনি কয়েকটি ব্যাপারে জোর দিয়েছেন। তাহলো:
- আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা
- আল্লাহর নবীগণের উপর বিশ্বাস রাখা
- নবীগণের উপর নাজিল হওয়া কিতাবে বিশ্বাস স্থাপন করা
- আল্লাহর সাথে কাউকে শিরক না করা
- আল্লাহর আদেশ ও নিষেধগুলি মেনে চলা
বর্তমান সময়ের কেবল নামমাত্র মুসলমান হওয়ার থেকে উপরের বিষয়গুলি পালন করা বেশি জরুরী।
আর একটা ব্যাপার আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। কোরআন শরীফ নাজিল হয়েছে মাত্র ১৪০০ বছর আগে। এর আগে হাজার হাজার বছর পূর্ব থেকেই পৃথিবীতে মানুষ ছিল। এবং তাদের মাঝে আল্লাহ তার মনোনিত ব্যাক্তি (নবী ও রাসূল) প্রেরণ করেছেন। সেই সকল নবী ও রাসূলগণের প্রকৃত উম্মতগনেরও বেহেশতে যাওয়ার কথা।
তবে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ যে ব্যাপার, কে বেহেশতে যাবে আর কে দোযকে যাবে, এটা কোন মানুষের পক্ষে বলা কখনই সম্ভব নয়। এটি একমাত্র আল্লাহই জানেন।