<পেশা বুঝে কম্পিউটার কোর্স>-
-
তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে সাধারণ কম্পিউটার জ্ঞানকে এখন আর
বিশেষ যোগ্যতা হিসেবে ভাবা হয় না। চাকরিদাতা ধরেই নেন যে, এমএস ওয়ার্ড, অফিস এক্সেল, ওয়েব ব্রাউজিং, ই-
মেইল চেকিংয়ের মতো
বিষয়গুলো এ যুগের
চাকরিপ্রার্থীদের জানা
থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
তারপরও এমন কিছু পেশা
রয়েছে যে পেশার জন্য
নির্দিষ্ট কিছু কম্পিউটার
কোর্স জানা থাকলে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়।
এ কোর্সগুলো পেশা উপযোগী। সে কারণে কখনই এমন বিষয়ে
কম্পিউটার কোর্স করা ঠিক নয় যা আপনার পেশার সঙ্গে একেবারেই খাপ খায় না। ধরুন
আপনার স্বপ্ন চার্টার্ড
অ্যাকাউন্ট্যান্ট হবেন, অথচ কোনোকিছু না ভেবেই আপনি
মাল্টিমিডিয়া কোর্স করে বসে আছেন। এই শেখা কিন্তু আপনার পেশাজীবনে খুব একটা কাজে লাগবে না। শ্রম, অর্থ এবং সময়ের অপচয় ছাড়া বিষয়টি
আর কিছুই নয়।
তাই প্রথমে ক্যারিয়ার সিলেক্ট করে
তারপর চাকরির বাজারে
নিজেকে প্রস্তুত করতে বেছে নিন আপনার
পেশা উপযোগী কম্পিউটার কোর্স।
ওয়েবভিত্তিক পেশা:
এ পেশার জন্য কোর্সটিকে
কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন ওয়েব ডিজাইনার বা সাইট বিল্ডার, অ্যাপ্লিকেশন
প্রোগ্রামার, ওয়েব
ডেভেলপার, ওয়েব মাস্টার বা সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট। ইন্টারনেটে যে বিষয়গুলো আমরা ব্রাউজ করি তা-ই ওয়েব
পেইজ। গ্রাফিক, অ্যানিমেশন, বর্ণ, শব্দ-এ সবের সমন্বয়ে ওয়েব ডিজাইনার ওয়েব পেইজ
তৈরি করেন। ওয়েব পেইজ
তৈরি হয় কিছু প্রোগ্রামের
সাহায্যে। প্রোগ্রাম ব্যবহার
করে যিনি ওয়েব পেইজ লেখেন
তিনি ওয়েব প্রোগ্রামার।
এইচএসসি বা অনার্স লেভেলের
ছাত্রছাত্রীদের জন্য ওয়েব
প্রোগ্রামার অ্যাপ্লিকেশন
বুঝতে সুবিধা। তবে
যুক্তিবিদ্যা, গ্রাফ,
মাল্টিমিডিয়া ডিজাইনে
দক্ষতাও প্রয়োজন। ওয়েব
পেইজের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে
ফাইনাল আউটপুট দেওয়া ওয়েব
ডেভেলপারের কাজ। তাছাড়া
পরবর্তী সময়ে কোনো ধরনের
পরিবর্তন, পরিবর্ধন প্রভৃতি
দায়িত্বও ওয়েব ডেভেলপার
পালন করেন। অন্যদিকে একজন
ওয়েব মাস্টার পুরো
ওয়েবসাইটের পরিকল্পনা
করেন। মূলত তার কাজ সাইট
তৈরি করা, সাইটে
মাল্টিমিডিয়া ও ডেটাবেজ
সংযোজন, সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী
কিংবা ক্রেতাকে আকৃষ্ট করার
বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ প্রভৃতি।
সিকিউরিটি স্পেশালিস্টের
কাজ হল সার্ভার সিস্টেমের
নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
পেশা হিসেবে আপনি যদি
এগুলো বেছে নিতে চান তবে এ
বিষয়ে কোর্সগুলো করতে
পারেন। অনার্স বা ডিগ্রি
লেভেলের শিক্ষার্থীদের এ
কোর্স উপযোগী। তবে
নেটওয়ার্কিং ও অপারেটিং
সিস্টেম সম্পর্কে জানতে হবে।
হতে হবে বিজ্ঞানমনস্ক এবং
সৃজনশীল। শুধু সায়েন্স পড়লেই
এ কোর্সগুলো করা যাবে
বিষয়টি কিন্তু মোটেই এমন
নয়।
হার্ডওয়্যার ও নেটওয়ার্কিং :
এইচএসসি বা গ্র্যাজুয়েশন
শেষে ডিপ্লোমা ইন
হার্ডওয়্যার ও
নেটওয়ার্কিংয়ের কোর্স করতে
পারেন। হার্ডওয়্যার কোর্সে
বেসিক ডিভাইস, বায়স
অপারেশন, ডিস্ক অপারেটিং
সিস্টেম, পার্টিশন উইথ থ্রি
ফর্মুলা, হার্ডওয়্যার
অ্যাসেম্বলিং, ট্রাবল শুটিং,
মাদারবোর্ড সার্ভিসিং,
হার্ডডিস্ক সার্ভিসিং সেটআপ
প্রভৃতি বিষয়ে ধারণা দেওয়া
হয়। নেটওয়ার্কিং কোর্স করে
লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক
সার্ভার বেইজড, ম্যানেজিং
অ্যান্ড মেইন্টেনিং, প্রিন্ট
সার্ভার ইত্যাদি বিষয়
সম্পর্কে শেখা যায়।
মাল্টিমিডিয়া :
যারা ফ্যাশন ডিজাইনার,
ইন্টেরিয়র ডিজাইনার, পেজ
ডিজাইনার অথবা কার্টুনিস্ট
বা অ্যাডভার্টাইজিং
প্রফেশনাল হতে চান তারা
করতে পারেন মাল্টিমিডিয়া
কোর্স। মাল্টিমিডিয়ার মধ্যে
রয়েছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি,
স্পেশাল এফেক্ট, অ্যানিমেশন,
ইমেজ, ইলাস্ট্রেশন ইত্যাদি।
প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিক
মিডিয়ায় কাজ করতে চাইলেও
এ কোর্স সহায়ক হবে। ওয়েব
পেইজ ডিজাইনার, গ্রাফিক্স
ডিজাইনার, ভিজুয়াল এফেক্ট
প্রোডিউসার হতে চাইলেও
মাল্টিমিডিয়া কোর্স করতে
পারেন।
কম্পিউটার এডেড ডিজাইন :
টেক্সটাইল ডিজাইনার,
ইন্টেরিয়র ডিজাইনার,
ইঞ্জিনিয়ার, আর্কিটেক্টদের
সহায়ক একটি সফটওয়্যার হল
অটোমেডেট কম্পিউটার এডেড
ডিজাইন বা ক্যাড। এ
সফটওয়্যার শিখে আপনি
উল্লেখিত পেশাগুলোতে
স্বচ্ছন্দে কাজ করতে পারবেন।
এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স
প্ল্যানিং :
চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট,
ইঞ্জিনিয়ার, এমআইএস অফিসার
কিংবা যারা সবে চাকরিতে
ঢুকেছেন তারা এন্টারপ্রাইজ
রিসোর্স প্ল্যানিং বা ইআরপি
কোর্সটি করতে পারেন। বিএ
অথবা এমএ পড়ার পর এ কোর্স
করে খুব বেশি সুবিধা পাওয়া
যায় না। সিএ বা এমবিএ-র
মতো প্রফেশনাল ডিগ্রি থাকলে
এ কোর্সকে কমপ্লিমেন্টারি
হিসেবে ব্যবহার করা যেতে
পারে।
জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন
সিস্টেম :
নগর পরিকল্পনাবিদ, সিভিল
ইঞ্জিনিয়ার বা ভূগোলের
ছাত্রছাত্রীরা এ কোর্সটি
করতে পারেন। এটি একটি
বিশেষ ধরনের কোর্স, যার
সাহায্যে শেখানো হয় আরবান
প্ল্যানিং, রিসোর্স
ম্যানেজমেন্ট, অ্যাসেট
ম্যানেজমেন্ট,
এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট
অ্যাসেসমেন্ট, কার্টোগ্রাফি
প্রভৃতি।
কোর্সগুলো যেখান থেকে করা
যাবে :
ক্যারিয়ার উপযোগী বিভিন্ন
কোর্সের কথা এখানে উল্লেখ
করা হলো। এসব কোর্সের জন্য
যেসব প্রতিষ্ঠানের নাম
এখানে দেওয়া হয়েছে সেগুলো
ছাড়াও রাজধানী বা
রাজধানীর বাইরে বড় জেলা
শহরগুলোতে আরও কিছু
প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সে
প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেও
কোর্সগুলো করা যাবে। তবে
কোর্স করার আগে অবশ্যই
প্রতিষ্ঠান এবং প্রশিক্ষকের
মান যাচাই করে নিতে ভুলবেন
না।
সূত্র: প্রথমবার্তা